নির্বাচন নিয়ে মার্কিন-ভারতের ভিন্ন মত

প্রশান্তি ডেক্স॥ নির্বাচন নিয়ে মার্কিন-ভারতের দুই মত আরো স্পষ্ট হয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ভারত সফর করছেন। এ নিয়ে উত্তেজিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মার্কিন প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, ভারত-রাশিয়া সামরিক চুক্তি করলে, ভারতের ওপর বাণিজ্য অবরোধ করা বা আনা হবে। কিন্তু ভারত-রাশিয়া কেউই পাত্তা দিচ্ছে না মার্কিন হুমকি। bangladesh election india verses americaএকই রকমভাবে, বাংলাদেশ এবং তাঁর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও দুই মেরুতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন মানে প্রধান প্রধান সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। স্পষ্টত:ই মার্কিন দূতাবাস বলছে, বিএনপি অংশ না নিলে ঐ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। গতকাল বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের এক নৈশভোজে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্ণিকাট বলেছেন, ‘দেশের অন্যতম প্রধান একটি দলকে বাদ দিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না।’ আগামী নির্বাচন যেন ‘সকল দলের অংশগ্রহনে’ হয় সেজন্য এখন থেকেই উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দেন বার্নিকাট। কিন্তু মার্কিন অবস্থানের সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করেছে ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস। ভারতীয় দূতাবাস মার্কিন অবস্থানের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে বলেছে, তিনটি শর্ত পূরণ হলেই একটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে। এই শর্ত তিনিটি হলোঃ
১। নির্বাচন প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হতে হবে। যেন দলগুলো অবাধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে।
২। নির্বাচনে জনরায়ের প্রতিফলন ঘটতে হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৩। রাষ্ট্র এবং সরকারের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের পুর্ণ কর্তৃত্ব থাকবে নির্বাচন কমিশনের।
ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শিংলা স্পষ্টভাবেই বলেছেন ‘বাংলাদেশের নির্বাচন একান্তই তার অভ্যন্তরীণ বিষয়’। নির্বাচনে যেমন একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের অংশ নেওয়ার অধিকার আছে, তেমনি বর্জন করারও অধিকার আছে। ওই নৈশভোজে তিনি এটাও বলেছেন, ‘আমরা দেখতে চাই নির্বাচনের মাধ্যমে জনআকাঙ্খার প্রতিফলন হল কি না। জনগণ তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলো কি না।’
এই দুই দেশের বৈপরিত্যের কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কূটনীতিক শিবির বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একারনেই একাধিক দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ বিএনপিকে নির্বাচনে শর্তহীন অংশগ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে। তারা বলছে, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই কেবল বোঝা যাবে, নির্বাচনে পক্ষপাত হচ্ছে কিনা। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল বিএনপির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তাদের নির্বাচনে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। তাই, সরকারকে চাপ দিয়ে কিছু দাবী আদায়ের কৌশল ক্রমশই মার খাচ্ছে। একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া কোন দেশই বিএনপির দাবী নিয়ে আলোচনার কথা বলছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.