নানান খেলায় পারদর্শীরা এখন ঘুমায় কিন্তু ক্ষমতার পালাবদলের খেলোয়ার যারা সবসময় ভেজা ভিড়ালের ভুমিকায় থাকেন অথবা লোকে বুঝে তারা ভাজা মাছটি উল্টিয়ে খেতে পারেন না; সেই স্বভাবের মানুষগুলিই এখন সরব। কিন্তু তাদের খেলাটা চলছে পর্দার অন্তরালে। জনসম্মুখ্যে খুব আনন্দ এবং হাসিখুসি ভাব নিয়ে আসছেন এবং সুন্দর বুলি ও শুদ্ধভাষার গালি দিচ্ছেন। জনগণকে কোরবানীর হাটের পন্য হিসেবে সামনে তুলে ধরেছেন। সবই যেন এক ছলনাময়ী রূপ যার পিছনে রয়েছে আপন আপন মতলব। প্রকারান্তরে আমরা ঐ মতলবগুলিকে ক্ষমতার, চেয়ারের এবং ভোগের ও শোষণের বলতে পারি যা জনতার জন্য বা কোরবানীর হাটের পন্যদের জন্য মরনাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত।
আমাদের সামনে এখন সুযোগ আসছে কোরবানীর হাটের পশু হওয়ার অথবা, আবার পাশাপাশি ঐ গভীর জলের স্বীকারীদের পশুতে পরিণত করার। তাই সাধারন জনগন হিসেবে এই দায়িত্বটুকু পালনে যদি কিঞ্চিৎ পরিমান ভুল করি তাহলে খেসারত দিতে গিয়ে জীবনের অবশিষ্টাংশটুকু রক্ষা করার সুযোগ আর থাকবে না। তাই সাবধানে পদক্ষেপ নিন। চিলে কান নিয়েছে ভেবে চিলের পিছনে না ছুটে বরং চিলকে আপনার পিছনে ছোটার ব্যবস্থায় মনোযোগ দিন।
সরকার ও বিরোধীদল এবং এই দেশের জনগণ নির্বাচন নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং যথা সময়ে নির্বাচন করার পক্ষে। এই তিনে মিলেই এখন নির্বাচনমূখী এবং আগামীর দিগনির্দেশনা ও করণীয় ঠিক করতে ব্যতিব্যস্ত। তবে যারা বিগত দিনের নির্বাচনে যায়নি বা আসেনি অথবা কৌশলে নির্বাচন করতে চাইনি; সেই তারা এবং তাদের সদ্য প্রকাশিত হওয়া দোসড়রা কিন্তু নির্বাচন বিমূখ এবং অধিকার আদায়ের নামে মাঠে নামা ঐক্যফ্রন্ট আজ বুলি আওড়াচ্ছে জাতিয় ঐক্যের। কিন্তু কিসের ঐক্য এবং কাদের প্রয়োজনে ঐ ঐক্য তা কিন্তু বোঝাতে অক্ষম এবং আম জনতাও বুঝতে অক্ষম। কারণ ঐ মানুষগুলো ঘুণেধরা এবং বিভিন্ন দুর্নামে নিজেদেরকে এমনভাবে জড়িয়ে রেখেছেন; যাতে করে মানুষ আর তাদেরকে সুযোগতো দুরের কথা বরং বিশ্বাস ও আস্থায় আনতে চায় না। ঐ মানুষগুলোকে দেখলেই মানুষ ভয় পায়। ঐ মানুষগুলোকে বিশ্লেষণ করলে জীবনের শেষ দিনটিও ব্যায়ীত হবে কিন্তু কুল কিনারা কিছুই পাওয়া যাবে না। বরং নিজের পরিবারের বারোটা বাজিয়ে অধুনা বিলুপ্তির পথে নিমজ্জ্বিত হবেই বৈকি।
ড. দ্বয়, ডা. এবং মান্না ও ছালুয়া আসক্ত রবদের স্বরবতাই প্রমান করে আগামীর জন্য বিষধর সাপের ধ্বংশন প্রস্তুত এবং তা আসন্ন। এই প্রস্তুতি লগ্নে তাদের বিরহ ও বিচ্ছেদের কাহিনীগুলিও ইতিহাসের নেতিবাচক সকল কলঙ্ককেও হার মানাচ্ছে। জনাব ময়নূল সাহেবের বেফাস কথার খেসারত দেয়া এবং অডিও ফোনালাপ প্রকাশিত হওয়া এমনকি একজন শ্রদ্ধাভাজন ডা. সাহেবের গোস্যা হওয়া ও অনেক অজানা তথ্যের প্রকাশ করাই এখন ঐ জাতিয় ঐক্যফ্রন্ট জনতার পথের কাটাতে পরিণত হয়েছে মাত্র।
জনাব কামাল সাহেব বক্তৃতার মঞ্চে কথা বলেছেন এমনকি লজ্জাহীনভাবে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথের অনুসারি হতে চলেছেন এবং মানুষকে হতে বলেছেন। খুবই সত্য এবং একটি সাহসি কথাই তিনি বলেছেন। কারণ বঙ্গবন্ধুবিহীন দেশে, আইনে, কানুনে উন্নতির কোন সোপান নেই। আর ওনি কামাল সাহেবতো নিজের উন্নতিটুকুও করেছেন বঙ্গবন্ধুর মাথায় কাঠাল ভেঙ্গে খেয়েই। আজ ওনি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে নেই বরং বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সঙ্গে নিজেকে প্রকাশ্যে জড়িয়েছেন। যার বহি:প্রকাশ বলা যায় সেই পচাত্তরেও একই কাজ তিনি করেছিলেন যা জাতির কাছে ছিল অজানা। কিন্তু জাতির সন্দেহের তালিকায় উহ্যহয়ে তিনিও ছিলেন। কিন্তু সেই উহ্যকে আজ তিনি বাগারম্বরে প্রকাশ করলেনই মাত্র। তবে সত্যের ধর্ম প্রকাশ হওয়া আর সেই ধর্মের আবরণেই আজ প্রকাশ হলো সেই নিগুঢ় তত্ত্ব।
