গুজবের রকম ফের আলাদা করা খুবই কঠিন। এই ডিজিটাল যুগে মিডিয়াগুলিও অতিরঞ্জিত বাড়াবাড়ির মাধ্যমে আন্দাজ নির্ভর সংবাদ পরিবেশন করে আগাম সতকর্তার পাশাপাশি গুজবেরও জন্ম দিয়ে থাকে। আমাদের দেশে আসলেই লাগাম টানার জন্য নিজেদের অনুভূতিগুলি আজ মৃতপ্রায় হয়ে আছে। অন্যের অনুভূতি নিয়ে কথা হয়; অন্যকে নিয়ে সমালোচনা হয়; ভাল কাজের প্রশংসার চেয়ে সমালোচনা ও নেতিবাচক দিক নিয়ে বেশী আলোচনা হয়। ইতিবাচক কোন ভূমিকা পালন করার ক্ষেত্রে আজ আমরা বড়ই কৃপন। আমাদের মাঝে এই কৃপনতা দুর করার যে শক্তি ছিল তা আজ প্রায় মৃত। তবে অন্যের সমালোচনা ও দোষ-ত্রুটি খুজে বের করার অনুভুতি এবং নেতিবাচক জ্ঞানগুলি এখনও সরব। এত চর্চা হচ্ছে যে এদের ভিরে এখন ইতিবাচকতা প্রায় বিলীন হতে হতে শুন্যের কোটার কাছাকাছি গিয়ে দাড়িয়েছে। আমরা নিজেদেরকে নিয়ে নিজেরা কোন মূল্যায়ন করি না। নিজেদেরকে নিয়ে ভাবিও না; নিজেরাতো করিই না বরং অন্য কেউ গঠনমূলক সমালোচনা বা পরামর্শ রাখলে তার উপর চড়াও হয়ে বারোটা বাজিয়ে ছাড়ি। এই বারোটা বাজানোর সংস্কৃতিই এখন গুজব নির্ভর এবং আগাম আন্দাজ নির্ভরতায় গা ভাসিয়ে দিয়ে দ্রুত লয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
ইদানিং অনলাইন পোর্টালগুলি যে সব আগাম বার্তা দিয়ে যাচ্ছে তার সঙ্গে বাস্তবের মিল খুজে পাওয়া কঠিন। পাশাপাশি ঐ সংবাদ এবং এর নির্ভরশীল ও নির্ভরযোগ্যতা যাচায়ের কোন মাধ্যমও আবিস্কার হয়নি। এই সবংবাদগুলি একটি দৃষ্টান্ত আকারেও জনসম্মুখ্যে দন্ডায়মান। চায়ের টেবিল বা কথামালার ক্ষেত্রে উপকরণও বটে। তবে কিছু কিছু সময় এই আন্দাজ বাস্তবের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকে; আবার গুজবের ইঙ্গিতবাহী হয়ে নেতিবাচকতাকে উষ্কে দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ইঙ্গিত বহন করে। তাই মিডিয়াগুলিকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারকে সচেতন এবং দিকদর্শন দিতে গিয়ে যেন দিশেহারা করে না ফেলা হয় তার দিকেও নজর দেয়া আবশ্যক। ইয়োর টিউব, ফেজবুক, টুইটার, ওয়োব পোর্টালসহ যাবতীয় মাধ্যমেই চোখ বোলানো এখন সরকারের দায়িত্বশীলদের ফরজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইয়োরটিউব ও ফেসবুকে বিশেষ করে নজর দেয়া ফরজে আইন হয়ে দাড়িয়েছে। নজর দিন এবং অতি উৎসাহি ও ক্ষমতার স্বাদভোগীদের আতাত অথবা ষড়যন্ত্রের এমনকি নিরবতার জবাব এখনই দিয়ে আগামীর রাস্তা পরিস্কার করুন।
প্রশাসন যন্ত্র, সচিবালয় এমনকি কোমলমতিদের মাঝে যে দুরত্ব তৈরী হয়েছে তার অবসান ঘটানো এখন সময়ের উর্বর দাবি। নতুবা সামনে আরো কোন বড় ধরণের ধাক্কা সামলাতে হতে পারে। তবে স্থবিরতা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে; কিন্তু কেন এই স্থবিরতা বা অমনযোগী দৃষ্টানের আবরণে অসহযোগীতা। এই কাজে যারাই এখন যুক্ত সে যতই আপনজন হউক না কেন তাকে লাগাম টেনে গতিশীল কাজে ব্যবহার করানোর ব্যবস্থা করুন। ক্ষমতার স্বাদভোগী হয়ে এখন নিরবতা এমনকি নিরপেক্ষ ভাব নিয়ে অতি চালাকির ঝাল বুনতে না দেয়াই জ্ঞানী ও বিচক্ষণতার পরিচয় হবে। যত দ্রুত সম্ভব বিচক্ষণতার পরিচয় দিন এবং ঐ লোভাতুর নিরপেক্ষ ভুমিকার বা নেতিবাচক ভুমিকার মানুষগুলি চিহ্নিত করে অপসারণ বা নিষ্কিয়তায় পর্যবসীত করুন।
