প্রশান্তি ডেক্স॥ জিয়া অরফানেজ দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত হয়ে একমাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন বেগম খালেদা জিয়া। গত সোমবার ৪ মাসের অন্তবরতীকালীন জামিন পান বেগম জিয়া। ওই দিন আদালতে উৎফুল্ল বিএনপির আইনজীবীরা বিজয় উদযাপন করেন। কিন্তু এরপর সপ্তাহ পেরিয়ে যাচ্ছে বেগম জিয়ার মুক্তির কোনো সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না। উপরন্তু গত বুধবার খালেদা জিয়ার জামিন আগামী রোববার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে জামিন আদেশে বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল দায়ের করতে বলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত সোমবার, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি শহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন। হাইকোটের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন ও রাষ্ট্রপক্ষ। গত মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা আপিলের উপর শুনানি করে নো অর্ডার দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আপিল বিভাগের পুর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠায়। সেখান থেকেই জামিন গত রোববার পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ হয়। ওই আদেশের সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে হট্টগোল তৈরি করে।
এদিকে জামিনের দিন গত সোমবার বিকেলেই কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নাশকতার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আর গত বুধবার কুমিল্লায় নাশকতার মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। আগামী ২৮ মার্চ আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেগম জিয়ার মুক্তি আটকে যাওয়ার কারণ হিসেবে সরকারকে দোষারোপ করছে বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্নকথা। তাঁদের মতে, বেগম জিয়ার আইনজীবীদের অদক্ষতার কারণেই তাঁর জামিন আবেদন হতে যেমন সময় লেগেছিল, তেমনি জামিনের পর মুক্তি পেতেও সেই আইনজীবীরাই মূলত দায়ী। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার মামলা আছে, কেন সেসব মামলায় বেগম জিয়ার জামিন আগে থেকে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। বেগম জিয়া দন্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই বলা হচ্ছিল জামিন পেলেও তাঁর মুক্তি আটকে যেতে পারে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলে।
সেগুলোর বিষয়ে বিএনপির আইনজীবীরা আগে থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানা যায়নি। অবশ্য বিএনপি আইনজীবীদের অদক্ষতার বিষয়টি দলটির নেতাদেরও অজানা নয়। এজন্য অনেককে আইনজীবী করারও চেষ্টা করা হয়েছে। ড. কামালকে আইনজীবী করার কথা তো সব গণমাধ্যমেই এসেছিল। তবে ড. কামালের মতো অন্য আইনজীবীরাও তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আইনজীবীদের এমন ফিরিয়ে দেওয়ার পিছনেও আছে বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের হাত। কারণ তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে অপরাগতার কারণেই বেগম জিয়ার মামলায় নামকরা কোনো আইনজীবীকে পাওয়া যায়নি।