ড. কামাল এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে: ফরাসউদ্দিন

আবদুল করিম ফরিদ॥ সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভনর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, ‘ড. কামাল হোসেন এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে, বাংলাদেশের অস্তিত্বেরও বিপক্ষে। তিনি জামায়াত-বিএনপি তথা জঙ্গিবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। kamal faras uddin
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাকে একটা দূতাবাসে দেখা গেছে। বুকে হাত দিয়ে তার চিন্তা করা উচিত, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু তার জন্য কী করেছে? শেখ হাসিনা তার জন্য কী করেছে? ১৯৯১ সালে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতাকে সরিয়ে মিরপুর থেকে ড. কামালকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।’
গত রোববার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজ কত দূর যেতো?’- শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন।
ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও আন্তর্জাতিকভাবে খুবই সম্মানীত। কিন্তু দেশে তার সম্মান কতটুকু, তা জানি না। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের গণজোয়ারের সময়ও তিনি মনোনয়ন পাননি। বঙ্গবন্ধু তার তিনটি আসনের একটি থেকে তাকে পাস করিয়ে আনেন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও বঙ্গবন্ধু নিজের আসন থেকে তাকে পাস করিয়ে আনেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর আসন থেকে এককভাবে নির্বাচন করে ছয় হাজার ১৮৭ ভোট পেয়ে জামানত হারান।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভনর বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্জন কম নয়। মাত্র আট বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এখন ২৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার দুই মাস আগে বলেছেন, আমি অনেক রাজা-উজিরের সাক্ষাৎ পাই। শুধু একজন জাতির পিতার (বঙ্গবন্ধু) সাক্ষাৎ পাইনি।’
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অর্থনীতি সমিতির সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ্’র সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আমস আরেফিন সিদ্দিক, অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্নকেই হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে ১৯৯৪-৯৫ সালেই মাথাপিঁছু জিডিপিতে মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেতো বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে ২০১১ সালে বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয় দাঁড়াতো ৪২ হাজার ৫১৪ কোটি ডলার। ওই সময় মালয়েশিয়ার মোট জাতীয় আয় ১৫ হাজার ৪২৬ কোটি ডলার ছিল। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে ১৯৭৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত গড়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতো। কিন্তু তাকে হত্যা করার কারণে ১৯৭৫ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩৬ বছরে দেশের অর্থনীতির পুঞ্জিভূত ক্ষতির পরিমাণ তিন লাখ ৪১ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার দাঁড়ায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.