ডিসেম্বর মানেই বিজয়

Vector-Smart-Object-1-300x127[1]এই ডিসেম্বরেই বাঙালী জাতি ফিরে পেয়েছিল তাদের স্বাধীকার, সার্বভৌমত্ব এবং স্বপ্নের এই সোনালী বাংলাদেশ। এই অর্জনে যার ভূমীকা অনন্য তিনিই আমাদের প্রাণপূরুষ বাংগালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা এবং অর্জিত স্বাধীন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই স্বাধীনতা অর্জনের কান্ডারীগণ ৩০ লক্ষ শহীদ ও সম্ভ্রম হারানো ২লক্ষ মা বোনের প্রতি এমনকি যারা সমর্থন ও সহযোগীতা করেছেন তাদের প্রতি বিজয়ের মাসে জানাই বিজয়ী সালাম ও শৃদ্ধাভরে কৃতজ্ঞতা।
আজ শ্রদ্ধাভরে কৃতজ্ঞতা জানাই বিজয়ী বীর বাঙ্গালীকে যারা সেই বিজয়ের ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাচ্ছে শত বাধা-বিপত্তিকে এমনকি সুউচ্চ দেয়ালকে টপকিয়ে। এগিয়ে যাওয়ার এই ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য বুদ্ধিদৃপ্ত নের্তৃত্বের ঝাণূ কান্ডারীর দৃশ্যমান এই শ্রদ্ধাভাজন মানুষগুলোকে। বিজয়ের পরবর্তী কালে দেশে যে কালিমালিপ্ত হয়েছিল জাতির পিতার হত্যার মাধ্যমে তা থেকে মুক্ত হতে এবং স্বাধীনতা ও বিজয়ের ধারাবাহিকতাকে পুনরুদ্ধার করতে যে সময়টুকু ব্যায় হয়েছে তার স্বাক্ষীও এই জাতি এবং ইতিহাস। সেই নৈরাজ্য এবং বিজয় ডিঙ্গার ডুবন্ত সময়ে যারা একে পুনরুদ্ধারে কাজ করেছেন এবং জীবন দিয়েছেন ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের সকলের প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা এবং বিজয়ী সালাম ও আমাদের দায়বদ্ধতা।
আজ আবারো পুনরুদ্ধারকৃত বিজয়কে ছিনিয়ে নিতে অনগ্রসরতার দিকে ফিরে যেতে এমনকি চলমান ধারাবাহিকতাকে নস্যাৎ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে অন্ধকারের কীটগুলি প্রত্যক্ষ ও দৃশ্যমানভাবে। তাই আমাদেরকে আবারো ঝাপিয়ে পড়তে হবে সেই স্বাধীনতা পূর্ব সময়ের ঐক্যের তানে এবং ৭৫ পরবর্তী সময়ের পুনরুদ্ধার আন্দোলনের বা কান্ডারীদের বিজ্ঞতার সমন্বয়ে। অন্ধকার এবং শয়তান একযোগে কাজ করে সৃষ্টির বিরুদ্ধে বা সৃষ্টির শেরা মানুষ এবং মানব সভ্যতার বিরুদ্ধে। যদিও মাঝে মাঝে চাকচিক্যে ভরপুর লোভনিয় কিছু প্রত্যক্ষ হয় তা কিন্তু সাময়িক এবং আরেকটি গভীর অন্ধকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এমনকি দুরভিসন্ধিমূলক ফাঁদে আটকানোর জন্য।
আজ জাতির সামনে সময় এসেছে জেগে উঠার এবং সত্যকে সত্য বলার, মিথ্যা, চক্রান্ত এবং অন্ধকারকে পিছনে ঠেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। এই কঠিন সময়ে চলমান উন্নয়নকে এগিতে নিতে গেলে প্রয়োজন এক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এবং সংঘবদ্ধভাবে মোকাবেলা। উন্নয়ন এবং পরিকল্পনা ও দৃশ্যমান বাস্তবতায় সুচারুরূপে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে অন্ধকার এবং ঐ কীটগুলো পরাজিত হবে নিশ্চিত এবং শুধু পরাজিতই নয় বরং পালানোর একটি ব্যবস্থাকেও আর কাজে লাগানোর সুযোগ না দিয়ে চিরতরে বিনাশকল্পে সুনিদিষ্ট পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জাতির সামনে এই দুইটি পথই খোলা রয়েছে: একটি হলো সত্যের পক্ষে আর একটি মিথ্যার পক্ষে। এখন সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় সত্যকে না মিথ্যাকে গ্রহণ করবো।
