বা আ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিমানবাহিনীর একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান মার্শাল বিরেন্দর সিং ধানোয়া গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার জাতীয় সংসদ ভবন কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করি দুই বিমানবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। দুই বাহিনী যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করতে পারে।’
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে এবং আমি আশা করি এ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে।’ বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে তৃণমূল পর্যায় থেকে উন্নয়ন করা। দারিদ্র্য বিমোচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি ভারত সরকার ও সে দেশের বিমানবাহিনীর সহায়তার কথা স্মরণ করেন। ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধানও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ভারতীয় বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু এ অঞ্চলটি দুর্যোগ-প্রবণ, তাই যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় দুই বিমানবাহিনী একযোগে কাজ করতে পারে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাদানকারী ভারতীয় সেনাদের প্রতি বছর বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এতে খুবই আনন্দিত।’ বিরেন্দর সিং ধানোয়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর দেশে ফিরে যাওয়ার কথা স্মরণ করে বলেন, ‘এটি যুদ্ধ শেষে স্বল্পতম সময়ে কোনো বাহিনীর দেশে ফিরে যাওয়ার একমাত্র দৃষ্টান্ত।’ তিনি বলেন, ভারতীয় বিমানবাহিনী বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বিনির্মাণে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি প্রশিক্ষণসহ বহু ক্ষেত্রে দুই বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অবকাঠামোর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটি বিশ্বমানের।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন, বিশেষ করে, তৈরি পোশাক খাতের (আরএমজি) উন্নয়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ভারতের বাইরে আমি কোনো পোশাক-আশাক কিনতে গেলে সবসময় ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগ দেখতে পাই। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন ও ভারপ্রাপ্ত ভারতীয় হাইকমিশনার ড. আদার্শ সোয়াইকা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।