মেয়রের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিলেন ইউ এন ও

নাজমুল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ প্রশান্তি ডেক্স॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের আনন্দবাজার ও গোকর্নঘাট বাজারের একসনা বন্দোবস্ত প্রদানের প্রক্রিয়াটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ নীতিমালা অনুসরণ করেই সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাতুল ফেরদৌস। পৌর এলাকার তিনটি হাটবাজারের সরকারি খাস জায়গা অস্বচ্ছপথে ব্যক্তিখাতে লিজ দেয়া নিয়ে ইউএনও জান্নাতুল ফেরদৌস এবং সহকারী কমিশনার ভূমির (অ্যাসিল্যান্ড) সোহেল রানার বিরুদ্ধে পৌর মেয়র নায়ার কবিরের সংবাদ সম্মেলনের পর এ নিয়ে নিজের ব্যাখ্যা দেন ইউএনও।Mauyrer Avejok bakkha
গত রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ইউএনও এবং অ্যাসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সরকারি গেজেট ও নীতিমালা অগ্রাহ্য করাসহ পৌর কর্তৃপক্ষকে পাশ কাটিয়ে অযাচিতভাবে এবং অস্বচ্ছপথে আনন্দবাজার, বর্ডার বাজার ও গোকর্নঘাট বাজারের খাস জায়গা ব্যক্তিখাতে লিজ দেয়ার অভিযোগ করেন মেয়র নায়ার কবির। তবে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো লিখিত ব্যাখ্যায় ইউএনও বলেন, ব্যক্তিস্বার্থে কিংবা সরকারি বিধি-বিধান অগ্রাহ্য করার কোনো অবকাশ নেই। হাটাবাজারের সরকারি খাস জমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত ১৯৯৫ সালের সার্কুলার, ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল ১৯৯০ অনুযায়ী পেরিফেরিভুক্ত বন্দোবস্তযোগ্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত লিজমানি প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কাছে একসনা বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে।
মেয়রের বক্তব্যকে অনাকাঙক্ষিত ও হতাশাব্যঞ্জক উল্লেখ করে ইউএনও বলেন, ২০০৯ সালের গেজেট অনুযায়ী পৌর এলাকার সরকারি হাটবাজার নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্মাণ, ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের দায়িত্ব পৌরসভার তবে পেরিফেরিভুক্ত চান্দিনা ভিটির একসনা ভিত্তিতে বন্দোবস্ত দেয়ার এখতিয়ার জেলা প্রশাসকের। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ২০১১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তারিখের সরকারি হাটবাজার সমূহের ব্যবস্থাপনা, ইজারা পদ্ধতি এবং সেগুলো থেকে প্রাপ্ত আয়-বন্টন সম্পর্কিত নীতিমালার ১০নং অনুচ্ছেদের হাটবাজার সম্পর্কিত জেলা প্রশাসকের বিশেষ দায়িত্বে উল্লেখিত আছে নতুন হাটবাজার প্রতিষ্ঠা, তুলে বা ভেঙে দেয়া, সীমানা নির্ধারণ, পরিধি সংরক্ষণ, অবৈধ দোকান-পাট তুলে দেয়া, ঘর-বাড়ি নির্মাণ ও উচ্ছেদসহ যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম বাস্তবায়নে ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েল ১৯৯১ এবং এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন সময় জারী করা আদেশ অনুসরণে কালেক্টর/জেলা প্রশাসকরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আনন্দবাজারের নতুন অনুমোদিত পেরিফেরি নকশা অনুযায়ী বন্দোবস্তযোগ্য ভূমির পরিমাণ ০.০৪২৫ একর। ইতোমধ্যে বন্দোবস্তকৃত ভূমির পরিমাণ ০.৪৪৭৩ একর, তোহা বাজার ০.৫৬৮২ একর এবং গলি/রাস্তা ০.৩৪৭০ একর। অর্থাৎ মোট চান্দিনা ভিটির পরিমাণ (০.০৪২৫+০.৪৪৭৩)= ০.৪৮৯৮ একর এবং তোহা বাজার ০.৫৬৮২ একর বলে উল্লেখ করেন ইউএনও।
ইউএনও আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক, কোন বাজারের ৫০ শতাংশ জায়গা তোহা বাজার থাকতে হবে। এক্ষেত্রে তোহা বাজারের পরিমাণ চান্দিনা ভিটির তুলনায় ০.০৭৮৪ একর বেশি। এখানে কোনোভাবেই সরকারি বিধিবিধান লঙ্ঘন করা হয়নি। একইভাবে গোকর্নঘাট বাজারের পেরিফেরি ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল জেলা প্রশাসক অনুমোদন করেন। পেরিফেরিভুক্ত বড় গোকর্ন মৌজার জেএল নং ৬১ এর দাগ নং ১৯৭০ এর অধীনে বন্দোবস্তযোগ্য ভূমির পরিমাণ ০.১২ একর। তোহা ভূমির পরিমাণ ০.৩১ একর এবং গলি/পথ ০.০৪ একর। এক্ষেত্রেও তোহার পরিমাণ বন্দোবস্তযোগ্য ভূমির পরিমাণের চেয়ে ০.১৯ একর বেশি। এই পেরিফেরিভুক্ত বন্দোবস্তযোগ্য ভূমি থেকেই পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের অনুমতিক্রমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান লিজ দেয়া হয় বলে জানান ইউএনও।

Leave a Reply

Your email address will not be published.