তাজুল ইসলাম ॥ শয়তান কি তার শয়তানী থামিয়েছে না থামাবে? না কারণ শয়তায় এই ক্ষমতাটুকু মহান আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছে। যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন তাদের শয়তানী অব্যাহত রাখবে। কিসের জন্য জানেন? এই অশান্তি এবং বিশৃঙ্খলার আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করার জন্য। শেষ ফল হলো খোদার সান্নিধ্য থেকে মানুষকে দুরে রেখে জাহান্নামবাসী করে তার দল ভারি করার জন্য। কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার চ্যালেঞ্জ ছিল শয়তানের কাছ থেকে তাঁর ছিফতে সৃষ্টি মানুষকে এমনকি সৃষ্টির সবকিছুকেই রক্ষা করার।
এখন কথা হলো সেই শয়তাদের পদলেহন করে যাচ্ছে যারা দৃশ্যমান সমাজে তারাওতো খোদারই সৃষ্টি এবং তাঁরই সিফতে তৈরী। তবে ঐ মানুষগুলোকে যখন শয়তান ব্যবহার করে তারই উদ্দেশ্যে তখন ঐ মানুষগুলো হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে শয়তানের শয়তানির মোহে জড়িয়ে যে দৃশ্যমান কাজ এবং বক্তব্য প্রকাশ করে তা অত্যান্ত দু:খের এবং লজ্জার। তবে তাদের জন্য মোনাজাত করা এখন আমাদের সকলেরই কর্র্তব্য। যেন খোদা তায়ালা তাদেরকে হেদায়েদ দান করেন ও শয়তানের প্ররোচনা ও লোভ মুক্ত রেখে বাকি জীবন অতিবাহিত করে খোদার কাছে ফিরে যেতে পারেন।
গত কয়েক দিনের কোমলমতি নির্দলীয় শিশুদের আন্দোলন উত্তাল হয়ে উত্তাপ ছড়িয়েছে। সরকার তার নমনীয় মনোভাব এবং আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ ও সহমত প্রকাশ করে দেখিয়েছে বিশ্বকে, যে, যৌক্তিক আন্দোলন ও অবরোধে সরকার একমত এবং কখনো কঠোর নয়। শুধু তাই নয় সরকার শান্ত এবং ভালবাসায় দেখিয়েছে যৌক্তিক দাবী মেনে নেয়ার মত উদারতা এমনকি ঐ দাবিগুলি বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দ্রুত নেয়া এই পদক্ষেপগুলোই প্রমান করে সরকারের উদারতা এবং প্রশাসনের স্বচ্ছ ও নির্দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি।
কোমলমতি আন্দোলনকারীরা এমনকি দেশবাসী যখন সবই বুঝে আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে সরকারকে পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিচ্ছিল তখন এক শ্রেণীর ঘাপটি মেরে থাকা নেকড়ে হায়েনার মত লাফিয়ে এসে সুযোগ নিতে চেষ্টা করলো অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজমান রাখতে। এই হায়েনাদের সঙ্গে বিদেশী কিছু মানুষরূপী শয়তান যোগ দিল গোপনে। ষড়যন্ত্রের ঝাল বুনার কাজ শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু সেখানে পানি ঢেলে সরকারের বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তার স্বাক্ষর রেখে পরাজিত করেছে এই যাত্রায়। কেউ কেউ এই আন্দোলনকে মধ্যপ্রাচ্যের স্প্রিং (সরকারের ক্ষমতাচুত্যের) সঙ্গেও তুলনা করেছিলেন। কেউ কেউ ক্ষমতার লিপ্সায় ও অর্থের লোভে গ্যাঁ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন যা খুবই লজ্জ্বার ও নিন্দার।
