ফরিদপুরের লক্ষ্মী রানী দাসের স্বপ্ন মাটিতে মিশিয়ে দিল ভূমি দস্যু মুজিবুর রহমান

প্রশান্তি ডেক্স॥ ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের চৌহাট্রা গ্রামের হিন্দু পাড়ায় একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে লক্ষ্মী রানী দাসের বসত বাড়ির তিনটি ঘর ও একটি মন্দির ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। এ সময় ঘরের মালামালও লুট করা হয়। হামলাকারীরা পারিবারিক মন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৭০ সালের ১৫ই মার্চ জমির মালিক সতীশ চন্দ্র রায় তার অংশের ৫৫ শতাংশ জমি প্রতিবেশী নিমাই চন্দ্র দাসের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী দাসের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যায়। পরবর্তীতে লক্ষ্মী রানী দাস ও তার পরিবারের সদস্যরা সেই জমিতে বসবাস করছিল। লক্ষ্মী রানী মারা যাবার পর তার ছেলে খোকন দাস ও তার পরিবার পরিজন নিয়ে সেখানে বসবাস করছে। কয়েক বছর আগে মজিবর রহমান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জায়গার মালিকানা দাবি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। বর্তমানে আদালতে মামলা চলছে। মামলা চলাকালীন সময়ে জায়গা থেকে চলে যেতে একাধিক বার হুমকি দেয়া হয়। এ নিয়ে থানায় জিডিও করা হয়।
খোকন দাস অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মজিবর আমাদের বসত বাড়ির জায়গাটি হাতিয়ে নিতে চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে সে আদালতে মামলাও করেছে। আদালতে মামলাটি চলমান থাকলেও মজিবরের নির্দেশে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মমিন খা, নাজমুল ইসলাম ও বিল্লাল শেখসহ বেশ কিছু অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে। এ সময় তারা মন্দিরসহ চারটি টিনের ঘর ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। একপর্যায়ে তারা ট্রাকে করে বেশ কিছু মালামাল নিয়ে যায়। বাড়িঘর লুটপাটের পাশাপাশি তারা পারিবারিক একটি মন্দিরে হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুর করে। হামলাকারীদের বাধা দিলে তারা মহিলাদের লাঞ্ছিত করে। হামলা ভাঙচুরের খবর পেয়ে কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
খোকন দাসের স্ত্রী বর্ষা রানী দাস বলেন, আমাদের বাড়ি ভাঙচুর করে বেশকিছু মালামাল ট্রাকে করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। হামলাকারীদের বাধা দিলে তারা আমাদের লাঞ্ছিত করে। তিনি বলেন, হামলাকারীরা ঘর বাড়ি ভাঙচুর করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে সেখানে এমন অবস্থা করেছে যে, এখন দেখলে কারো মনে হবে এখানে কোনো ঘর-বাড়ি ছিল।
কোতয়ালী থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আদালতে মামলা চলাকালীন সময়ে এই ধরনের পৈচাশিক হামলা মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে মূলহোতা মজিবর সহ এই ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি সেইসাথে লক্ষ্মী রানীর পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জোর দাবি করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.