সৈয়দাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয়টির সরকারীকরণের ইতিকথা

তাজুল ইসলাম॥ যোগ্য পাত্রে কণ্যা দান— আর যোগ্য স্থানে আস্থা ও বিশ্বাস সংরক্ষণ। সংক্ষিপ্তকারে বলতেও অনির্ধারিত সময়ের প্রয়োজন। কাজের ফাকে সময় হয়ে উঠে না। কারণ ব্যক্তিগত সময়তো এখন আর নেই। সব সময়ই চলে যায় অফিসার a abs s hasina with a collegeপ্রয়োজনে। বাকি যে সময়টুকু থাকে তা চলে যায় পত্রিকার সম্পাদনার প্রয়োজনে। শেষ যে সম্বলটুকু একান্তই পরিবারের জন্য সেটাও চলে যায় বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের উন্নয়ন প্রচার ও কর্মী সমর্থক সৃষ্টির প্রয়োজনে। সময়তো নেই ব্যক্তিগত বলতে তবে এরই ফাকে আজকে এই লিখা মন্ত্রীমহোদয়ের তরে।
আমরা আশাবাদি এবং বিশ্বাস রেখেছিলাম জনাব আনিছুল হকের উপর আর তিনি তাঁর ওয়াদা পালনে ছিলেন বদ্ধ পরিকর। যেমনিরূপে আমার দাদা মরহুম এ বি সিদ্দিক সাহেব তাঁর শেষদিন পর্যন্ত বিশ্বস্ত থেকে ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কল্যাণের তরে। তাঁর চাওয়া ও পাওয়ার কিছুই ছিল না তবে মানুষের এবং দলের ভালবাসাটুকু তিনি পেয়েছিলেন।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বঙ্গবন্ধুর স্নেহের সহচর তিল তিল করে ঘরে তুলেছিলেন এই আদর্শ মহাবিদ্যালয় নামক কলেজটি। এতে তার অনুজ এবং সমবয়সী ও মুরুব্বী শ্রেণীরদেও পাশাপাশি আত্মিয়স্বজনদের আকুন্ঠ সহযোগীতা এবং সমর্থন অব্যাহত ছিল। তিনি জালিয়েছেন এলাকায় শিক্ষা নামক আলোক বর্তিকা। জালিয়েছেন প্রাণপ্রদিপ ও জ্ঞান অর্জন এমনকি বিলিয়ে দেয়ার মশাল।
’৭৫পরবর্তীতে দেশের পট পরিবর্তনের সময় থেকে আজ পর্যন্ত বহু সরকার এবং মন্ত্রী ও এমপি এসেছেন এবং যার যার সময় অতিবাহিত করে গেছেন; কথা দিয়েছেন এবং কথার বরখেলাপও করেছেন। কথা রাখেননি কেউ? তবে জনাব এ বি ছিদ্দিক সাহেব এই কলেজটি সরকারী করণের জন্য নিজ দলীয় এম পি, মন্ত্রী ছাড়া অন্য কারো কাছে দারস্থও হননি। তবে কলেজ শিক্ষকগণ এবং ছাত্র-ছাত্রীগণ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের উদ্ধতন মহলের দারস্থ হয়েছেন: যেমন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান- হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তারা সবাই বিশাল জনসভায় ওয়াদাও করেছিলেন এই কলেজটিকে সরকারি করে দিবেন। সেই ঘোষণা ঘোষণাই রয়ে গেল কাজের বেলায় কিছুই বাস্তবায়িত হলো না।
এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তিনি জনাব এ বি ছিদ্দিক সাহেব ঐ দুই সরকার প্রধানের কাছে যাননি এবং সরকারী করণের বিষয়ে চেষ্টাও করেন নি। তবে নিজ দল এবং সরকারের কাছে চেয়েছিলেন জনাব শাহ আলমের আমলে কিন্তু এর কোন সুরাহা হয়নি। বরং হিতে বিপরীতই হয়েছিল।
আজ এই মাহেন্দ্রক্ষণটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য গর্বের সঙ্গে বলতে হয় তিনি জনাব আনিছুল হক এমপি মহোদয় কথা রেখেছেন। তিনি নিজ উদ্যোগে কারো প্রচেষ্টায় নয় বরং ভালবাসা এবং যোগ্যতা ও বয়োজৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ সততার যোগপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আজ বাস্তবায়ন করে তিনি এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রমান করেছেন তিনি ও তিনারা ত্যাগী নেতা কর্মীদের অবদানের কথা ভুলেন না। মূল্যায়ন করেন এবং করে যাবেন। কুটির জনসভায় প্রধানমন্ত্রী জনাব এ বি ছিদ্দিক সাহেবকে চাচা সম্বোধন করে বলেছিলেন আপনার স্থান আমার হৃদয়ে এবং তারপরই তিনি জনাব এ বি ছিদ্দিক সাহেবকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সহ-সভাপতি বানিয়ে সম্মানীত করেছিলেন। তারপর থেকেও সেই একই কায়দায় পথচলা দলের কান্ডারী হিসেবে। তবে দল থেকে স্থানীয় এমপি জনাব শাহ আলম সাহেবের অসৌজন্যমূলক আচরণ ও ষড়যন্ত্রের জন্য নিজ কলেজের সভাপতির পদটিও হারিয়েছিলেন। শুধু কি তাই তিনি উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হয়েও ষড়যন্ত্রের কারণে পরাজিত হয়েছিলেন।
