মাদরাসার উন্নয়নে ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

প্রশান্তি ডেক্স॥ দেশের ১ হাজার ৬৮১টি মাদরাসার উন্নয়নে ৫ হাজার ৯৮১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ‘নির্বাচিত মাদরাসাসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে বিভাগীয় শহর, উপকূল অঞ্চল, পাহাড়ি এলাকা, হাওর অঞ্চলসহ দেশের ১ হাজার ২৩৪টি আলীয়া মাদরাসায় চারতলা ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনগুলোয় সোলার প্যানেল ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও দেওয়া হবে। গত মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন করা হয়।maddrasa 6 hajer kotoe taka
সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জানান, প্রতিটি সংসদ সদস্যের কাছে ছয়টি করে মাদরাসার তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তাদের তালিকা ছাড়াও অগ্রাধিকার কিছু মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য রয়েছে। শিগগিরই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে মন্ত্রী জানান।
নির্বাচনের আগে এ ধরনের প্রকল্প নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা চাই প্রভাবিত হোক, কারণ সংসদ সদস্যরা এই মাদরাসার তালিকা দিয়েছেন। তারা কোন দল করেন সেটি দেখা হয়নি। সকল এমপিই তালিকা দিয়েছে। আমরা চাই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় এবং আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। এ প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি পাবে, স্কুলগুলোর সঙ্গে মাদরাসার অবকাঠামোগত বৈষম্য কমে আসবে।
একনেক সভায় মোট ১৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৩ হাজার ৮১৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৪২ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৯৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য রয়েছে। সভায় ১ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রজেক্ট (২য় পর্যায়) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার অবকাঠামো উন্নয়ন, বিশেষ করে দরিদ্রদের সেবা নিশ্চিত করা, দরিদ্র মহিলা, নবজাতক এবং শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। সভায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহূত বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্ত নির্মাণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণে স্থাপনাগুলো দৃঢ় কাঠামোয় তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। তা ছাড়া এর পাঁচিলগুলো উঁচু করে বধ্যভূমিগুলোকে সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। এ সময় মন্ত্রী জানান, ২৬ জেলায় ২২৪ উপজেলার গ্রামীণ সড়ক, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে চলমান রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২য় সংশোধনী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। মন্ত্রী বলেন, দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে। ফলে পণ্য সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। তাই আগামীতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে না। তিনি আরও বলেন, দেশের সব মানুষকে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা হবে। দেশের প্রত্যেকটা নদী পর্যায়ক্রমে শাসন করা হবে। পর্যাপ্ত অর্থ এবং যথাযথ পরিকল্পনার অভাবে এ খাতে আমাদের আগের সরকারগুলোর ব্যর্থতা ছিল। এখন পরিকল্পিত ভাবে নদীশাসন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.