সময় থাকতে ব্যবস্থা নিন। সময় গেলে হবে না সাধন এই বানিতে মনোনিবেশ করুন। নতুবা… কিন্তু … এর বিপরীতে বাংলাদেশ পরিণত হবে মিয়ানমার থেকেও আরো বড় রক্তের বণ্যার মহা প্রলয়নপ্লাবনে। এই রক্তবণ্যা থেকে মুক্ত থাকতে এবং উদীয়মান চলমান উন্নয়ন পক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে সক্রিয় থেকে এগিয়ে যান। যিনি এখন দেশ পরিচালনায় রয়েছেন তার ইতিবাচক ভালবাসাকে এগিয়ে নিয়ে যান। নতুবা বিপদ সকলেরই সম্মুখপানে। আজকের যে ষড়যন্ত্রের জাল উন্মোচিত হয়েছে তার বিস্তার রোধ করতে সকলের ঐক্য মজবুত করে এগিয়ে যান। ভাইয়ে ভাইয়ের যে দ্বন্ধ দৃশ্যমান তার অবসান করুন এবং ক্ষমতার স্বাদভোগীদের দ্বারা ক্ষমতার মাধ্যমদের আর নিস্পেষিত হওয়া থেকে রক্ষার দায়িত্ব নিন।
দেশী ও বিদেশী মিডিয়ার অতিরঞ্জিত সাবধানবাসী এবং সুযোগ সন্ধানীদের ফাকা মাঠের বুলি বা গুজবে কান না দিয়ে বিচক্ষনতার সহিত চক্রান্ত মোকাবেলায় পারদশীতার সহিত এগিয়ে যান। বিভিন্ন সংবাদের হেডলাইন এমনকি ড. কামাল, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মান্না ও ফখরুল, ড. ইউনূছ সাহেবদের কুমতলব থেকে দেশকে রক্ষায় মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির ঐক্য আজ বেশী প্রয়োজন। একার পক্ষে ষড়যন্ত্রের জাল নিচ্ছিন্ন করা কঠিন কিন্তু সকলের ঐক্যের ফলে অসম্ভবকেও সম্ভবে পরিণত করা সহজ হয়। মাথামোটা স্বার্থান্বেষী মহলের দৌড়ঝাপ রহিত ও চিরতরে বন্ধ করার এখনই সময়। কেউ যেন তাদের ভুল ব্যাখ্যায় এবং লোভ দেখানো ভুল ফাদে পা না দিই।
রাতের অধারে এবং পর্দার আড়ালে থেকে যে কলকজ্বা নাড়ানো হচ্ছে তাতে যেন সাধারণ আম জনতা গ্যা না ভাসিয়ে দেয়। সরকার দ্বারা সুবিধাভোগী মানুষগুলোকে চোখের আড়াল হতে দেয়া যাবে না কারণ এই আড়াল এবং অতি বিশ্বাসই কিন্তু বড় ধরনের বিপদের কারণ হয়ে দাড়াবে। বাতাসে ভেসে আসছে এবং লোকমুখে শোনা যাচ্ছে সচিব, আমলা অথবা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন মোনাফেকিতে মেতে উঠার কাজে লিপ্ত হয়েছে; তাই সাবধান.. ফিরিয়ে আনুন, ফিরে আসুন এবং দেশ গঠনের কাজে নিজেদের সম্পৃক্ততা আরো বৃদ্ধি করুন। কাজে শৈথিল্য দেখাতে আর দৌড়ঝাপ করবেন না। গতিশীলতা আনয়ন করে কাজ এবং চিন্তার সমন্বয় ঘটান। জনবান্ধব কর্মকান্ডে অতি সতর্কতার সাহিত মনোনিবেশ করুন।
গুজবের মাধ্যম ও ক্ষমতার মসনদ এখন একই সুত্রে গেথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে সামনে এগুতে হবে। এই জাতি গুজবে কান দিয়েছে এবং দিবে আর ক্ষমতার মসনদের জন্য মরিয়া হয়ে ছুটবে। তাই এখনই পদক্ষেপ নিন যেন কোন গুজবের উদ্ব্যব না হয় আর অন্ধকারের লোভাতুর মানুষগুলো ক্ষমতার মসনদের কাছেও ঘেষতে না পারে সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।