এই অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিশোধ পরায়ন তিনি কখনো ছিলেন না বরং ক্ষমা এবং ভালবাসায় পূর্ণ ছিলেন। ছোট ভাই হিসেবে দেখতেন এবং দলের প্রয়োজনে পাশে থেকে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। শেখ পর্যন্ত তিনি জনাব আনিছুল হক সাহেব দ্বারা সম্মানীত হয়েছিলেন। আনিছুল হক এম পি (মাননীয় মন্ত্রী) আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তিনি নির্বচনের জন্য দলীয় ফরম তোলার আগে ফোন দিয়ে জানিয়ে ছিলেন এবং নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়ও জানিয়েছিলেন। তারপর বলেছিলেন আপনি উপজেলা নির্বাচন করবেন এবং আপনার কলেজের সভাপতি আপনি নিজেই হবেন। এই বিরল সম্মানের জন্য আমরা জনাব আনিছুল হকের কাছে কৃতজ্ঞ।
দাদার মৃত্যুর পর জনাব হক সাহেব এই কলেজটিকে সরকারী করণের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। নিজ উদ্যোগে আনেক আপনজনের পরামর্শ অগ্রায্য করে জনাব এ বি ছিদ্দিক সাহেবকে সম্মান দেখিয়েছেন। এই ভালবাসার ঋণ আমরা ভুলব না। জনাব হক সাহেবের পিতার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিলো মধুর। তিনি আমাদেরকে খুবই মহব্বত করতেন। তাঁর স্নেহের ছোয়া আজও মনে আছে। পানিয়ারূপ নানার বাড়ী হওয়ায় আমি সেই ভালবাসাটুকু একটু বেশীই পেয়েছি। যা আজও স্মরণে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আত্মার সম্পর্কের মানুষগুলি যখন দৃষ্টান্তের বাইরেও গিয়ে আরো মহৎ দৃষ্টান্তের জন্ম দেয় তখন বুকটা আনন্দে ভেসে যায় এবং চোখ বেয়ে জল পড়ে। আজ সেই মুহুত্ব এবং জনাব হক সাহেবকে কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা এবং ওনার সঙ্গে রয়েছি বলতে ভাষা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি।
জনাব আনিছুল হক সাহেবের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আত্মার এবং ওনার কাছে চাওয়া ও পাওয়ার কিছু নেই। উনাকে শ্রদ্ধা করি ও ভালবাসি। তাই ওনার সম্পর্কে লিখা থাকে প্রতিনিয়ন আমার পেইজে এবং পত্রিকায়: উন্নয়ন ও আগামীর করণীয় এবং সামনে এগুবার দিকনির্দেশনা নিয়ে। ওনার পাশে ছায়া হয়ে আছি এবং থাকব। আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ওনাকে বিজয়ী করে আনব ইনশাআল্লাহ। দোয়া করি সকলের নেক বাসনা পুর্ণ হউক আগামীর তরে। কলেজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এবং পরিচালনা পরিষদের সকলের প্রতি শুভকামনা রইল। পাশাপাশি জনাব এবি ছিদ্দিক সাহেব এবং জনাব এডভোকেট আনিছূল হক সাহেবের মান-সম্মান রক্ষায় এমনকি শিক্ষার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন এটাই প্রত্যাশা। প্রয়োজনে আমাদেরকে আপনাদের পাশে অনুঘঠকের ন্যায় পাবেন। জয় হউক শেখ হাসিনার এবং এগিয়ে যাক জ্ঞানশিখায় প্রজ্জ্বলিত বাংলাদেশ।
লেখক: তাজুল ইসলাম নয়ন; একজন প্রযুক্তিবিদ, সমাজসেবী, সম্পাদক ও প্রকাশক; আন্তর্জাতিক পরামর্শক।

Leave a Reply

Your email address will not be published.