ইতিমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়েছে এমনকি আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ঐ আইনে স্বাক্ষরও করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে আইনটি এখন কার্য্যে পরিণত হয়েছে। সেই আইনে মামলাও হয়েছে। ভাল উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে কার মন না চায়। সেই উদ্যোগ এবং এর সফলতা দেখার আশায় আছি। মাঝখানে কথা হলো আমাদের মিডিয়া ঐ আইনটিকে নিয়ে বিভিন্ন মত ও পথের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে সদ্য পাস হওয়া আইনটির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তারা ইতিমধ্যে সম্পাদক পরিষদ এর ব্যানারে তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে মিটিংও করেছেন। তাদের দাবী বিবেচনার আশ্বাসের কথাও বলে যাচ্ছেন। সর্বোপরী বিলে রাষ্ট্রপতির সহি করার পর আবারো জোরালো দাবী জানিয়েছেন যেন আগামী সংসদ অধিবেশনে সুনির্দিষ্ট ধারাগুলির সংশোধন করা হয়। এই জোরালো দাবীর সঙ্গে দেশী ও বিদেশী সুর, লয় এবং ছন্দের বাজনাও শোনা যাচ্ছে।
এখানে আমার প্রশ্ন হলো এই আইনটি যদি এতই খারাপ হতো তাহলে প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রীপরিষদ কেন এর পক্ষে অবস্থান নিয়ে আইনটিকে পাস করিয়েছেন? কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজে কখনো সাংবাদিক সমাজের বিরুদ্ধে নন বরং তিনি সাংবাদিকদের জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করে যাচ্ছেন এমনকি কারো চাওয়ার বদৌলতে নয় বরং নিজ থেকেই করে যাচ্ছেন। তিনি পাশাপাশি নিজেকে এক সময়ের গর্বীত সাংবাদিক হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন। আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এবং ক্ষুদ্র চিন্তার আলোকে বলতে চাই যে, আইনটিকে প্রস্ফুটিত হতে সময় দেয়া প্রয়োজন। আইনটি প্রস্ফুটিত হলেই সকলের চোখে এই আইনটির সাংঘর্ষিক দিকগুলো ভেসে উঠবে এবং সেই আলোকে এর সংশোধন সংসদে পাসও হবে। তবে এর যেখানে ব্যবহারই হয়নি তখন কিভাবে এর নেতিবাচকতা তুলে ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছেন তা আমার বোধগম্য নয়। যেখানে আমাদের প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন সেখানে সকলের দাবি নিয়ে তোরজোর করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তবে যদি সাংবাদিকদের জন্য যদি কিছু করে থাকেন তাহলে ইতিহাসের পাতা থেকে বা স্বাক্ষী থেকে বলা যায় তা একমাত্র করেছেন আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীই। আজকের মিডিয়ার এই ছাড়া-ছড়িতেও তার অবদান অনস্বিকার্য্য।
হ্যা আইনটির হয়ত ভুল প্রয়োগ হতে পারে কোন ক্ষমতাসীন ব্যক্তির দ্বারা কিন্তু সরকার বা সরকার প্রধানের দ্বারা যে হবে না তার শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে আমি অন্তত পারি। তবে ব্যক্তির দ্বারা সৃষ্ট ক্ষত বা সমস্যার দ্রুতই নিস্পত্তি হবে এমনকি সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে আমার গভীর আশা। আইটিকে বাস্তবে প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়া হউক এবং এই আইনের সুফল ও কুফল উভয় দিকই প্রকাশিত হওয়ার প্রয়োজন আছে। তাইলেই বোঝা যাবে আইনটির সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা আছে কি নেই। আইনটিকে নিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে আশা করি সকলেরই মঙ্গল হবে। একপেশে কারো মঙ্গল আর কারো অমঙ্গল এই আইনটির দ্বারা ঘটবে না বলে আমি মনে করি। সামনে আমাদের কঠিন সময় এগিয়ে আসছে আর ঐ সময়ে এই তুচ্ছ একটি বিষয় নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শীকারীদের সুযোগ করে দেয়া এক ধরনের বোকামী নয় কি? আশা করি আমাদের সকলের মনের অন্তজ্বালার নিরসন হবে অচীরেই।