জোয়ারে চলে ভাটায় বন্ধ

জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর॥ শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথের পদ্মার শাখা নদীতে নাব্যতা সংকট রয়েছে। ফলে নদীতে জোয়ার এলে ফেরি চলে ভাটা পড়লে চলে না। নদীতে জোয়ারের অপেক্ষায় প্রত্যেক দিন চার ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি পদ্মার শাখা নদীতে পানি কম থাকায় ফেরিঘাটের একটি পন্টুন বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব কারণে আলুর বাজার ফেরিঘাটে যানবাহন আটকে থাকছে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কের যানবাহন পদ্মা-মেঘনা নদী পার হয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাতায়াত করে। joyare chole vata
ওই সড়কের আলুর বাজার-হরিনা নৌপথের পদ্মার শাখা নদী ভেদরগঞ্জ উপজেলার বেরাচাক্কি এলাকা দিয়ে চর রয়েছে। ওই চরের মধ্য দিয়ে ফেরি চলাচলে বিঘন সৃষ্টি হচ্ছে। তখন ওই স্থান থেকে আলুর বাজার ফেরিঘাট পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ মিটার খনন করার উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিএ। চ্যানেলে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য তিন লাখ ঘনমিটার বালু অপসারণের জন্য এসএম রহমান গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া জয়। এসএম রহমান গ্রুপ ওই কাজের জন্য মাতৃবাংলা ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়। গত ৩ নভেম্বর মাতৃবাংলা ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং খননের কাজ শুরু করে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮০ হাজার ঘনমিটার বালু অপসারণ করেছে তারা।
কিন্তু ওই নৌপথের ফেরিগুলোকে জোয়ারের সময় চলাচল করতে হচ্ছে। প্রত্যেক দিন চার ঘণ্টা জোয়ারের জন্য ফেরিগুলো ঘাটে অপেক্ষা করছে। চ্যানেলে পানি না থাকায় আলুর বাজার ফেরিঘাটের একটি পন্টুন বন্ধ রাখা হয়েছে। মাতৃবাংলা ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপক রাসেল আহম্মেদ বলেন, পদ্মার শাখা নদী হতে বালু অপসারণের কাজ চলছে। বালুগুলোকে পাইপের সাহায্যে নদীর গভীর অংশে ফেলা হচ্ছে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ৩ লাখ মিটার বালু অপসারণ করা সম্ভব হবে। তারপর নদীর কি অবস্থা হবে তা সার্ভে করবে বিআইডব্লিউটিএ। আলুর বাজার-হরিনা নৌপথের কুসুম কলি ফেরির ইঞ্জিন কর্মকর্তা নিজামুল হক বলেন, ড্রেজিং অনেক ধীর গতিতে হচ্ছে। দুই মাসেও ড্রেজিং শেষ না হওয়ায় আমাদের অনেক দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে। প্রত্যেক দিন চার ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। একটি পন্টুন বন্ধ রাখা হয়েছে। চার ঘণ্টায় প্রত্যেক দিন অন্তত ৭০-৭৫টি গাড়ি কম পারাপার হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসি আলুর বাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমিন বলেন, খননকাজ আরও দ্রুতগতিতে করা উচিত। দ্রুত খনন না হওয়ায় জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়ছে। ফেরি কম ব্যবহার করা লাগছে, গাড়ি কম পারাপার হচ্ছে। এখন প্রত্যেক দিন ফেরিঘাটে ২০০-২৫০ গাড়ি আটকা পড়ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। বিআইডব্লিউটিএর সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সবুর বলেন, একটি বেসরকারি কোম্পানিকে দিয়ে খননকাজ করানো হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে খননকাজ শেষ করা সম্ভব হবে। নদীর যে স্থানে বেশি সমস্যা সেখানে আগে খনন করা হচ্ছে। নদীর জোয়ার-ভাটার সঙ্গে পলি মাটি-বালুর সম্পর্ক। চাইলেই আমরা দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করতে পারব না।

Leave a Reply

Your email address will not be published.