সত্যের পক্ষে হলে চলমান উন্নয়ন, দৃশ্যমান বাস্তবতা এবং সুচকের উধ্বগতি ও ভবিষ্যত পরিকল্পনাকে পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রতিযোগীতাকে উতরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির নিরীখে চিন্তা ও কাজের সমন্বয়কে গতিশীলতা দিয়ে একযোগে কাজে প্রকাশ করতে হবে। কথায় নয় কাজে বড় হতে হবে যে তা নয় বরং কথা এবং কাজকে ও চিন্তা এবং কাজের সমন্বয়কে দৃশ্যমান করাতে হবে। সমালোচনা বা নিরব থাকলে চলবে না বরং সরব থেকে সকল ব্যক্তি আকাঙ্খা বিসর্জন দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নিজেকে এই প্রতিযোগীতায় সামনের কাতারে নিয়ে আসতে হবে। অন্যের কাধে দোষারোপ চাপানো বন্ধ করে এমনকি অন্যের কাধে দায়িত্ব চাপাতে চেষ্টা না করে নিজ কাঁধে দায়িত্ব নিয়ে নিজেকে দোষারূপের আওতায় আনতে চেষ্টা করতে হবে। এখন সময় জাতিকে একটি ধারায়, একটি জোয়ারে এবং এক ও অভিন্ন চিন্তায়, পরিকল্পনায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেতনায় সম্বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।
বহুধা বিভক্ত জাতিকে এক জায়গায় নিয়ে এসে স্বাধীনতা পূর্ব চেতনায় এবং বিশ্বাসে পুর্ণ ও উজ্জীবীত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু করে দেখিয়েছেন এবং তারই কন্যা সেই ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখার প্রয়াসে নিয়োজিত রয়েছেন। আসুন আল্লাহর আর্শিবাদ এবং জাতির ঐক্য, সম্মান, সমৃদ্ধি, আগামীর সোনালী অর্জন এবং মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তাসহ উন্নত শীরে মাথা উঁচু করে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠীত হতে সহযোগীতা ও সমর্থন অব্যাহত রাখি। স্বাধীনতা এবং গত ১০ বছরের দৃশ্যমান স্বাক্ষ্যকে পুজি করে এগিয়ে যাই। বাংলাদেশের মানুষের সামনে একটি সুযোগ এসেছে এবং এখন সেই সুযোগকে কাজে লাগানোর দায়িত্বও জনগনের।
যেহেতু ডিসেম্বর সেহেতু এই ডিসেম্বরেই দুটি বিজয় আসন্ন। একটি প্রতিষ্ঠিত আর একটি প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই দুইয়ের সংমিশ্রনে জাতি উজ্জ্বিবীত হয়ে উৎযাপিত করবে আগামির সোনালী দিনের নিশ্চয়তা এবং অন্ধকারের চীর অবসানের আনন্দ। একটি বিষয় প্রত্যক্ষ করে ভালো এবং মন্দ দুটোই উপলব্দি করতে অভ্যস্ত এখন এই জাতি। বিজয় দিবস নিয়ে আগের মতো আলোচনা, অনুষ্ঠান এবং গল্পগুজব অন্যান্যবারের চেয়ে এবার একটু কম। অবশ্য এর যৌক্তিক কারণও রয়েছে। আর তা হলো সামনে নির্বাচন। এখন এদেশের