নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই এর প্লাবন গতিশীল হচ্ছে। নির্বাচনী প্লাবনে এখন মানুষ, সমাজ, সংসার প্লাবিত। সেই প্লাবনের মাঝে জলোচ্ছাসও দেখা যায়। তবে এই জলোচ্ছাস আনন্দের এবং অধিকার প্রয়োগের। মাঝে মাঝে এর বিরুপ প্রতিক্রিয়াও চোখে পড়ে। অনেক প্রাণও ইতিমধ্যে ঝড়ে গেছে ঐ প্লাবনে। তবে আমরা মানুষ এবং আমাদেরই হুশ জ্ঞান থাকার কথা কিন্তু কিভাবে বেহুশ হয়ে কান্ডজ্ঞানহীন আচরণে জড়িয়ে পড়ি সেটাই এখন দেখার বিষয়। ভাষায়, ইতিহাসে, সময়ে, স্বনিয়ন্ত্রন হারিয়ে, কখনো আবার উত্তেজনার বশবর্তি হয়ে অথবা বয়সের ভারে নূয্য হয়ে অথবা লোকানো বিকলাঙ্গ স্বভাব সত্যের আবরণে প্রকাশ হওয়ার নিম্মিত্ত্বে। এই সকল আচরণে অতিষ্ট মানুষগুলি এখন নির্বাচনী প্লাবনের ¯্রােতে মিশে যাচ্ছে। তবে কয়েকটি কথার উদৃ¦ত্তি না দিলেই নয়: এই গুলিই আমাদের তরুন ও যুব সমাজকে রক্ষার জন্য যতেষ্ট। আর তা হলো আমাদের শ্রদ্ধেয় বিজভী ভাইয়ে পাগলোক্তি- যেমন তিনি বলেন রবিন্দ্রনাথ বিএনপি করতেন— তাই তিনি বিএনপির পক্ষাবলম্বন করে নৌকা ডুবি লিখেছিলেন। জন্ম, সময় এবং ইতিহাসে তিনি এত অজ্ঞ! কিভাবে তিনি তার স্ব অর্জিত সার্টিফিকেট ধরে রেখেছেন তা কোন সুস্থ্য মস্তিঙ্কের মানুষের বোধগম্য নয়। আজ পৃথিবীতে রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে কি করতেন বা বলতেন তা প্রকাশ করতে না পারলেও বলতে পারি তিনি রিজভকে নতুন করে পড়ানোর দায়িত্ব নিতেন বা নিজে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করার নতুন পদ্ধতি আবিস্কারের স্ফুলিঙ্গ ছড়াতেন।
শুধু কি তাই আমাদের সকলের প্রীয় উদ্ভট রিজভী ভাইতো এও বলেছেন বিদ্রোহী কবি নজরুল ও বিএনপির সমর্থক ছিলেন তাই তিনি সকল বিদ্রোহী কবিতা রচিত করেছেন এই আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। খুবই ভাল ভাই বলে যান এবং চলমান কার্যক্রমেই আপনি এবং আপনার দল এখন পতিত আর এই পতিত অবস্থার চির সমাপ্তি বা অবসান হবে অচিরেই। এই পচনের সঙ্গে আবার নতুন করে যুক্ত হয়েছেন আমাদের অহংকার ও গর্বের ধন আত্মঅহংকারী ও জনবিচ্ছিন্ন স্বঘোষিত মহাজ্ঞানী জনাব ড. কামাল হোসেন সাহেবও ঐ ডুবন্ত বিএনপিকে আরো ডুবানোর দায়িত্বে। তিনি কিভাবে ঐ সম্মানিত জায়গা যেটাকে পুজি করেই তিনার জীবন জিবিকা; সেই স্থানের সহকর্মী এবং রাষ্ট্রের একজন সম্মানীত ব্যক্তিকে বাসট্রার্ড বলেন তা কিন্তু কোন সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষের দ্বারা কাম্য নয়। তাই আমার বিশ্বাস তিনি সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষ ছিলেন না ঐ সময়। তারপরও বলব চিন্তুা ও কর্মের বহি:প্রকাশই হলো মানুষের মুখের কথা। তাই ঐ মানুষটি সম্পর্কে কোন সময়ই আমার আগ্রহ ছিল না কিন্তু একটি বিরুপ ধারনা ছিল যা দিনে দিনে পূর্ণতা পেয়েছে এই সময়ের প্রকাশিত দৃশ্যমান ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য যে, তিনি কথায় কথায় গভীর গাম্বিয্য প্রকাশ করেন, হুমকী ও ধমকি দেন। যত্র-তত্র ভাব দেখান যে, তিনি বিশেষ কিছু, নিজের ঢোল নিজেই পিটান। সংবিধান শিখানোর দায়িত্ব নিতে চান। তবে তিনি কিন্তু এককভাবে সংবিধান রচনা করেননি। বরং সমষ্টিগতভাবে করেছেন। অনেকেই যুক্ত ছিলেন এই অমূল্য ধন সংবিধান রচনায়। কেউ কিন্তু তার মত হুংকার ও ঝংকার দেননি। অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে এবং ভাব বিনিময়ও হয়েছে। আবার