কেমন ছিলেন পড়াশুনায় আমাদের সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বাবু থার্ড ডিভিশনে (তৃতীয় বিভাগে) আই.কম ও বি.কম পাশ করেন…

প্রশান্তি অনলাইন ডেস্ক॥ বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রাতিষ্ঠানিক জীবনবৃত্তান্ত ঘেটে জানা গেছে, তিনি অত্যন্ত দুর্বল মেধার ছাত্র ছিলেন। অথচ সিনহা তার বিতর্কিত বইয়ে দাবি করেছেন যে, তিনি কমার্স থেকে অত্যন্ত ভালো ফলাফল নিয়ে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। যা মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিনহা সম্পর্কে এ পর্যন্ত নৈতিক স্খলনের যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা স্পষ্ট হয়ে উঠলো তার একাডেমিক শিক্ষা নিয়ে মিথ্যাচারের মাধ্যমে।3rd division sinha
সিনহা তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, কমার্স থেকে তার ভালো ফলাফল হওয়া সত্ত্বেও তার বাবা তাকে চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে দেননি। যদিও তার মার্কসিট বলছে, তিনি অত্যন্ত কম নাম্বার নিয়ে আই. কম এবং বি. কম পাশ করেন। তাকে এ দুই পর্যায়ে থার্ড ডিভিশন নিয়ে পাশ করতে হয়েছে।
সিনহার একাডেমিক তথ্য বিবরণী এবং আই. কম ও বি. কম- এর ফলাফল সম্পর্কে মার্কসিট থেকে জানা গেছে, ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে তিনি আই. কম- এ বাংলা প্রথম পত্রে পেয়েছিলেন মাত্র ৩৪ নাম্বার এবং দ্বিতীয় পত্রে পেয়েছিলেন ৩৩ নাম্বার। ইংরেজি প্রথম পত্রে ৩৩ এবং দ্বিতীয়ত পত্রে পেয়েছিলেন ৪০ নাম্বার। বিজনেস স্টাডিতে বুককিপিংয়ে পেয়েছিলেন ৩৯ নাম্বার, অন্য দিকে হিসাব বিজ্ঞানে পেয়েছিলেন ৩৩ নাম্বার। বিজনেস পলিসি এন্ড ইমপ্লিমেন্টেশনে নাম্বার পেয়েছিলেন ২০ এবং টাইপ রাইটিংয়ে পেয়েছিলেন ৪১ নাম্বার। ফলে ৫ নাম্বার গ্রেস দিয়ে তাকে উক্ত দুই বিষয়ে পাশ করানো হয়। সর্বমোট নাম্বার যোগ করে তিনি থার্ড ডিভিশনে পাশ করেন। আই. কমে তার রোল নম্বর ছিলো- ১৯৯০৮, আর রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছিলো- ৮৫৭৪।
অনুরূপভাবে বি. কমের মার্ক সিটে নাম্বার বলছে, এ পর্যায়েও তিনি থার্ড ডিভিশনে কৃতকার্য হন। ১৯৬৮-৬৯ শিক্ষাবর্ষে কমার্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে মার্ক পেয়েছিলেন ৩৩, ইকোনমিকসে প্রথম পত্রে পেয়েছিলেন ৪৭, দ্বিতীয় পত্রে পেয়েছিলেন ৪৯ এবং তৃতীয় পত্রে পেয়েছিলেন ৪৯ নাম্বার। বিজনেস এডমিন বিষয়ে প্রথম পত্রে- ২৮, দ্বিতীয় পত্রে- ২১ এবং তৃতীয় পত্রে- ৪৩ নাম্বার পেয়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে এডভান্স অ্যাকাউন্টিংয়ের প্রথম পত্রে তার নাম্বার ছিলো ৫০, দ্বিতীয় পত্রে- ৫৪ এবং তৃতীয় পত্রে ছিলো- ৪৩ নাম্বার। সর্বমোট ফলাফল যোগ করে এখানেও তিনি থার্ড ডিভিশনে কৃতকার্য হন। বি. কমে তার রোল নাম্বার ছিলো- ৭৫১১ এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ছিলো- ৩৪৪২।
উপরোক্ত তথ্যের আলোকে একাডেমিক শিক্ষাতে সিনহার দুর্বল মেধার চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বিচারপতির আসনে বসেও তিনি তার দুর্বল মেধার বিভিন্ন প্রমাণ বিভিন্ন সময় দিয়েছেন। মেধার দুর্বলতার কারণে নীতি-নৈতিকতা ভুলে তিনি রাষ্ট্র ও সরকারকে বিভিন্ন সময়ে বেকায়দায় ফেলেছেন। নৈতিক শিক্ষার অভাবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিদের হয়ে কাজ করেছেন। সর্বশেষ, দেশ বিরোধী শক্তিদের সরাসরি সহায়তা ও প্রণোদনায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিতর্কিত একটি বই প্রকাশ করেছেন এস কে সিনহা। যেখানে তিনি দেশ ও সরকার বিরোধী ভুল ও মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। তিনি ফেসবুকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যেখান অসংখ্য ভূল তথ্য, ভুল উচ্চারণ এবং শিশুসুলভ হাস্যকর এমনকি স্ববিরোধীতাও করেছেন। যাই হউক আমাদের রাষ্ট্রেরই ভুল ছিল ঐ তৃতীয় শ্রেণীর সর্বক্ষেত্রে তৃতীয় পর্যায়ের ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি করায়। যোগ্য পাত্রে কণ্যা দান হয়নি তাই যত সমস্যার বেড়াজাল সৃষ্টি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.