আলোচিত মিরপুরে সেই বাড়ির নিচে যেভাবে এসেছে এই সোনার খনি!

মিরপুর, প্রশান্তি প্রতিনিধি॥ গুপ্তধন যা খুবই দুর্লভ একটা জিনিস বেশির ভাগ সময় শুধু বইয়ের পাতা বা গল্পতেই শোনা যায় এই শব্দটি তবে এবার সত্যি সত্যি গুপ্তধনের সন্ধান মিলেছে ঢাকাতেই। যদিও এখনও তার হদিস পাওয়া যায়নি।mirpur digging for gold
রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর এলাকার একটি বাড়ির নিচে গুপ্তধন বা সোনার খনি রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে খনন কাজ শুরু করে মিরপুর থানা পুলিশ। মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের সি বকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বরের এই বাড়িটি দুই কাঠা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে বাড়িতে কোনো ভাড়াটিয়া নেই। স্থানীয়দের কেউ কেউ মনে করেন, বাড়িটিতে কোটি টাকা মূল্যের গুপ্তধন থাকার কথা বলে দখল, হাতবদলের চেষ্টা করছে একটি পক্ষ।
এদিকে সবার মনে প্রশ্ন জেগেছে মিরপুরে কি কীভাবে এসেছে এই সোনার খনি?
এই বিষয়ে বাড়ির মালিক দাবিদার তৈয়ব বলেন, বাড়িটিতে দুই মণেরও বেশি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। এই বাড়ির মূল মালিক দিলশাদ খান। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান চলে যান। তার দূরসম্পকের আত্মীয় সৈয়দ আলম তার ঘনিষ্ঠবন্ধু। আলমও পাকিস্তানে থাকেন। মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
তিনি জানান, আলম তাকে তথ্য দেন, মিরপুরের ওই বাড়িটির নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র রয়েছে। পাকিস্তানে থাকাকালে আলমকে ওই তথ্য দেন দিলশাদ। এরপর আলমকে নিয়ে তৈয়ব মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা এ সম্পদ দখলে নিতে টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার পর তৈয়বকে আড়ালে রেখে গোপনে বাড়িটির বর্তমান মালিকের সঙ্গে আঁতাত করেন আলম। তারা মাটির নিচের সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তার পূর্বপরিচিত রাবেয়া চৌধুরী নামে এক নারীকে নিয়ে থানায় যান। তারা বিষয়টি জানিয়ে জিডি করার সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, গত ১০ জুলাই তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি মিরপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে জানান, বাড়ির নিচে একশ কেজি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। সে হিসেবে আজ বাড়ির নিচে খনন কাজ শুরু হয়েছে।
কীভাবে বিশ্বাস করলেন ওই বাড়ির নিচে গুপ্তধন রয়েছে? এমন প্রশ্নে তৈয়ব বলেন, আলম এমন কিছু তথ্য উপাত্ত দেখিয়েছে, তাতে আমার শতভাগ বিশ্বাস- ওই বাড়ির নিচে মহামূল্যবান ধন রয়েছে। যাতে কোনো ব্যক্তি এটা ভোগদখল করতে না পারে তাই পুলিশকে জানানো হয়েছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির বলেন, ‘চলতি মাসের ১০ জুলাই আবু তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি মিরপুরের এই বাড়িতে গুপ্তধন আছে মর্মে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বিষয়টি ঢাকা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। এরপর ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর উপস্থিতিতে বাড়ির মাটি খনন কাজ পরিচালিত হচ্ছে। বাড়িটি খোঁড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে।’
এদিকে, গুপ্তধন বের করা হচ্ছে এমন খবরে বাড়িটি ঘিরে ভিড় জমিয়েছে উৎসুক মানুষ। আশপাশের বাসার জানালা দিয়ে অনেকে তাকিয়ে আছেন বাড়িটির দিকে।
গত ১০ জুলাই থেকে গুঞ্জন ছড়ায়, ওই একতলা বাড়ির মাটির নিচে স্বর্ণালঙ্কার, দামি মূর্তি, কষ্টি-পাথর আরও অনেক মহা মূল্যবান গুপ্তধন রয়েছে। গুঞ্জনের সত্যতা আরও বেড়ে যায় যখন পুলিশ দিনরাত বাড়িটি পাহারা দেয়া শুরু করে।
পরবর্তীতে গত ১৩ জুলাই বাড়ির আরেক মালিক দাবিদার মনিরুল আলম মিরপুর থানায় একটি জিডি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার বাসার মাটির নিচে গুপ্তধন রয়েছে বলে এলাকার লোকজনের মধ্যে জনশ্রুতি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.