মির্জা ফখরুলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

আফরিন খান ॥ গণভবনে গত বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে বসেছিল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের ১১ নেতার মধ্যে শরিক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ উপস্থিতMerza Fakrul ar cheketsaer dayetto nelen prodan m ছিলেন কয়েকজন। বেলা সোয়া ১১ টা থেকে দুপুর সোয়া দুইটা পর্যন্ত দীর্ঘ তিনঘন্টা সংলাপ চলে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে কিছুটা অসুস্থ মনে হলে প্রধানমন্ত্রী তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন।
সংলাপ চলাকালেই বিএনপি মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনাকে এমন লাগছে কেন?’ ফখরুল বলেন, ‘আমি অত্যন্ত অসুস্থ। হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছি।’ প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকভাবেই জিজ্ঞেস করেন, কোথায় চিকিৎসা করাচ্ছেন? চিকিৎসা কেমন চলছে? উত্তর ফখরুল তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে কিছু তথ্য জানান। সব শুনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘না আপনার চিকিৎসা তো ঠিকমতো হচ্ছে না। আপনার চিকিৎসা ঠিকমতো হওয়া দরকার। ঠিক আছে আপনি চিন্তা করবেন না, চিকিৎসার বিষয়টি আমি দেখবো।’
গত প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটে। দুপুর সোয়া দুইটায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়। গত আবার ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক ছিল। আর দাপ্তরিক কাজের তো শেষ নেই। এরপরও প্রধানমন্ত্রী মির্জা ফখরুলের স্বাস্থ্যের বিষয়টি ভুলে যাননি। গত রাতেই একান্ত ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তাকে ডাকেন প্রধানমন্ত্রী। মির্জা ফখরুলের স্বাস্থ্যগত সমস্যার বিষয়ে সব কাগজপত্র যোগাড় করতে বলেন তাঁকে।
যে বিএনপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত বলে প্রমাণিত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ২৪ নেতাকর্মীকে হত্যা ও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীসহ ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড হয়েছে ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন দন্ড হয়েছে, সেই বিএনপি মহাসচিবের স্বাস্থ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এমন উদগ্রীব হলেন!
বিএনপি মহাসচিবের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদগ্রীব দেখে অনেকেরই বিস্মিত হন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে যাঁরা চেনেন তাঁরা মোটেই বিস্মিত হননি। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমনই। চরম শত্রুকেও তিনি আতিথেয়তা করতে ভোলেন না। চরম শত্রুরও স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব। প্রধানমন্ত্রীর মানবতাবোধ, ঔদার্যতা, দরদি হৃদয়ে চরম শত্রুরও স্থান হয়। চরম শত্রুকেও মানবিক সহায়তায় কুন্ঠিত নন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই অকুণ্ঠ ভালোবাসার জন্যই তো আজ তিনি পুরো বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতার আসনে আসীন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.