ঐক্যের পিছনে কুমতলব আটা নাটের গুরু হলো বার্ণিকাট এবং তার সরকার এবং তাদের সঙ্গে জড়িত কিছু বিদেশী স্বার্থান্বেষী অতিলোভী কুমতলব আটা মানুষজন। তাই আমাদের দেশের জনগণের সম্পৃক্ততা ঐ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে নেই; যাও কিছু দেখা যাচ্ছে তারাতো আজীবনই ছিলো দেশ, উন্নয়ন এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং সার্বিক কল্যাণের বিরোধী। সেই বিরোধীদের নিয়ে কোন ঐক্যও করা যায় না এমনকি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং সহাবস্থানও নিয়েও ভাবা যায় না। শান্তি এবং স্থিতিশীলতাতো দুরের কথা। তাই এই ঐক্যফ্রন্ট এবং পাগলের প্রলাপ বকাদের কাতারে না দাঁড়ায়ে নিজেদেরকে নিয়ে ভাবুন এবং নিজেদের প্রয়োজনের চাহিদার যোগান দিয়ে সামনে এগিয়ে যান। সাধারণ জনগনের পক্ষে আসলে ঐ মুখোশধারী ঐক্যের নেতারা নেই এবং কোনদিন ছিলও না। বরং তাদের প্রয়োজনে বার বার সাধারণ জনগণকে ব্যবহার করেছে মাত্র।
সাধারণ জনগন কি চায়? খুবই সহজ উত্তর হল: তিনবেলা পেটপুড়ে খাওয়া, জীবনে চলার পথের নিশ্চয়তা, কর্মক্ষেত্রের নিশ্চয়তা, বাসস্থান ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা, শিক্ষার নিশ্চয়তা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সাম্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা। এই হলেই সাধারণ জনগনের যথেষ্ট। এইগুলোর কোনটিরই অপ্রতুলতা এখন নেই বরং সামনে আরো সুন্দর আগামী অপেক্ষা করছে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় চাওয়া-পাওয়ার নিশ্চয়তার। যদি এইসবই হচ্ছে এবং আগামীতে হবে তাহলে কেন জনগণ আন্দোলন এবং সংগ্রামে লিপ্ত হবে? উল্লেখিত সকল কিছুই পুরনের দ্বারপ্রান্তে এখন তাই আগামীতে জনগনের আর মাথা ব্যাথা থাকবে না কে ক্ষমতায় এবং কে দেশ চালাচ্ছে এই নিয়ে। সময় আসছে স্ব স্ব কাজে মনোনিবেশ করে জীবন সংগ্রামে অস্তিত্ব রক্ষায় পৃথিবীর অগ্রগামীতায় যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটেছে এবং ঘটবে এটাই পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতেই শুরু হয়েছিল যা আজও বিদ্যমান রয়েছে। তাই সেই ক্ষেত্রে সরকার পরিচালনায় সতর্কতা অবলম্বন করে এই বিষয়গুলিকে সমন্বয় সাধন করে সাম্যের ভিত্তিতে এগিয়ে নিলেই জনগণ তার সেই মৌলিক চাহিদাগুলির যোগান পেয়ে যাবে। একটি উদাহরন দিয়ে শেষ করতে চাই- সমাজে আমরা সব সময় দুর্বলকে সহায়তা করি এবং সবলকে (খারাপ) চোখে চোখে রাখি। এটাই হওয়া উচিত। তবে এইক্ষেত্রে দুর্বল কখন সবলে (খারাপে) পরিণত হয় সেইদিকে খেয়াল রাখলেই সমস্যার সমাধান এবং সাম্যের ভিত্তি রচিত হবে। কারণ দুর্বল হবে সবল আর সবল হবে দুর্বল এটাই প্রকৃতির নিয়ম। শুধু সময়ের আবর্তে এই চক্রটি ঘটে। তাই খেয়াল রেখে সাম্য রচিত করতে হবে। দৃষ্টিশক্তি সবল ও দুর্বল উভয়ের প্রতিই রাখতে হবে; আর তাহলেই সকল জঞ্জাল দূরীভূত হবে এবং লক্ষের শেষ সীমায় পৌঁছা সম্ভব হবে।
নির্বাচন নিয়ে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য যে খেলা চলছে তার কিনার করতে হবে এখনই। কারণ এই নির্বাচনের পরে জনগণের আর কোন মাথা ব্যাথা থাকবে না নির্বাচন এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে। কারণ জনগণ তার সবই পর্যাপ্তরুপে ভোগ করে নিশ্চিত ভবিষ্যত দেখতে ও দেখাতে পারবে আগামী প্রজন্মকে। তাই এই নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষদের জন্য। পাশাপাশি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির এমনকি চক্রান্তকারীদেরও শেষ চেষ্টা বা মরনকামর এই নির্বাচনেই। সুতরাং সজাগ দৃষ্টি দিয়ে সকল মতভেদ ভূলেগিয়ে সামনের নিশ্চিত ভবিষ্যতের ভীত রচিত করতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। নির্বাচন হবে, নতুন সরকার আসবে এবং এই চলমান উন্নয়ন ধারাবাহিকতাগুলিকে আরো সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে এই কামনায় এবং আগামীর নিশ্চিত নিশ্চয়তার প্রত্যাশায়।