এই লোভী মানুষদের সকলেই চিনেছে এবং যুগে যুগে চিনে যাচ্ছে কিন্তু কি তাদের কোন পরিবর্তন হয়েছে? হয়েছে একটি জায়গায় যে ভাগ ভাটোয়ারা এবং ক্ষমতার লিপ্তার ক্ষেত্রে সবাই ঘাটছড়া বেধে মাঠে নামে একেবারে নিলজ্জ্ব বেহায়ার মত। এই স্বঘোষিত সুশিলগণ, নাগরিক ঐক্য নামের ফটকাবাজরা, গরীবের সেবার নামে সম্পদ লুন্ঠনকারীরা ঐক্য হয় এবং আবার ঐক্যের ভাটাও পড়ে। কিন্তু এই সুবিধাবাধি ও ভোগী মহল এইযুগে এসে কুল কিনারা করতে পারছেন না। তাই নিরব থেকে সুযোগ খুজে; আর যখই কোন সুযোগ সম্ভাবনা উকি দেয় তখনই এক সুরে আওয়াজ তুলে। এই মহলের সঙ্গে আবার যোগদান করেছে বিদেশী কিছু স্বার্থান্বেষী রাষ্ট্র এবং এর দোসররাও। রাতের আধারে গোপন আতাত ও শলাপরামর্শ করতে গিয়ে সাধারণের তাড়া খেয়ে যাদের পায়ের তলায় মাটি নেই এবং আকাশের উপর কোন ছাদ নেই তাদেরকে নিয়ে একটি ফোরাম তৈরী করে নৈরাজ্য চলমান রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সাবধান সজাগ থাকতে হবে যে, আর কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদয় না হয়।
প্রাজ্ঞতা কাকে বলে এবং রাজনৈতিক চাল কাকে বলে তা বার বার শিখিয়ে দিয়ে যাচ্ছে এই বিশ্ব মোড়লদেরকে আমাদের মহীয়সী বিশ্ব মানবতার মা শেখ হাসিনা। আমাদের দেশের চুনোপুটিরাতো আর শিখতে পারবে না এমনকি চায়ও না। কারণ তাদের মস্তিষ্ক শুকিয়ে এখন বাতাসে পুর্ণ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার দুরদর্শীতা এবং আগামীর শিক্ষা বিশ্ব রাজনীতির জন্য জলন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। দলের নেতা ও মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে যে মন্তব্যটি তিনি করেছিলেন তার সারসংক্ষেপ হল এই যে, এই আন্দোলন যৌক্তিক এবং আগামীর দৃষ্টান্ত। আমার সরকার যে কত যৌক্তিক এবং উদার মত প্রকাশে তার স্বাক্ষরবাহি এই নির্দলীয় কোমলমতীদের আন্দোলন। আমি খেলেছি এবং খেলা শিখিয়েছি সুতরাং ভয় পাওয়ার কিছু নেই বরং এই আন্দোলন এবং আমার ও আমার সরকারের অবস্থান বিশ্বে মাথা উচু করে দাঁড়ানোর আরেকটি অর্জন। যার স্বীকৃতি আগামী দিনে মিলবে এবং জাতি উদযাপন করবে।
বিশ দলীয় জোট ও তাদের বিদেশী আতাতে যে পচন ধরেছে তার প্রমান বার বার প্রত্যক্ষ করেও মানুষগুলি কেন নোংরা ও পচনশীল কাজে বার বার নিজেদেরকে জড়িয়ে আরো তলিয়ে যাচ্ছে তার কোন যৌক্তিক কারণ সাধারণ এবং আপামর বাংলার মানুষের কাছে নেই। