আনিসুল হক ভাইয়ের সাথে আমার পরিচয় ১৯৯৪ সাল থেকে। তিনি তখন জাতীয় টেনিস ক্লাবে টেনিস খেলতে আসতেন। আমি তখন বাংলাদেশ জাতীয় সাফ গেমস টেনিস টিম এর সদস্য ছিলাম।
আমি যখন প্রথম বারের মত ২০০৬ সালে বেসিস নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি তখন একজন সিনিয়র ভোটার ও ইন্ডাস্ট্রি লিডার হিসাবে তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে যাই। তিনি বেশ কয়েকবার বিজিএমইএ সভাপতি হবার কারনে তার ট্রেড বডির নির্বাচনে অত্যন্ত অভিজ্ঞ।
তিনি আমাকে নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু পরামর্শ দিলেন, যার মধ্যে ছিলো ভোটারদের সাথে কিভাবে আই কন্টাক্ট এর মাধ্যমে, হাতে হাত মিলিয়ে ভোটের অঙ্গীকার আদায় করে নিতে হয়। তিনি আমাকে শেখালেন সব থেকে কাছের মানুষের কাছ থেকেও যে হয়ত সারাক্ষণ আমার নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করছে কিন্তু তার কাছ থেকেও আমার আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট চাইতে হবে, নাহলে তাদের ভোটও বিরধী দলের ঝুলিতে চলে যেতে পারে। কারণ সাভাবিকভাবেই মানুষ তাকেই বিবেচনা করবে যে ভোট চাইবে, সে যত কাছের লোকই হোক।
সেই সাথে কিভাবে স্বচ্ছ ভিশন ও ম্যানুফেষ্টো ভোটারদের সামনে তুলে ধরতে হয় এবং কিভাবে তা বাস্তবায়ন করে নিজেকে সবার কাছে গ্রহনযোগ্য করে তুলতে হয় সেই ধরনের কিছু ধারনাও তিনি সেদিন আমাকে দেন। আমি মন্ত্রমূগ্ধের মতো এরকম একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে দাঁড়িয়ে সবকিছু মনযোগ দিয়ে শুনলাম। তার বিজিএমইএ ও অন্যান্য সংগঠন নিয়ে শত ব্যাস্ততার মাঝেও আমাকে অনেক সময় দিয়েছিলেন।
পরবর্তিতে বেসিসের চারটি নির্বাচন এবং এফবিসিসিআই এর নির্বাচন এ সব সময় সর্বোচ্চ প্রথম সারির কয়েকজনের কাতারেই ভোট পেয়ে আমি জয়ী হতে সক্ষম হই। ২০১৫ সালে এফবিসিসিআই নির্বাচনকালীন প্রচারণার জন্য সকল ভোটারদের কাছে একটি চিঠি পাঠাই এবং আমার সেই চিঠির ড্রাফটও আনিস ভাইকে দেখাই এবং তিনি নিজে হাতে কেটে সেখানে ছোটো ছোটো কিছু সংশোধন করে দেন। সেই সময় তিনি মেয়র ইলেকশন নিয়েও অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। পরবর্তীতে তিনি মেয়র হিসেবে ঢাকার যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন তা সবই এখন ইতিহাস।
আজ আনিসুল হক ভাইয়ের ৬৬ তম জন্মদিন। প্রিয় আনিস ভাই, যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।
আনিসুল হক ভাই সব সময়ই আমার জন্য ছিলেন একজন রোল মডেল। আজ তিনি তার মেয়র হিসাবে কাজের অবদানের জন্য লাখো মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছেন।