প্রশান্তি ডেক্স॥ সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি আরও জানিয়েছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এ চুক্তি সই হবে। রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত (রবিবার) সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের নবনির্মিত ভবন পরিদর্শন করেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। এ সময় তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি হওয়ার তথ্য জানান।
রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আজ সৌদি আরবের যৌথ বাহিনীর প্রধান ফায়াদ আল রুয়ায়লির সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। এ সময় তিনি দুই দেশের বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ, এদিন রিয়াদে সৌদি আরবের সহকারী প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল-আয়েশের সঙ্গেও বৈঠক করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান। পরে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, সৌদি আরব ও ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মাইন অপসারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণের বিষয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তিও প্রস্তুত করা হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়নে প্রায় ১৮০০ সদস্য মাইন অপসারণ কাজে নিয়োজিত হবে; যা সৌদি আরব ও বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যদের সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান আজিজ আহমেদ। এ ছাড়া, সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সৌদি আরবের বিভিন্ন সামরিক খাতে নিয়োজিত করার প্রস্তাব দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চিকিৎসকেরা কাজের পাশাপাশি সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণও গ্রহণ করতে পারবেন।
সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ আরও জানান, সৌদি আরবের ইসলামিক মিলিটারি কাউন্টার টেরোরিজম কোয়ালিশনে (আইএমসিটিসি) বাংলাদেশ থেকে একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলসহ চারজন কর্মকর্তাকে নিয়োগের জন্য নাম দেওয়া হয়েছে। এই কোয়ালিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
সৌদি আরবের সামরিক কর্মকর্তাদের বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের কথা তুলে ধরে সেনাপ্রধান বলেন, ‘সৌদি আরবের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা বাংলাদেশে মিলিটারি একাডেমি, ডিফেন্স কলেজ ও ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতে প্রতিরক্ষা খাতে এ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাসের নবনির্মিত ভবন পরিদর্শনকালে জেনারেল আজিজ আহমেদকে স্বাগত জানান সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ। এ সময় মিশন উপপ্রধান ড. নজরুল ইসলাম, ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহ আলম চৌধুরীসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেনাপ্রধানের সফরসঙ্গী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তখন উপস্থিত ছিলেন।