নিজস্ব প্রতিবেদক॥ ‘সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল করা না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। প্রশাসনযন্ত্রে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। তাই অনতিবিলম্বে কোটা পুনর্বহাল অপরিহার্য’ বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের সন্তানেরা। গত বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ‘মুখে কালো কাপড় বেঁধে’ প্রতিবাদকালে এসব কথা বলেন তারা।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নয়নের নেতৃত্বে সারাদেশে একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী মো. এমদাদুল হক, মো. নুরুজ্জামান ভূট্টু, সালমান মাহমুদ জসিম, সাইফুল বাহার মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক কাজল, শাহিনুর করিম বাবু, কেন্দ্রীয় নেতা মো. জাকির হোসেন, মো. জাহাঙ্গীর আলম মো. মমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরের সহ সভাপতি মো. সালাউদ্দিন, জাহাঙ্গীর হোসেন মিলন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মমিন, সাথী রহমান, মো. জাকির হোসেন-২, মো. মুরাদ হোসেন, নূরজাহান বেগম, বাউলশিল্পী সোহরাব হোসেন বয়াতী, লিপি আক্তার, শহীদ সন্তান মো. নজরুল ইসলাম, ইয়াসিনুজ্জামান, মো. মজিবুর রহমান, পারুল আক্তার, মো. হুমায়ুন কবির, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মাহমুদুল হাসান রনি ও তিতুমীর কলেজের ফারদিন আল এহসান প্রমুখ।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ কোটা প্রবর্তন করেন। কিন্তু পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে এ কোটা বাস্তবায়িত হয়নি। জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা ’৯৬-২০০১ ও ২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য নানামুখি কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরি নিশ্চিত করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান তিনিই দিয়েছেন। সেজন্য মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিরঋণী। কিন্তু সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারিতে সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মনোকষ্ট হয়েছে।’
‘প্রশাসনে ঘাঁপটি মেরে বসে থাকা অসুর শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাতিল করতেই কোটা বাতিল করিয়েছে। তারা পরাজিত হবেই’ বলে দাবি করে দ্রুত কোটা পুনর্বহালের আহ্বান জানান মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের সন্তানেরা। বক্তারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং শেখ হাসিনাকে অধিষ্ঠিত করতে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আমরা তাকে আবারও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।’ সংগঠনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘দেশ এনেছেন মুক্তিযোদ্ধারা, আমলা হবেন তাদের সন্তানেরা’ এবং ‘যে মুখে করেছি জয়গান, সে মুখে করেছি জয়ধ্বনি, সে মুখে তুলবো না বিরুদ্ধাচরণের ধ্বনি’ স্লোগানে জামালপুর, ঝিনাইদহ, সুনামগঞ্জ, কক্সবাজার, বগুড়া, লালমনিরহাট, বরিশাল, হবিগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়নণগঞ্জ, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া, নীলফামারীসহ বিভিন্ন জেলায়ও এ কর্মসূচি পালিত হয়।