প্রশান্তি ডেক্স॥ বিবিসি নিউজ, ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা রয়েছে:
১. ১৩ই অক্টোবর ২০১৮ তারিখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়।
২. এই জোটের সঙ্গে রয়েছে বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।
৩. বিএনপি ঐক্যফ্রন্টের পাশাপাশি ২০ দলীয় জোটের নেতৃত্বেও রয়েছে।
৪. জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩০শে ডিসেম্বর।
৫. নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন ২৮শে ডিসেম্বর।
৬. প্রবাসী কল্যাণ: প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। ইউরোপ, জাপানসহ নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা হবে। মধ্যপ্রাচ্যে মারা যাওয়া প্রবাসী কর্মীদের মৃতদেহ সরকারি খরচে দেশে এসে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হবে।
৭. বিদ্যুৎ ও জ্বালানি: প্রথম বছর বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে না। একশো মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর মূল্য আগামী পাঁচ বছরে বাড়বে না। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ও সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক দামের পরিবর্তে আবাসিক হারে হবে।
৮. জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন: দুই বছরের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি ১২ হাজার টাকা করা হবে। সকল খাতের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নির্ধারণ করা হবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং চালু করা হবে। স্বাস্থ্যবীমার মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রিমিয়াম দিয়ে সবাই স্বাস্থ্য সুবিধা পাবেন। কর্মজীবী নারীদের জন্য পর্যাপ্ত ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। ভেজাল ও রাসায়নিকমুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হবে।
৯. স্বাস্থ্য: হাসপাতালগুলোর শষ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং সকল জেলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন। ওষুধের অপপ্রয়োগ রোধে চিকিৎসকদের সকল ব্যবস্থাপত্র নিরীক্ষা এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রোগীর মৃত্যুর খতিয়ান পরীক্ষা করে জানানো হবে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে ন্যায়পাল থাকবেন। ঔষধ ও ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার খরচ কমানো হবে। প্রবাসী কর্মীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে দেশে আনা এবং বাড়িতে পৌছে দেয়া হবে। সকল নাগরিককে স্বাস্থ্য কার্ড দেয়া হবে।
১০. কর্মসংস্থান ও শিক্ষা: পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ছাড়া সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোন বয়সসীমা থাকবে না। বেকার ভাতা চালু করা হবে। সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধী কোটা ছাড়া আর কারো জন্য কোটা থাকবে না। তিন বছরের মধ্যে সরকারি সব শূন্য পদ পূরণ করা হবে। ওয়ার্ক পারমিটবিহীন সকল বিদেশী নাগরিকের চাকুরি বন্ধ করা হবে। মোবাইলে ইন্টারনেট খরচ অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যয় সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। মাদ্রাসা শিক্ষায় কারিগরি শিক্ষা দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থান করা হবে।
১১. দুর্নীতি দমন ও সুশাসন: বর্তমান সরকারের আমলের দুর্নীতির তদন্ত করে জড়িতদের বিচার করা হবে। ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হবে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে সরকারের অনুমতির বিধান বাতিল হবে। বর্তমান কোন উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করা হবে না। ব্যাংকিং ও শেয়ারবাজারে লুটপাটে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। ভিনদেশীয় সাংস্কৃতি আগ্রাসন রোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১২. ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: উন্নয়ন কর্মকান্ডের দায়িত্ব থাকবে নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের হাতে। জেলা পরিষদের সদস্যরা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন। পৌর এলাকায় সিটি গভর্নমেন্ট চালু হবে। প্রশাসনিক কাঠামো প্রাদেশিক পর্যায়ে বিন্যস্ত করা হবে। ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা রয়েছে।
১৩. ক্ষমতার ভারসাম্য: নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান তৈরি ও নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা দেয়া। সংসদে উচ্চকক্ষ তৈরি করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনা হবে। সংসদে বিরোধী দলকে গুরুত্ব দেয়া। দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারা যাবে না। সংসদে সংরক্ষিত মহিলা আসন ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হবে। প্রাদেশিক সরকার পরীক্ষার জন্য সর্বদলীয় জাতীয় কমিশন গঠন করা।
১৪. নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড ও গুম পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিল করা হবে। রিমান্ডের নামে নির্যাতন বা সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার বন্ধ করা হবে। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে।
১৫. প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্য। গত ১০ বছরের মামলা, গুম, খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা তদন্তে শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী, আইনজীবীদের সমন্বয়ে সর্বদলীয় সত্যানুসন্ধান ও বিভেদ নিরসন কমিশন গঠন করা হবে। খোলামনে আলোচনা করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে সমাধান করা হবে। সকল জাতীয় বীরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। একদলীয় শাসনের যাতে পুন:জন্ম না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে।
বিস্তারিত পড়ুন: https://www.bbc.com/bengali/live/news-46588770