বরিশাল ও রাজশাহীতে সহজ জয় আওয়ামীলীগের, সিলেটে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ে নৌকার পরাজয়

প্রশান্তি প্রতিবেদক॥ সদ্য হওয়া সিটি নির্বাচনে বরিশাল ও রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটের ব্যাবধানে বিজীত হয়েছে এবং সিলেটে হাড্ডা-হাড্ডি লাড়াই করে পরাজিত হয়েছে। রাজশাহী ও বরিশালে সহজভাবেই জয়ী হয় দলটি। অন্যদিকে সিলেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেই জিততে জিততে হেরেছে নৌকা। সম্প্রতি একটি স্বায়ত্বশাসিত গবেষনা সংস্থা ‘রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (আরডিসি)’ এর জরিপে তথ্য ছিল তিন সিটিতেই আওয়ামী লীগ জয়ী হবে তবে সিলেটে কঠিন লড়াই করে জিততে পারে দলটি। পুরো জুলাই মাস জুড়ে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন জরিপে এই ফলাফল পেয়েছিল সংস্থাটি। নি¤েœ জরিপের হুবুহু তুলে ধরা হলো:—-jorip
বরিশাল: বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ১,২৪১ জন ভোটারের ওপর জরিপ পরিচালনা করে আরডিসি। কাকে ভোট দিবেন, এই প্রশ্নের জবাবে ৪৪ শতাংশ ভোটার আওয়ামী লীগ এর মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র পক্ষে রায় দেন। অন্যদিকে বিএনপি’র প্রার্থী মুজিবুর রহমান সরোয়ারের পক্ষে রায় দেন ১৩.১ শতাংশ ভোটার। অন্যান প্রার্থীদের পক্ষে রায় দেন ০.৮ শতাংশ ভোটার। জরিপে দেখা যায় সিদ্ধান্তহীন ভোটার ২৩.৫ শতাংশ এবং উত্তর দিতে রাজি ছিলেননা ১৫.৯ শতাংশ। যারা সিদ্ধান্ত নেননি এবং যারা উত্তর দেননি তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ যদি বিএনপির পক্ষে রায় দেন, তাহলে এই বরিশাল সিটিতে বিএনপি কিছুটা আশাবাদী হতে পারে যা প্রায় অসম্ভব বলা চলে। তাই বরিশালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সহজ জয়ের দিকেই এগোচ্ছেন বলে জানাচ্ছে এই জরিপ।
রাজশাহী : রাজশাহী সিটিতে ১,২৯৪ জন ভোটারের কাছে কাকে ভোট দিবেন জানতে চাইলে এর মধ্যে ৫৮ শতাংশ উত্তর আসে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে উত্তর দিয়েছেন ১৬.৪ শতাংশ। অন্যান্য প্রার্থীদের পক্ষে রায় গিয়েছে ০.৯ শতাংশ। এর মধ্যে যারা সিদ্ধান্তহীন (১২.৩%) এবং যারা উত্তর দেননি (৯.৬%) তারা সবাই যদি বিএনপি’র পক্ষে রায় দেন, তারপরেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২০ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থাকেন। অর্থাৎ, রাজশাহী সিটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খুব সহজেই জয় পেতে যাচ্ছেন বলে জানাচ্ছে জরিপটি।
সিলেট : সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ১,১৯৬ জন ভোটারের ওপর চালানো জরিপে ৩৩ শতাংশ ভোটার আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানের পক্ষে রায় দিয়েছেন এবং ২৮.১ শতাংশ ভোটার বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে রায় দিয়েছেন। অন্যান্য প্রার্থীদের পক্ষে রায় দিয়েছেন ১.৩ শতাংশ ভোটার। জরিপে দেখা যায় সিদ্ধান্তহীন ভোটার ২৩ শতাংশ এবং উত্তর দিতে রাজি ছিলেননা ১২.৬ শতাংশ ভোটার। জরিপে যদিও আওয়ামী লীগের প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন তবে এই সিটিতে প্রতিদ্বনিদ্বতা বেশি হবে বলে এই জরিপে উঠে এসেছে।
জরিপ পদ্ধতি : সিটি কর্পোরেশনের ভোটার তালিকার নারী ও পুুরুষ ভোটারের অনুপাত এবং বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট শহরের ২০১১ সালের শুমারির বয়স সম্পর্কিত তথ্যের বিন্যাস অনুযায়ী এই জরিপের ফলাফল উপস্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা থেকে ঠিকানা নিয়ে জরিপের জন্য নমুনা বাছাই করা হয়। এর মধ্য থেকে যারা নিজেদেরকে সিটি কর্পোরেশনের ভোটার বলে নিশ্চিত করেন তাদেরকেই জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই জরিপে ভুলের মাত্রা (গধৎমরহ ড়ভ ঊৎৎড়ৎ) ধরা হয় +/-২.৫।
আন্তরিক অভিনন্দন নবনির্বাচিত নগরপিতাদ্বয় কে। নৌকার ফসল নিজ ঘরে তোলার জন্য।
সবসময়ই যে জরিপের ফলাফলে বিশ্বাস করতে হবে তা কিন্তু নয়। তবে জরিপের ফলাফলের সঙ্গে মোটামোটি মিল থাকে। কথা আছে যাহা রটে তাহা বটে। তবে জরিপের সঙ্গে মিল রেখেই বরিশাল এবং রাজশাহিতে জয়ী হয়েছে দলটি কিন্তু সিলেটের ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটেনি তবে স্বপ্লসংখ্যক ভোটের ব্যাবধানেই নির্বাচিত হয়েছে বিএনপি। আগামী নির্বাচনে একটি শিক্ষা নেয়ারও মহড়া হয়েছে এই তিন সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.