প্রশান্তি ডেক্স॥ সিলেটে বিরল রোগ জিবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাব টেকনেশিয়ান সঞ্জয় দাস। তিনি মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউপির গুলুয়া গ্রামের রমাকান্ত দাসের ছেলে। জিবিএস রোগটি সিলেট অঞ্চলে যেমন বিরল তেমনী এর চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সঞ্জয়ের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব না হওয়ায় বিত্তবানদের নিকট তার পরিবার সাহায্য চাচ্ছেন।
অসুস্থ সঞ্জয় দাসের পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, চাকুরী সুত্রে সে সিলেটে বসবাস করছে। কয়েকদিন পূর্বে সে জলবসন্তে আক্রান্ত হয়। এরপর থেকে শারীরিক দুর্বলতা বাসা বাধে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী থেকে হাত-পা অবশ হয়ে উঠায় পরদিন নগরীর পার্কভিউ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তার দেহে বিরল রোগ জিবিএস ভাইরাসের উপস্থিতি টের পান। এরপর থেকে তিনি এ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পার্কভিউর আইসিইউ ইনচার্জ ডা. অনিক রায় জানান, জিবিএস (গুলেন ব্যারি সিনড্রোম) রোগটি অনেকের কাছে অপরিচিত হলেও রোগটির প্রাদুর্ভাব একেবারে কম নয়। তবে সিলেট অঞ্চলে এ রোগে আক্রান্ত রোগী খুব একটা দেখা যায়নি। এ রোগে আক্রান্তদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে শুরু করে সারা শরীরে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে এবং একপর্যায়ে নড়াচড়ার সামর্থও হারিয়ে যেতে পারে।
জিবিএসের মুল কারণ জীবানু হলেও প্রকৃতপক্ষে জীবাণু-প্রতিরোধী ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক আচরণের ফলে এ রোগের জন্ম হয়। আক্রান্ত হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে দুই পায়ে দুর্বলতা দেখা দেয়। ধীরে তা বাড়তে থাকে এবং উপরের দিকে ছড়াতে থাকে। ক্রমে তা মেরুদন্ড, দুই হাত, বুক ও মূখের মাংসপেশীতে ছড়িয়ে পড়ে। দুর্বলতায় রোগীর শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত আইসিইউ বা নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইউনিটে স্থানান্তর করতে হয়। নতুবা রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, এ রোগের নির্দিষ্ট চিকিৎসা হল প্লাগমাফেরসিন বা শিরায় ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইনশেকশন। উপসর্গ দেখা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে এ চিকিৎসা দিতে হয়। তবে এ চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। রোগীকে একে একে পাচটি ইনজেকশন দিতে হয়। একেকটির মূল্য এক লাখ টাকা। সে কারণেই সকলের পক্ষে এ চিকিৎসা চালানো সম্ভব হয় না।
জিবিএস আক্রান্ত সঞ্জয় দাসের বড়ভাই দাসেরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক অজয় দাস জানান, তার ছোটভাই বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে। এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় তাদের পরিবারের পক্ষে চিকিৎসা খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য। ভাইয়ের জীবন বাচাতে সমাজের বিত্তবানদের নিকট তিনি সাহায্য কামনা করেন। আগ্রহীদের ০১৭৭২৮৫০৮৮৩ নম্বরে যোগাযোগ করার আহবান জানিয়েছেন।