অমঙ্গলের ছোয়াই মঙ্গলের হাতছানি

Vector-Smart-Objectগত সপ্তাহে যে কয়েকদিন স্কুল কলেজের ছাত্রদের আন্দোলনের মাধ্যমে অমঙ্গলের এক কালো ছায়া হাতছানি দিয়েছিল বাংলার ভাগ্যাকাশে তা কেটে গেছে এবং মহিয়সী নারীর বুদ্ধিমত্তায় এবং তার সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের বহি:প্রকাশে। মীরজাফর গোষ্ঠি সুযোগ পেয়ে কাজে লাগানোর শতভাগ চেষ্টা চালিয়েছিল। এই মীরজাফরদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল বিশ্ব মোড়লদের স্বার্থান্বেষী চক্র। এখানেই শেষ নয় বরং আরো ভয়ংকররুপে রূপদান করার লক্ষ্যে আমাদের দেশীয় মীরজাফরদের সঙ্গে কথিত ও চিহ্নিত লোভী এমনকি গরীবের রক্ত চুষে নেয়া থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সম্পদ ও ক্ষমতার জায়গাগুলি দখল করে নিতে মরিয়া হয়ে উঠা ভুভুক্ষ শুকুনগুলিও। আমাদের দেশের রাজনীতির মাঠে প্রায় অনুপস্থিত ২০ দলীয় জোট যা নামে মাত্র বা কাগজে কলমে বিরাজমান; সেই তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলার গাদ্ধাররুপী পশু ড. কামাল গংরা এবং বিদেশ প্রীতিচ্ছন্ন ও বান্ধবীর ছায়াতলে লুকায়িত আরেক ড. ইউনূছ। শুধু কি তাই তার সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছিল বাংলার চরিত্রহীন এক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতীপ্রাপ্ত দূর্ণীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত আসামী ও খুনী তারেক জিয়া। সব মিলিয়ে অন্ধকারের সকল অপশক্তির ঐক্যের বলয়ে শুরু হয়েছিল অপ্রয়োজনে মিথ্যা ও অপপ্রাচারের মাধ্যমে সৃষ্ট এক নৈরাজ্যমূলক কর্মকান্ডের স্ফুলি্গং। কিন্তু কি তারা তাদের ঐ দুষ্কর্মের সফলতা বা বিফলতা ভেবে কুল কিনারা পেয়েছে? পায়নি কারণ ঐ অশুভ শক্তির অদৃশ্য অমঙ্গল কেবলই সরকারের এবং দেশবাসীর জন্য মঙ্গল বার্তাই বয়ে এনেছে। এই মঙ্গল বার্তার মাধ্যমে জাতি সচেতন হয়ে আগামী দিনের সকল অপশক্তির অদৃশ্য অপঘাত মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় শক্তি ও বুদ্ধিমত্তার মহড়ায় এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে সুযোগ পেয়েছে।
ঘুমের ঘরে ঘাপটি মেরে থাকা হায়েনারা এখন প্রকাশ্যে দেশী বিরোধী বা দেশ ও জনগণের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে জনগণ চিনতে পেরেছে। আগে ছিল ঐ হায়েনারা সরকারের শত্রু কিন্তু তারা এখন জনগণের এবং দেশের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। জনগণ বুঝতে পেরেছে কারা দেশের মঙ্গল চায় আর কারা দেশের অমঙ্গল চায়। ঐ অমঙ্গল বার্তা নিয়ে আন্দোলনের মাঠে নেমে যে দুর্ভীসন্ধিমূলক ফায়দা লুটতে চেয়েছিল তা প্রকাশিত হয়েছে দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে। এখন সময় এসেছে ঐ ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে এবং আগামী দিনের জন্য ষড়যন্ত্রকে চিরতরে দেশ থেকে বিতারিত করার। দেশীয় এবং বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় শুধু প্রধানমন্ত্রীর একার দৈনন্দিন নিশ্বাষটুকুই যথেষ্ট ছিল। তার ভাষনের রেশ টেনে বলা যায় তৃতীয় পক্ষ ঢুকে কোমলমতিদের ভাল ও সুশৃঙ্খল পদক্ষেপকে বিশৃঙ্খল এমনকি জানমাল ও সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতিতে পরিণত করেছে। যেহেতু আন্দোলনরতদের সকল যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে সেহেতু আন্দোলনের কোন প্রয়োজন নেই। সবাই যার যার ঘরে এবং স্কুলে ও কলেজে ফিরে গিয়ে পাঠদানে মনযোগী হতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ। তিনি পিতা-মাতা ও অভিভাবকদেরও ঐ একই কথা বলে সন্তানদের দেখাশুনা করা এবং রাস্তা থেফে ফিরিয়ে নিতে একই আহবান জানিয়েছেন।
