বা আ॥ বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছে আওয়ামী লীগ, বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) একুশে পদক বিজয়ীদের মাঝে পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সম্মান জানিয়ে আমরা এদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছি। বাংলাদেশের মানুষের যা কিছু অর্জন, এর সবই এনে দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষাকে নানা রকম যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। কখনো আরবি ভাষায়, কখনো রোমান ভাষায় বাংলা লেখার চেষ্টা চালানো হয়েছে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে এদেশের মানুষ রক্ত দিয়েছে। একুশ আমাদের শিখিয়েছে- মাথা নত না করা।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টায় ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। অনুষ্ঠানে একুশে পদক প্রদান পর্ব পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদকপ্রাপ্তদের গলায় একে একে মেডেল পরিয়ে দেন। পদক প্রদান শেষে সভাপতির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার এবছর ২১ জনকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।
একুশে পদক ২০১৯-এ ভূষিত হয়েছেন- ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), তা যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু এবং অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম, সংগীত বিভাগে সুবীর নন্দী, প্রয়াত পপ শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর) ও নজরুল সংগীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, অভিনয়ে লাকী ইনাম, সুবর্ণা মুস্তাফা ও লিয়াকত আলী লাকী, আলোকচিত্রে দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম, চারুকলায় চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য, গবেষণায় বিশ্বজিৎ ঘোষ ও মাহবুবুল হক, শিক্ষায় ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, ভাষা ও সাহিত্যে রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস।
মরহুমা অধ্যাপক হালিমা খাতুনের পক্ষে পদক গ্রহণ করেন তার কন্যা প্রজ্ঞা লাবনী এবং আজম খানের পক্ষে তার কন্যা ইমা খান।
অনুষ্ঠানে প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে।