নিউইয়র্কে পিঠা উৎসবে বাঙালিদের মিলনমেলা

আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলি পিঠা উৎসব। গত রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাঙালি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের স্টারলিং-বাংলাবাজার এভিনিউ এলাকায় আল আকসা পার্টি হলে বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ পিঠা উৎসব। কমিউনিটি এক্টিভিস্ট মাকসুদা আহমেদ আয়োজন করেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার এ পিঠা উৎসব। এ দিন সন্ধ্যে ৬টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চলে এ পিঠা উৎসব।New yarke petha yatsob
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলকে শুভেচ্ছা জানান মাকসুদা আহমেদ। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী গ্রাম বাংলার এ পিঠা উৎসবে হরেক রকমের পিঠা ছাড়াও ছিল কবিতা, ছড়া, কৌতুকসহ মনোজ্ঞ সব পরিবেশনা। হাসি-উচ্ছ্বাস, শুভেচ্ছা, অভিনন্দন এসবের মধ্য দিয়ে বসেছিল প্রবাসীদের মিলন মেলা। চমৎকার এ আয়োজনে প্রতিধ্বনিত হয় বাঙালি সংস্কৃতির জয়গান। পিঠা উৎসবে শোভা পাচ্ছিল পাটিসাপ্টা, ভাপা পিঠা, তেলে পিঠা, চিতই পিঠা, চানার সন্দেষ, ঝাল পিঠা, গজাগজা, পাকুন পিঠা, মাংশের পিঠা, নারিকেল পুলি, নিমকি, চুপতি পিঠা, সাবুদানার, ডালপুরি, ডালপাকন, বুলশা, বিবিখানা সহ হরেক রকমের পিঠা। ছিল পান-সুপারীও। আয়োজক ও তার বন্ধু-বান্ধবীদের হাতে তৈরী বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানান আকৃতি, নানান স্বাদ আর রঙের এসব পিঠা অতিথিদের জন্যে ছিল ফ্রী। উৎসবে বাসায় তৈরী পিঠা আনার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন যেন আয়োজক এবং তাদের বন্ধু-বান্ধবরা। উৎসব প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন আমেজের।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বেলাল বেগ, ছড়াকার মনজুর কাদের, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরন, কবি-সাংবাদিক ছন্দা বিনতে সুলতান, কবি জুলি রহমান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আব্দুস শহিদ, আব্দুল হাসিম হাসনু, আলমগীর খান আলম, মামুন রহমান, মোহাম্মদ সাদি মিন্টু, লোকমান হোসেন লুকু, শাহ বদরুজ্জামান রুহেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী সহ নানা শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনকে প্রাণবন্ত করে রাখে আকর্ষণীয় সব মজাদার বাঙালী পিঠা আর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান উপভোগ করেন আগত সবাই।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এধরনের উৎসব আমাদের মন প্রাণ বাঙালীত্বের আমেজে ভরে দেয়। সুযোগ করে দেয় প্রবাসে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের কৃষ্টি-কালচারের সাথে পরিচিত হবার। দেয় শেকড়ের সন্ধান। বক্তারা বলেন, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম মূলধারার সাথে মিশে গেলেও তাদের স্বাতন্ত্রবোধ, নিজস্ব স্বত্তা, সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে এধরনের উৎসব বড়ই প্রয়োজন। প্রবাসে নতুন প্রজন্মের সামনে বাঙালী সংস্কৃতিকে তুলে ধরা না হলে একদিন তা হারিয়ে যাবে।
আয়োজক মাকসুদা আহমেদ বলেন, পিঠা উৎসব বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির অংশ। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম জানবে বাঙালি সংস্কৃতিকে। প্রবাসে পারস্পারিক বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠবে, সুদৃঢ় হবে। সকলের সহযোগিতা কামনা করে ভবিষ্যতে আরো বর্ণময় অনুষ্ঠান উপহার দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেলি-আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন, হৃদয়ে বাংলাদেশ, সাধন ব্যান্ড, তানিয়া বিউটি সেলুন, বিপা বিউটি সেলুন, এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুল এবং আল আকসা রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published.