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট করেই বলে দিচ্ছে দিন দিন তোমরা শেষ হয়ে যাচ্ছ এবং এই শেষ হওয়া তোমাদেরই সৃষ্টি। তোমাদের তৈরী ফাদে তোমরাই শেষ হয়ে যাচ্ছ। ড. ইউনুছ সাহেব এখন দেখছি ধারকরা বাংলায় বাক পটু এবং লেখক সাজতে মরীয়া হয়ে উঠেছে। একটি লিখা তিনি তার নামে বাংলা-ভাষাভাষিদের দেখতে সুযোগ করে দিয়েছে। আহারে বেচারা আর কত পাম দিবে… এমনিতেই তোমার জায়গা এইদেশে নেই তার উপর আবার বাংলায় লেখক হিসেবে প্রকাশ পাওয়ার খায়েশ। কথায় আছে ভুইয়া পামে ইলে না। এই দেশের কোমলমতি ছেলে মেয়েরা আর এখন তোমার কাছ থেকে শিখে না বরং তোমাকে শিখানোর যোগ্যতা রাখে। তোমার সন্তান আর বাংলার আকাশে নেই যেমনি করে বিএনপি তাদেরকে বিলীন করে দিয়ে জায়গা খালি করে দিচ্ছে অন্যের জন্য। তেমনি তুমিও করেছ তাই। ঐ কোমলমতি শিশুদের কাছ থেকে তোমাদের (বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট) কে আন্দোলন ও অবরোধ এমনকি দাবি আদায়ের যৌক্তিকতা ও ন্যায্যতা এখন শিখতে হবে। ছবক নিতে হবে নতুন করে, নতুবা খাদের তলানীতেও আর ঠায় হবে না তোমাদের।
মার্শা বার্ণিকাটের শ্রোতশীনি শ্রোতে গা না ভাসিয়ে নিজের চারিপাশের শিক্ষা থেকে দিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে এবং আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনায় জায়গা হবে। যদি মার্শার শ্রোতশীনি শ্রোতের শেষে ভাটার টানে বিলীন হয়ে যাও তাহলে আর এই জাতীর কোন দায় থাকবে না। যেমন করে গত দুই নির্বাচনে পরাজয় এবং দলের দাফল সম্পন্ন হয়েছিল। তোমাদের দাফন ও কাফন পরানোর কেউ নেই, বরং ভাটার তলানীতে আটকে থেকেই আগামীর কোন শতাব্দিতে বা প্রজন্মের সামনে নেতিবাচক ইতিহাস হয়ে বেচে থাকবে। তবে এখনও সময় আছে ইতিবাচক এবং যৌক্তিক রাজনীতি এবং সুদুরপ্রসারী চিন্তার ব্যবহার শুরু করার। যদি শুরু না হয় তাহলে দেখতেই পাচ্ছ দুই ড. দ্বয়ের ব্যর্থতার ইতিহাস আর একজন প্রবাসে বসে আরাম আয়েশের বাগারম্বর।
মায়ের জন্য কার না প্রাণ কাধে? কিন্তু ঐ জ্ঞানী ও গুণী গংদের প্রাণ কাদেও না এবং মাকে মা বলে ডাকতেও তাদের কোন্ঠাবোধ হয়। আরেক জন্মদাত্রী মা এখন জেলে বসে ধুকছে কিন্তু ছেলে মদ, নারী আর ভোগ বিলাসে মজে আছে। কখনো মায়ের কথা ভাবারও সময় নেই। তবে কোমলমতীদের তৈরী করা সুযোগকে পুজি করে আগামী ১৫ই আগষ্ট দেশে আশার খায়েশ প্রকাশ করেছিল বটে। কিন্তু সেই খায়েশ আর পুরন হইল কই। তাই ঐ গংরা এখন আবার নতুন কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে আরো কোন বড় ধরনের অস্তিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশ ও দেশের জনগণের প্রয়োজনেই ঐ ঘৃণিতদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। ঐক্য এবং দৃঢ়তা ও শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখে এগিয়ে যেতে হবে। দলীয় ঐক্যের শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি। আগামী দিনের ঐক্য মজবুত করে সন্দেহের উদ্ধে থেকে এগিয়ে যাও। বিজয় সুনিশ্চিত। হাসতে হাসতে আর কোন ভুলের ফাদে পা দিও না। বরং ভাবতে ভাবতে ভালবাসা এবং ক্ষমার পসরা সাজিয়ে সেবার মনোভাবের বহি:প্রকাশ ঘটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই গংদের ¯্রােতশীতি শুকিয়ে তলানীতে গিয়ে ঠেকবে।