প্রশান্তি ডেক্স॥ আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত বৈঠক করেছে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল, জাতীয় ঐক্যের নেতা ড. কামাল হোসেনসহ উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মনোভাবাপন্ন বুদ্ধিজীবীরাও। বৈঠকের পর থানার ওসি-এসপি’সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির গোপন পরিকল্পনা করছে। এ পর্যন্ত দেশের ৭টি থানার ১৩ জন কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপকভাবে অনুসন্ধানের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ১১ ডিসেম্বর রাতে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনকেন্দ্রিক চূড়ান্ত বৈঠক করেছে। এ সম্পর্কে অবগত ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যদিও কৌশলের কারণেই এই খবর গণমাধ্যমকে জানায়নি বিএনপি নেতারা।
ওই বৈঠকের ঠিক তিন দিন পর থেকে আজ পর্যন্ত ‘রাজশাহী, নাটোর, নোয়াখালী, ঢাকার কয়েকটি থানার দায়িত্বে থাকা ওসি-এসপি’দের বিএনপির পক্ষ থেকে আর্থিক চুক্তির প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বিনিময়ে দলটি চায় নির্বাচনে তারা যেন বিএনপির পক্ষে কাজ করে।’ চুক্তির প্রস্তাবনা পেয়েছেন এমন ওই ১৩ কর্মকর্তার বরাতে তিনি আরও জানান, বিএনপির পক্ষ থেকে ওই কর্মকর্তাদের স্যাটেল করে দেয়ার লোভের পাশাপাশি প্রত্যেককে ২৫ কোটি টাকা করে দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়। সূত্র বলছে, নির্বাচন নিয়ে তারেক রহমান অন্তত ১৩ দফা পরিকল্পনার পাঠিয়েছে নেতাদের উদ্দেশ্যে। তারেক রহমান চায় অন্তত যেকোন একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপির ক্ষমতায়ন। বিএনপির এমন তৎপরতা সম্পর্কে জেনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপি যদি সোচ্চার হয় তবে ভোটের সংস্কৃতি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরেও এর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এদিকে, বিএনপি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে হলেও নির্বাচনের শেষদিন পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকাসহ শেষের ২-৩ দিন কঠোর আন্দোলন করবে। এ নিয়ে বৃহৎ পরিকল্পনা করা হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা কম থাকবে বিধায় উৎকোচ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। এমনকি দলীয় লোকজন দিয়ে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষ মার্কায় ভোট দেয়ার কৌশল অবলম্বন করবে তারা।
এ প্রসঙ্গে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। বিএনপির চরিত্রে এমন কালিমা নতুন নয়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সুযোগ-সুবিধা বর্তমান সরকার যেভাবে নিশ্চিত করেছেন তাতে তারা কোন রাষ্ট্রদ্রোহী ষড়যন্ত্রের অংশীদার হবেন বলেই আমি মনে করি। তবে বিএনপির এমন তৎপরতার জবাবে জড়িতদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ সরকারের।