সাবিনা আফরিন প্রশান্তি প্রতিনিধি॥ গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা। আরও অভিযোগ ড. কামালের স্ত্রী হামিদা হোসেনের নামে সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া প্লটের ওপর নির্মিত বাড়ি শর্ত ভেঙে ভাড়া দিয়েছেন তার দুই মেয়ে। বিষয়টি তদন্ত করছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কর ফাঁকির অভিযোগটি অস্বীকার করে ড. কামাল হোসেন জানান, তার নামে এমন কোনো ব্যাংক হিসাব নেই যেটি তিনি কর বিবরণীতে প্রদর্শন করেননি। যে অ্যাকাউন্টের কথা বলা হচ্ছে সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। লিজ নেওয়া সরকারি জমির প্লট ভাড়া দেওয়া প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, ‘প্লটটি বহুদিন ধরেই ভাড়া দেওয়া রয়েছে। এটি বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই…নতুন কোনো বিষয় নয়।’ রাজনৈতিক কারণে এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনারা ভালো জানেন। আমার কোনো মন্তব্য নেই।’ সূত্র জানায়, ড. কামাল হোসেন সার্কেল ১৬৪, ঢাকা কর অঞ্চল ৮-এর একজন করদাতা।
বিভিন্ন করবর্ষে তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় দুটি, সিটি সেন্টারে দুটি (যার একটি ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট) এবং আইএফআইসি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্টসহ মোট পাঁচটি অ্যাকাউন্টে জমা টাকার ওপর কর পরিশোধ করেছেন। তবে কর গোয়েন্দারা এই আইনজীবীর নামে এমন একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পান যেটিতে জমাকৃত টাকার ওপর তিনি কোনো কর পরিশোধ করেননি। এমন কি ওই অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে এনবিআরে কোনো তথ্যও দেননি। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ‘ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ নামে করা, যার নং-০১-১৮২৫৪৪৫-০৩। এখানে তার পেশাগত ফি জমা হলেও আয়কর রিটার্নে এই আয় দেখানো হয়নি।
২০১২ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ওই অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়। শুধুমাত্র গত অর্থবছরে সেখানে প্রায় ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা জমা হয়েছে এবং বছর শেষে নগদ স্থিতি ছিল ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা প্রায়।