ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ গত (৫ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্ত হাটে ধর্মঘট পালন করলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত হাটে পসরা না সাজিয়ে মূল ফটকের সামনে অবস্তান ধর্মঘট পালন করেন। গত ২৯ জুলাই ভারতীয় ক্রেতাদের হাটে প্রবেশ করতে না দেয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এ কর্মসূচী পালন করেন। গতকাল রোববার বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা হাটে না গেলেও ভারতীয় দোকানীরা ঠিকই পসরা সাজিয়ে বসেন এবং বাংলাদেশী ক্রেতাদের ছিলো উপচে পড়া ভীড়। হাটে ভারতীয় সীমান্তে ক্রেতাদের উপস্তিত থাকলেও হাটে প্রবেশের সুযোগ পায়নি ভারতীয় ক্রেতারা। কসবা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাট কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ওপাশ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা ইসলাম হাটে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের দোকান খুলে বসার জন্য বলেন। কিন্তু বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা তাতে রাজি হয়নি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় হাট কর্তৃপক্ষ গত ২৯ জুলাই থেকে নিয়ম অনুযায়ী ৫ কিলোমিটারের বাইরে বসবাসকারী কোন নাগরিককে হাটে প্রবেশ নিষেধ বলে ঘোষনা দেন। তারই প্রেক্ষিতে গত ২৯ জুলাই সীমান্ত হাটে ৫ কিলোমিটারের বাইরের শত শত ভারতীয় নাগরিক উপস্তিত হলেও তাদের প্রবেশ করতে দেয়নি ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। ৫ কিলোমিটারের ভেতরের মাত্র ২৫/৩০ জন ভারতীয় নাগরিক প্রবেশের সুযোগ পায়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ী মোস্তফা হারুন জানান; ভারতীয় সীমান্তের ৫ কিলোমিটারের অভ্যন্তরে পাহাড়ী দরিদ্র জনগোষ্টির বসবাস। এখান থেকে তেমন ক্রেতা হাটে আসেনা। এতদিন যত ভারতীয় ক্রেতা আসত তার অধিকাংশই ৫ কিলোমিটারের বাইরের। আরেক ব্যবসায়ী অলিউল্লাহ সরকার অতুল বলেন; একটি দেশের মাত্র ২৫/৩০ জন ক্রেতা আসলে আমরা ২৫ জন ব্যবসায়ী কার কাছে পন্য বিক্রি করবো। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার জনেরও বেশী ক্রেতা প্রবেশ করছে। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা লক্ষ লক্ষ টাকার পন্য বিক্রি করলেও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা সবাই মিলেও ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারছিনা। এমতাবস্তায় ভারতীয় ক্রেতা প্রবেশ করতে না দেয়ায় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা হতাশ।
এ প্রসংগে কসবা প্রেসক্লাব সভাপতি মো.সোলেমান খান বলেন; যে উদ্দেশ্যে এ সীমান্ত হাট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নীতিমালার জন্য এর উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে। উভয় দেশকে নীতিমালায় সংস্কার আনতে হবে। উভয় দেশকে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আবার নতুন করে ভাবতে হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা ইসলাম বলেন; গত ২৯ জুলাই থেকে ভারতীয় হাট কমিটি তাদের অভ্যন্তরে ৫ কিলোমিটারের বাইরে বসবাসকারীদের অতিথি পাশ বন্ধ করে দিয়ে শুধু বার্ষিক কার্ডধারীদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন এ কারনে হাটে ভারতীয় ক্রেতা কমে গেছে। এটা নিয়ে বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ। বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলার জন্য । নিয়ম অনুযায়ী আমরাও গতকাল থেকে হাটের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে বার্ষিক কার্ডধারীদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছি।