প্রশান্তি ডেক্স॥ পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি আট হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার।
ন্যুনতম মজুরি: মালিকরা দিতে চায় ৬৩৬০ টাকা
ন্যুনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকার দাবিতে আন্দোলনের ডাক
ন্যুনতম মজুরি: সিপিডির প্রস্তাব ১০ হাজার টাকা এতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিকের মজুরি এখনকার চেয়ে ৫১ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর ৫ হাজার ৩০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সেই হারে বেতন পাচ্ছিলেন শ্রমিকরা। এবার শ্রমিক সংগঠনগুলো ন্যূনতম মজুরি ১৬ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি করেছিলেন। এর বিপরীতে পোশাক শিল্প মালিকরা প্রস্তাব করেন ৬ হাজার ৩৬০ টাকা। গবেষণা সংস্থা সিপিডি ন্যুনতম মজুরি ১০ হাজার টাকা করার পক্ষে মত জানিয়েছিল। পোশাক শ্রমিকদের মজুরি পুনর্মূল্যায়নে পাঁচ বছর পর গত জানুয়ারিতে সরকার মজুরি বোর্ড গঠনের পর বোডের সদস্যরা দফায় দফায় বৈঠক করে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নিয়ে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঢাকার তোপখানা সড়কে মজুরি বোডের কার্যালয়ে সর্বশেষ বৈঠক হয়। এরপর মজুরি বোডের সদস্যদের নিয়ে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন মজুরি কাঠামোর ঘোষণা দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।
ঘোষণা অনুযায়ী, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি হবে ৮ হাজার টাকা। এর মধ্যে বেসিক ৪ হাজার ১০০ টাকা; বাড়ি ভাড়া ২০৫০ টাকা; চিকিৎসা ভাতা ৬০০ টাকা; যাতায়াত ভাতা ৩৫০ টাকা; খাদ্য ভাতা ৯০০ টাকা। প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আপাতত ন্যুনতম মজুরি ঘোষণা করা হলে। অন্যান্য শ্রমিকদের বেতন-কাঠামো পরে ঘোষণা করা হবে। আগামী ডিসেম্বরে প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে নতুন বেতন কার্যকর হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পরে মজুরি বোডের চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, বোডের নিরপেক্ষ সদস্য কামাল উদ্দিন, বোর্ডে মালিকদের প্রতিনিধি বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিকদের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার ভূইয়া।
আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টুও সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন। নতুন মজুরি কাঠামো মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষ মেনে নেবে বলে প্রতিমন্ত্রী চুন্নু আশা প্রকাশ করলেও এই মধ্যে আপত্তি এসেছে বামপন্থি শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। বিকাল ৩টায় মজুরি বোর্ড যখন তোপখানার কার্যালয়ে সভা করছিল, তখনই ভবনের নিচে বিক্ষোভ করছিল গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, শ্রমিক সংহতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
সাড়ে ৪টার দিকে সভা শেষ করে যখন মজুরি বোডের সদস্যরা সচিবালয়ে যাচ্ছিলেন, তখন বিক্ষুব্ধ কয়েকশ জন স্লোগান দিচ্ছিলেন- ‘১৬ হাজার টাকার কমে ন্যুনতম মজুরি মানব না। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণে দৃশ্যত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো অনুসরণ করেছে সরকার। সম্প্রতি শ্রম প্রতিমন্ত্রী চুন্নু রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প কারখানার শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি শতভাগ বাড়িয়ে ৮৩০০ টাকা করার প্রস্তাব সংসদে তোলেন। বর্তমানে এই শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ৪ হাজার ১৫০ টাকা।