নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ঐক্য নিয়ে আশাবাদী নন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আমন্ত্রণ জানানো হলেও এই জোটে যাবেন না তিনি। এই জোট বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না বলেই মনে করেন শান্তিতে নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদ। ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠরা এই তথ্য জানিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ২৮ আগস্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনের বৈঠকের আগে ও পরে ড. ইউনূসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ড. ইউনূস প্রথমে হ্যাঁ বা না কিছুই বলেন নি। তিনি বলেন, ‘আপনারা শুরু করেন, তারপর দেখা যাবে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এরপর ড. কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের সঙ্গে দুই দফা যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি এড়িয়ে গেছেন। ড. ইউনূস তাঁর ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, ’একই বৃত্তেই এই ঐক্য প্রক্রিয়া ঘুরপাক খাচ্ছে। শুধু নির্বাচন এবং ক্ষমতায় যাওয়ার ঐক্যে জনগণ আগ্রহী হবে না। এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় নতুন কিছু নেই। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একজন ঘনিষ্ঠ বলেছেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস এখন আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় নিয়ে ব্যস্ত। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার কোনো আগ্রহ তাঁর নেই।’ অবশ্য অন্য একটি সূত্র বলছে, ড. কামাল হোসেনকে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ঐক্য প্রক্রিয়ার শুরুতে নানা শর্তে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিরক্ত। ড. ইউনূস চেয়েছিলেন বিএনপি-জামাতসহ সব দলকে নিয়ে ঐক্য। কিন্তু ঐক্য প্রক্রিয়ার প্রথম বৈঠকেই বলা হয়েছে, বিএনপিকে জামাত ছাড়তে হবে। এটি ইউনূসের পছন্দ হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ‘ড. ইউনূস বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সকল রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য চেয়েছিলেন। এজন্য উদ্যোগ নিতে তিনি মার্কিন দূতাবাসকেও অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর অনুরোধেই বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাট ড. কামাল হোসেন এবং অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন।
একাধিক সূত্র বলছে, এই দু জনকে এক করতে মার্কিন দূতাবাসকে অনেক কসরত করতে হয়। মার্কিন দূতাবাস এবং ড. ইউনূস চেয়েছিলেন জামাত প্রসঙ্গটিকে এড়িয়ে যেতে। আপাতত: যুক্তফ্রন্ট, গণফোরাম এবং বিএনপিকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম করতে। কিন্তু ২৮ আগস্টের বৈঠকে জামাত প্রসঙ্গ আসায় হতাশ হয়ে পড়েন ইউনূস। ড. ইউনূস ড. কামাল হোসেনকেও বলেছেন, বিএনপিকে ছাড়া আন্দোলন বা নির্বাচন কোনোটাই সম্ভব না। এখন জামাত প্রসঙ্গ আনা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। সূত্র মতে, এই মুহূর্তে জামাত প্রসঙ্গ সামনে আনায় বিরক্ত ড. কামাল হোসেনও। এজন্য তিনি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহি. বি চৌধুরীকে দায়ী করেছেন। এদিকে, যৌথ নেতৃত্বে ঐক্য প্রক্রিয়ায় পরিচালিত হবার কথা থাকলেও গতকাল যুক্তফ্রন্ট এবং গণফোরাম আলাদা কর্মসূচি পালন করেছে।