মানুষ নির্বাচনমূখী। আর এই নির্বাচন ঘীরেই চলছে সকল জল্পনা ও কল্পনা এবং নানান মুখরোচক আলোচনা। একদিকে এইটি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পূর্বলক্ষণ বলে প্রতিয়মান হওয়া দৃশ্যপট বটে। কারণ জনগণ এবং নির্বাচন কমিশন এখন এক কাতারে আর নির্বাচনী মাঠের খেলোয়াগণও সেই জোয়ারে গা ভসিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। এই কৃতিত্ব কিন্তু চলমান সরকারের কাধে বর্তায়।
জনগণ এত গভীরভাবে নির্বাচনের উৎসবে মেতেছেন যে, তাদের স্মরণে আর কোন বড় অর্জন এবং গৃহস্থালী গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলিও অনুপস্থিত। নির্বাচনী জোয়ারেও ভাসছে দেশ। উন্নয়ন এবং নির্বাচনী জোয়ারের খেলায় মেতে উঠেছে এদেশের জনগণ। এই খেলার পূর্ণতা পাক আগামীর স্থীতি ও সম্বৃদ্ধিতে এটাই আমাদের কামনা। এই হলো গণতন্ত্রের উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত। আগামীতে এই দৃষ্টান্তই কাজে লাগবে উপমহাদেশের অলি-গলিতে। আমরা নির্বাচন ও এই ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সকলের জন্য শুভকামনা করি এবং প্রয়োজনে সহযোগীতার মনোভাব অব্যাহত রাখি। সত্যের জয় হউক এবং মিথ্যার পরাজয় হউক এই কামনা করি।
নির্বাচনী জোয়ারে আরো যে অর্জন তাও এখন মলিন হতে চলেছে: কারন মানুষের ধ্যান-জ্ঞান এখন শুধু আগামী নির্বাচনকে ঘীরে। পাঠ্যপুস্তক সঠিক সময়ে পৌছা, সুষ্ঠ নির্বাচন সম্ভবের নিশ্চয়তা, দেশের প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬%তে স্থীর থাকা; রাজস্ব আয় ১৫.১৫%তে উন্নীত; রপ্তানী আয় গত তিন মাসে ১৪০কোটি ডলারে উন্নীত; শিল্প পার্ক ও চামড়া নগরী; পোষ্ট অফিসের সংস্কার; আশ্রায়নে ২লক্ষাধিক পরিবারের পুর্নবাসন; বিশ্বে ক্ষমতাধর নারীর তালিকায় বাংলাদেশের ৪ ধাপ উন্নতি; দেশের মেট্টোরেলের দৃশ্যমানতা; বিমানের উন্নতি; রোহিঙ্গা পূর্নবাসন প্রক্রিয়ার ক্রমোন্নতিসহ আরো অনেক। এই সকল অর্জনগুলি আজ নির্বাচনী জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে, তারপরও বলব এই ডিসেম্বরেই রচিত হউক আরেকটি ইতিহাসের এবং আরেকটি নতুন বিজয়ের।
সকল উন্নয়নের সঙ্গে বাংগালীর পছন্দের উন্নয়ন ঘটুক এই ডিসেম্বরেই। সিদ্ধান্ত নিতে বাংগালী গর্জে উঠুক সেই ’৭১এর উজ্জ্বীবিত শক্তির হুংকারে। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা এর ধারাবাহিকতা সুরক্ষিত হউক সমৃদ্ধিতে এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতার আবরণে। গনতন্ত্রে ফিরে আসুক স্বস্তি। ভেদাভেদ ও বিভাজন এবং অন্ধকারের সংস্কৃতির বিলুপ্তি ঘটুক। সকল অন্যায়ের সমাধি স্থাপীত হউক এই ডিসেম্বরেই। এগিয়ে যাচ্ছে দেশ এবং এগিয়ে যাবে। উন্নয়ন সুফল ভোগ করবে এই জাতি। বিশ্ববাসী তাকিয়ে দেখবে এবং শিখবে এই জাতির অগ্রযাত্রার নিরীখে। এই হউক আমাদের সকলের কামনা ও প্রার্থনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.