অনেকের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত মধুর সম্পর্কও ছিল। যাদের অনেকেই আজ নেই। তবে তাদেরকে মনে পড়ে এই কঠিন সময়ের বাস্তবতায়। এমনি একজন জনাব সিরাজুল হক সাহেব বিশেষ প্রাধান্য আমার জীবনে। তিনি আমাকে এমনকি তার জীবদ্ধশায় কাউকে নিজ থেকে বলতে শুনিনি যে, তিনি সংবিধান রচনায় ভূমিকা রেখেছেন বা অমুক করেছেন, তমুক করেছেন; বরং বিনয়ের সঙ্গে বলতেন ঐ দায়িত্বের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন; কখনো পেশাদারিত্বের কারণে আবার কখনো বিশ্বস্ততার কারণে। মাঝে মাঝে বিশেষ পান্ডিত্ব ও জ্ঞানের জৌলুসের কারণে। যা ইতিহাস স্বীকৃত এবং গন মানুষের মুখে মুখেও প্রকাশিত ও প্রচারিত বটে। ঐ মানুষগুলোর জন্য শ্রদ্ধা চির জাগ্রত। এইক্ষেত্রে জনাব কামাল সাহেব ব্যতিক্রম এবং তিনি নিজেই ঢোল বাজান। কথায় আছে গোয়ালা তার দইকে কখনো টক বলেন না। খালি কলসির আওয়াজ বেশী। এই ঢোল বাজানোতে ভাটা পড়েছে সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া অতি বাস্তব ও সত্য প্রকাশের মাধ্যমে। বুদ্ধিজীবি দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদনের পরের কান্ড দেখে তরুন সমাজসহ আবাল বৃদ্ধ বণিতারা আজ হতবম্বিত ও স্তম্ভিত। তিনিই ভয় দেখিয়ে হুমকি দেন— নাম কি? চিনে রাখলাম; কয়টাকা দিয়েছে এই প্রশ্ন করার জন্য এবং সর্বশেষ হামোশ? এই যদি হয় নেতাদের বৈশিষ্ট এবং চিন্তা চেতনা তাহলে তাদের দ্বারা জাতির সেবা হওয়াতো দুরের কথা বরং জাতি সেবা করতে করতে জীবন শেষ করতে হবে বৈকি।
ভালো যে, মানুষ তাদের ভোটের সিদ্ধান্তটি নির্ভেজালভাবে নিতে পারার সুযোগ করে দিয়েছে ঐ আচরণগুলো। আমার প্রশ্ন ড. কামাল গংরা কি করেছে এই জাতির জন্য? জাতির ক্রান্তিকালে তাদের কি ভূমিকা ছিল? তারা কেথায় ছিল জাতির ক্রান্তকালে? এই সবই কিন্তু তাদেরকে চিনতে এবং জানতে ও আগামীর সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে এবং করছে। বঙ্গবন্ধু তাদেরকে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু দিয়েছিলেন এবং সেই উদারতার ও মহৎ ভালবাসার দানটুকুকে কখনো কখনো ভাল এবং কখনো কখনো খারাপ উদ্দেশ্যে কাজে লাগিয়ে তারা আজ এই আজকের আবস্থানে। তবে খুবই ভালো যে, তারা এখন থেকে আর বঙ্গবন্ধুর নাম নিয়ে পথ চলতে পারবেন না। কারণ তারা চিরদিনের বেঈমান এবং অন্তরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিরোধী ছিলেন। যা ছিল সূদূর অতীতে অপ্রকাশীত এবং আজ সবই দিবালোকের মত স্পষ্ট ও প্রকাশিত। এই পচনোম্মুখ মানুষগুলো একত্রে বাংলাদেশ এবং এই দেশের মানুষের সুখ হরণের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। তাই তাদের সাজানো চক্রান্তের ফাদে পা না দিয়ে চলমাল ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিতে নিজ নিজ ভ’মিকা রাখুন।
যদি এই নির্বাচনে জনগণ ভ’ল সিদ্ধান্ত নেয় এবং ঐ চীরশত্রু চক্রান্তকারীদের লোভাতুর ফাদে পা দেয় তাহলে আগামীতে কি কি ঘটবে এবং জনগণ কি থেকে বঞ্চিত হবে: ১। দেশে চরম নৈরাজ্য এবং খুণ খারাবিতে ছয়লাভ হবে। প্রশিশোধ পরায়ন স্পৃহা জাতির সত্ত্বাকে ধ্বংস করে দিবে। ২। মানুষ যে সামাজিক জীব তা বিলুপ্ত হবে। সমাজে চরমপন্থী ও উগ্রবাদীতা এবং আইয়্যামে জাহিলিয়াতের পূণ:প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। ৩। বাংলাদেশ একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে এবং আফগান, ইরাক, সুদানসহ ধ্বংসউন্মুখ রাষ্টগুলোর ন্যায় অশান্তির (দোযখের) আগুন দাউ দাউ করে প্রজ্জ্বলিত হবে। মনুষত্বের বিলুপ্তি ঘটবে ও হিং¯্র পশুত্বের বিচরণে সয়লাভ থাকবে। ৪। সকল খারাপীর জয়জয়কার এবং ন্যায় নীতি ও সাম্য এবং সত্যের বিলুপ্তি ঘটবে। অন্ধকারের রাজ্যে মানুষ দিশেহারা পথিকের ন্যায় ঘুরেফিরে মরবে। ৫। নারীর নিরাপত্তা ভ’-লুন্ঠিত হবে। গণিমতের মাল হিসেবে নরপশুদের ভোগ্য পন্যে রূপান্তরিত হবে। যার প্রমানস্বরূপ স্বাধীনতা পূর্ব পাক বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনকেও হার মানাবে। ৬। থাকবে না কোন সুশিক্ষা তবে থাকবে শুধু কুশিক্ষা এবং এর প্রভাব ও মাদক এবং যৌন ব্যবসার মহোৎসব। অরো অনেক যা ভাষায় প্রকাশ করতে বিবেক বিব্রতবোধ করছে।
কি হারাবে: ১। সুখ ও সমৃদ্ধি। ২। উন্নয়ন ও উন্নত দেশের মর্যাদার স্বপ্ন। ৩। শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রের অগ্রসরতা এবং বিশাল বাজার। ৪। শান্তি ও সহাবস্থানের সম্প্রীতি। ৫। কর্মসংস্থানের সুযোগ। ৬। মাথা উচু করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। ৭। বৈশ্বিক মর্যাদা। ৮। মেধার স্বীকৃতি ও অবাধ বিচরণ। ৯। স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের কাঠামো। ১০। চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা। ১১। রাজারা চায় প্রজারা রাজা হউক এর বাস্তবায়ন। ১২। জ্ঞান ও বুদ্ধি বিবেচনা প্রসুত বিবেক সম্পন্ন মানুষের জীবন। আরো অনেক যা উল্লেখ করে শেষ করা যাবে না।
জনতার ভাবনা খুবই স্পষ্ট যে, অবস্থা দৃষ্টে এখন মানুষ আর রাস্তায় নেমে ঐ জাতিয় ঐক্য ফ্রন্টের পক্ষে কাজতো দুরের কথা; কথা বলতেও লজ্বা পাচ্ছে এমনকি সাধারণ মানুষ এখন চলমান সরকারকেই আগামীর ভাবনায় রেখে এগুচ্ছে। দেশ ঘুরে জনপদের খবরে ও খবরের শিরোনাম দেখে বুঝা যাচ্ছে নির্বাচন হচ্ছে এবং এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ বনাম উন্নয়ন ও শেখ হাসিনার। সুতরাং মানুষ রায় দিচ্ছে শেখ হাসিনা ও উন্নয়নকে আর সুযোগে ফায়দা ঘরে তুলছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। উন্নয়ন এবং শেখ হাসিনার বিকল্প হিসেবে এযাবত পর্যন্ত কোন কিছু দাড় করাতে পারেনি ঐক্যফ্রন্ট; আর আগামী দিনেও পারবে না এটা নিশ্চিত। তবে সুযোগ ছিল এবং মানুষও চেয়েছিল একটা ব্যালেন্স; কিন্তু ঐ ব্যলেন্স কিন্তু শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে নয়। বরং শেখ হাসিনাকে রেখে ৭০/৪০। কিন্তুু সেটা করে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে এই দেশের ঐক্যফ্রন্ট কিংবা এর বাইরের দলগুলো। তবে এই না পারার কারণের মূলেই রয়েছে জামায়াত, তারেক জিয়া এবং তাদের আগামীর সন্ত্রাসী পরিকল্পনা ও কিছু পেছনের দরজার ক্ষমতালোভী বিদেশী বাঙ্গালী। যা হয়েছে তা সবই বাংলা এবং বাঙালীকে সোনার বাংলা রক্ষার নিমিত্তেই হয়েছে। আর তাতে লাভাবান হয়েছে বঙ্গবন্দুর বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও আগামীর স্বপ্নচুড়ায় আরোহনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর সম্পর্কে আগাম বলা ঠিক নয় তারপরও বলব বিজয় সুনিশ্চিত স্বাধীনতার পক্ষের উন্নয়নকামী জনতার। আগামী পর্বে আরো বিশদ বর্ননাত্বক আলোচনা নিয়ে আসছে নতুন বছরের প্রশান্তি এবং বিজয়ানন্দের ধারাবাহিক সংকলন। কোন না কোন ভাবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়েই আপনিও থাকছেন আমাদের সঙ্গে। জয় হউক আমাদের সকলের এই কামনায় ও শুভ বিজয় প্রত্যাশায়।