প্রশান্তি ডেক্স॥ বাজারে চাউর হয়ে গেছে যে, ড. কামাল হোসেন বেজায় নাখোশ বিএনপির উপর। কারণ বি এন পি নাকি প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে তার সাথে করা ওয়াদা’র খেলাপ করেছে। কথা ছিল নাকি, নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত চলমান কার্যক্রমের কোনো পর্যায়ে তারেক রহমানকে জড়াবে না ২০ দলীয় জোট। কিন্তু বিএনপি কথা রাখেনি। বাস্তবতা হচ্ছে তারেক ছাড়া বি এন পি গঠন করা বা টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। আওয়ামীলীগ বিরোধী মানুষ কখনোই তা ভাবে না। বিএনপি’র সমর্থকরা ভাবেই না জামাত বি এন পি আলাদা। তাছাড়া সেটা কেনইবা ভাববে? দুটোই তো পাকি সমর্থনে চলে। যারা ভাবছেন, তারেক জিয়া’র নমিনেশন নিয়ে খবর দারিতে ড. কামাল হোসেন বুঝি সত্যিই খুব নাখোশ, আসলে তাঁরা জানে না যে ওটা তার ভণিতা মাত্র। ড. কামাল হোসেন তারেক জিয়ার কাছে থেকে যে মাল খেয়েছেন তাতে ভণিতা করা ছাড়া উপায় কি? এটা মুখ আর মুখোশ রক্ষার কৌশল বলে মনে করছে তাঁর সহযোগীরা। তারেকের জন্মদিনের অনুস্টহানে না গেলেও তারেকে’র লক্ষ্যই তার লক্ষ্য। সে এই ব্যাপারে গোপনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তার নিয়ন্ত্রক সে নিজে নয়। মাঝে মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নাম, সোনার বাংলার স্বপ্ন বা আরো মিষ্টি কথা যাই বলুন সেসব স্রেফ ভন্ডামি।
আর ড. কামাল হোসেনের সাথে আর যে কিছু সঙ্গী জুটেছেন তারা স্রেফ সামান্য মধু পেতো মাত্র। তাতেই তুষ্ট কিন্তু কখনোই ড. কামাল হোসেনের গভীর গোপন লক্ষ্য এবং প্রাপ্তির বিন্দু মাত্র হদিসের নাগাল তারা পাবেন না। এর বাইরে আবার নতুন যারাই ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে মিলছেন, তাদের লক্ষ্যও একই; সামান্য মধু পাওয়া। এটা অবশ্য নতুন নয়, নির্বাচন এলেই কিছু মানুষের ইচ্ছে জাগে দেশ ও দশের সেবা করার। তারা বলে, এম পি না হলে ও কর্ম করা যায় না।
আরেকটি খবরে জানা গেছে যে, ড. কামাল হোসেনের ভণিতা এবার অনেকেই বুঝে ফেলেছেন, তাই ঐক্যফ্রন্টের এই দুই নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু ও সুর্বত চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন বলে খবর বেরিয়েছে। রব আর মন্সুর সাহেব নিশ্চুপ। মন্টু ও সুর্বত চৌধুরী দুজনই ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের বিশ্বস্ত দুই সহচর বলেই পরিচিত। মোস্তফা মহসীন মন্টু হলেন ড. কামালের দল গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক। আর সুর্বত চৌধুরী হলেন, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি। মূলত তাঁদের দুজনের কারণেই নিভু নিভু অবস্থায়ও টিকে ছিল গণফোরাম।
জানা গেছে, মোস্তফা মহসীন মন্টু ঢাকার কেরানীগঞ্জের দুটি আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু দুটি আসন বিএনপি দলীয় নেতাদের মনোনয়ন দিতে চায়। মন্টুর আগ্রহের একটি আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মনোনয়ন পেতে পারেন। আরেকটি আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান। বিএনপি কোনো অবস্থাতেই মন্টুকে দুটি আসন ছেড়ে দিতে রাজি নয় বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত এই নিয়ে মন্টুর সঙ্গে বিএনপির নেতাদের কথা হলেও কোনো সমঝোতা হয়নি বলেই সূত্র জানিয়েছে।
আর সুর্বত চৌধুরী যে আসনে মনোনয়ন চান সেখানে বিএনপি মনোনয়ন দিতে ইচ্ছুক তাদের অপর জোট ২০ দলের শরিক এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমেদকে। জানা গেছে, অলি আহমেদ কোনো ভাবেই তাঁর আসন ছেড়ে দিতে রাজি নন। এছাড়া বিএনপি দাবি করেছে, ওই আসনে সুর্বত চৌধুরীর কোনো জনপ্রিয়তাও নেই। এই পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একজন নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু ও সুর্বত চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, দুজনই আজকের দিনটি সময় চেয়েছেন। আজকের মধ্যে আসন নিয়ে যদি কোনো সমঝোতা না হয়, তাহলে দুজনই আওয়ামী লীগে যোগ দিতে পারেন বলে জানা গেছে। আর এমনটি ঘটলে, তা হবে ঐক্যফ্রন্টের জন্য এযাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়।
এমতবস্থায় নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু ও সুর্বত চৌধুরীর আওয়ামী লীগে যোগ দিলে ড. কামাল হোসেনের আম ছালা দুইই যাবে। তখন মেয়ে আর জামাই বাবাজির উপর ভর করে চলতে হবে, বাঁচতে হবে তাদের টাকায়। তা না হলে শশুর বাড়ি পাকিস্তানে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধু নামের ট্যাবলেট বিক্রি করে আর বেশিদিন চলবে না।