ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় খাড়েরা ইউনিয়নে শিশু ধর্ষনের রেশ না কাটতেই আবারো একই ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে স্বামীকে ঘরের পাশে গাছের সাথে বেধেঁ রেখে এক গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষন করেছে একই গ্রামের দুই বখাটে। গত রোববার ৯ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে রেজাউল (৩৫) ও আলী মিয়া (৩৭) নামের দুই যুবকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই গৃহবধূকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য গত মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মামলার এজাহার ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামে রফিক মিয়া নামে এক ব্যক্তি (৫০) রিক্্রা চালিয়ে সংসার চালায়। প্রথম স্ত্রী একটি ছেলে সন্তান রেখে মারা যায়। ওই ছেলে থাকে চট্টগ্রামে। রিক্্রা চালক রফিক মিয়া গত ৫ বছর আগে আবারও দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ওই স্ত্রীর বয়স ৩০ বছর। তাদের কোন সন্তান জন্ম হয়নি। তিনি স্ত্রী নিয়ে গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করেন। গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রাতের খাবার খেয়ে ওই গৃহবধূ তারঁ স্বামীকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে কসবা উপজেলা খাড়েরা ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মহসিন মিয়ার ছেলে রেজাউল মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে আলী মিয়া (৩৭) মাটি খুড়ে সিঁধ কেটে ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে। এ সময় ঘরের দরজা খুলে স্বামীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঘরের বাহিরে কাঠাল গাছের সাথে বেঁধে গৃহবধুকে অস্্েরর মুখে জিম্মি করে ওই গৃহবধূকে ঘরে নিয়ে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী পালাক্রমে একাধিকবার ধর্ষন করে দুই ধর্ষক। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই গৃহবধূ। পরে ভোর রাতে ধর্ষকরা চলে যাওয়ার সময় ঘরে থাকা ২ হাজার ৭৪০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। পরে গৃহবধূর জ্ঞান ফিরে এলে তাঁর স্বামীকে বাঁধন খুলে ঘরে আনেন। সকালে এ ঘটনা গৃহবধু পাশের বাড়ির তার এক ননদকে জানায়। ঘটনার দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থল দেখতে যান কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ আবদুল মালেক। স্থানীয় কিছু লোকজন মামলা না করতে তাদেরকে চাপ সৃষ্টি করে। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে বলেও জানা যায়। পরদিন স্থানীয় সাংবাদিকরা নির্যাতিত পরিবারের পাশে দাড়ালে এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে গত সোমবার রাতে ওই দুই যুবককে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে। গত মঙ্গলবার সকালে ওই গৃহবধূকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
গৃহবধূর স্বামী রফিক মিয়া বলেন, মাটি খুড়ে ঘরে ঢুকে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে । পরে তারা দুজন তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষন করেছে। ভোররাতে তারা ঘর থেকে বের হয়ে যায়। যাওয়ার সময় ঘরে থাকা ২ হাজার ৭৪০ টাকা নিয়ে গেছে। গৃহবধূ বলেন, তাঁর স্বামীকে বেঁধে রেখে অস্্েরর মুখে জিম্মি করে দুইজন একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মালেক বলেন, গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে দুই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষন মামলা দায়ের করেছে। গৃহবধূকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।