ঠিক একই নির্দেশ এখন বাতাসে ভাসছে ঐ ষড়যন্ত্রকারীদের ক্ষেত্রেও; তোমরা আর ভুল বকে নতুন করে বিপদে না পরে বরং সমস্ত কু বাসনা ত্যাগ করে উন্নয়নের জোয়ারে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত কর। যদি না পার বিদেশী প্রভু বা সাদা প্রভুদের সঙ্গে দেশ ত্যাগ কর। সাধারণ মানুষের মান সম্মান ও আত্মসম্মান বোধ রয়েছে কিন্ত ঐ হায়েনা বা বেহায়াদের কোন সম্মান বা আত্মসম্মান বলতে কিছুই নেই। সাধারণ মানুষ হলে লজ্জায় মুখ দেখাতো না কিন্তু ঐ বেহায়ারা মুখ দেখাচ্ছে এবং মিথ্যার ফুলঝুড়ি সাজিয়ে কথাও বলছে। অজপাড়া গায়ের মুরুক্ষ সমাজের একটি কথার উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে চাই “দেখুইন্না বেডির লাজ আছে কিন্তু হাগুইন্না বেডির লাজ নাই”। তাই আমরা যারা দেখেছি, চিনেছি ও বুঝেছি আমাদের ঠিকই লজ্ঝা ও ঘৃণা লাগে কিন্তু ঐ ঘাপটি মেরে থাকা রাষ্ট্রদ্রোহী ও জনদ্রোহীদের কোন লাজ-লজ্জা এমনকি ঘৃণাও নেই। এই লজ্জা রাখার কোন জায়গা নেই।
সরকারের জন্য মঙ্গলের এই জন্য যে, সরকার বুঝতে ও জানতে পেরেছে তাদের সকল ষড়যন্ত্র। কারা কারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঐ ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের বিচরণ কোথায় কোথায় ও কি ফর্মূলায় এগুচ্ছে। আগামী দিনগুলিতে কি হতে পারে বা পারতো সবই এখন সরকারের নখদর্পনে। আর এই অমঙ্গলের ছোয়াই মঙ্গলের হাতছানি এখন সরকারে ও দলে। সরকার ও দলের কি করণীয় তা নির্ণীত হয়েছে এই আন্দোলনের মাধ্যমে। দেশবাসী এবং সরকার কৃতজ্ঞ ঐ কোমলমতিদের কাছে। তারা যদি আন্দোলন না করতো তাহলে ঐ শত্রুদের ষড়যন্ত্র এবং তাদের মুখোশ দেশবাসীর সামনে উন্মোচিত হতো না। তাই যে কাজটি সরকারের জন্য কঠিন ছিল সেটিকে সহজে পরিণত করে আগামীর সকল ষড়যন্ত্রের মুলোৎপাটনে এখন থেকেই সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। এই ক্ষেত্রে সরকারের একটি ইতিবাচক দিক হলো জনগণ সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং বুঝতে পারা ঐ কুচক্রিমহলের চক্রান্ত। এই কাজটি খুবই সহজে সরকার তাদের নিরবতা এবং নমনিয়তা ও সহমত প্রকাশের মাধ্যমে এমনকি দাবি মেনে নেয়ার মাধ্যমে জনমনে সন্তুষ্টি অর্জনে শতভাগ সাফল্য নিয়ে এসেছে। এই সাফল্যে আগামী নির্বাচনে আরো নিশ্চিত বিজয় এবং রাষ্ট্র পরিচালনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
সামনে নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই মরীয়া হয়ে পাগলা কুকুরের ন্যায় আচরণ বা মরণ কামড় দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঐ ষড়যন্ত্রকারীরা। তাই সরকার, প্রশাসন, দল এমনকি দেশবাসীর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে ঐ ষড়যন্ত্র প্রতিহতের দৃঢ় ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে। নতুবা নতুন কোন অজানা এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে আমাদের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের অগ্রগতিকে। এখনই পদক্ষেপ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে আর কোন সুযোগ না পায় ঐ ঘৃণীত ষড়যন্ত্রকারীরা। দেশবাসী এবং দলীয় ঐক্যের সমন্বয় সাধন করতে হবে ও ঐ ঐক্যকে সরকারের সঙ্গে খাপখাইয়ে নিয়ে সামনের কঠিন পথ পারি দিতে হবে। কোমলমতি ছাত্রদের আন্দোলনে যারা মদদ যুগিয়েছে, অর্থ সরবরাহ করেছে এবং তৃতীয় পার্টি হিসেবে ঢুকে আন্দোলনের পবিত্রতা নষ্ট করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যারা নিরীহ ও নিরপরাধ তাদেরকে মুক্তি দিয়ে সকলের সঙ্গে সু-সম্পর্ক সৃষ্টিতে আরো একধাপ এগিয়ে যেতে হবে। নিরপরাধ কাউকে আইনের বেড়াজালে আটকে না রেখে বরং দোষীদেরকে কঠোর ও কঠিন শাস্তি দিয়ে জাতিকে দেখাতে হবে ঐ ঘৃণীত কর্মের ফল। যাতে করে আগামী দিনে কেউ আর দু:সাহসও করতে না পারে ঐ ধরনের ষড়যন্ত্রের।

Leave a Reply

Your email address will not be published.