আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা

প্রশান্তি ডেক্স॥ ৪৭ সালে দেশ বিভাজনের পরে এই সাবকন্টিনেন্টে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুইটি দেশের জন্ম হয়। ব্রিটিশরা এই বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সম্পূর্ণ ধর্ম ও জাতিগত পার্থক্যের সূত্রের উপর দাঁড়িয়ে। মুসলমান এবং সনাতন ধর্মের ভিত্তিতে তারা পাকিস্তান এবং ভারতের বিভাজন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। এই বিভাজনে সেই সময়ে যে সকল রাজনৈতিক নেতা ছিলেন তারা কি চেয়েছিলেন আর কি হয়েছে সেসব আলাদা একটি বিষয়, আমি আমার বিষয়বস্তুর দিকে দৃষ্টি দিয়ে লেখাটা এগিয়ে নিতে চাই। adonek bangladesh
দেশ বিভাজনের সময় যে দুইটি ভাগ হয়েগেলো তার মধ্যে একটি ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চল পাকিস্তান নামে পরিচিতি পেলো । কিন্তু সমস্যা দাঁড়িয়ে গেলো মুসলমানের অবস্থান নিয়ে। অভিনব এক বিভাজনে মুসলমান সম্প্রদায় রয়ে গেলো দুই দিকে। তাদের ভূখন্ড সম্পূর্ণ আলাদাভাবে পূর্ব ও পশ্চিমে অবস্থিত হওয়ায় পাকিস্তানের দুইটি খন্ড একটি দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। নাম হলো তাদের পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৫ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের নাম ছিল পূর্ব বাংলা। অথচ পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে কোন ধরণের সীমানা সম্পর্ক বিদ্যমান নয়। তারা একে অপর থেকে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। দুইটি দেশের মধ্যখানে অবস্থান করে ভারত। পশ্চিম পাকিস্তানের অংশে ভারতের নয়াদিল্লি ও রাজস্থান, পূর্ব পাকিস্তানের অংশে ভারতের কলকাতা, বিহার ও ঝাড়খন্ড।
এমন একটি মানচিত্র নিয়ে যখন সময় তার গতিতে চলতে থাকে তখন ধীরে ধীরে সামনে আসতে থাকে ক্ষমতা, সক্ষমতার একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা, সবল কর্তৃক দুর্বলের প্রতি অত্যাচার। ধর্মভিত্তিক বিভাজন সক্রিয় হয় চরম আকারে। সেই সাথে জাতিগত পার্থক্য মানুষকে নাজেহাল করে ফেলে।
১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল, এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়সীমা ধরা হলেও ১৯৩৯ সালের আগে এশিয়ায় সংগঠিত কয়েকটি সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম ছিলো, পূর্ব এশিয়ায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের লক্ষে ১৯৩৭ সালে জাপান কর্তৃক প্রজাতন্ত্রী চীনে আক্রমণ।
এরপর আমরা দেখেছি হিটলার কর্তৃক ইহুদি নিধন। ব্যবসা-বাণিজ্য সকল ক্ষেত্রে ইহুদিদের প্রভাব হজম করতে না পেরে এবং অন্যান্য ঘটনার সূত্র ধরে হিটলার হত্যা করেছে হাজার হাজার ইহুদি। এরপর রাশিয়া, পোল্যান্ড, ইটালি, ইংল্যান্ড, আমেরিকা ইত্যাদি কেউ বাদ যায়নি এই সমর হতে।
এমন ইতিহাস তুলে ধরার কারণ আমি বোঝাতে চেয়েছি, পশ্চিমা দেশ, উত্তরের দেশ, পূর্বের দেশ এমনকি দক্ষিণের চীন, জাপান কোরিয়া যখন শক্তিশালী সমর ব্যবস্থা নিয়ে চলমান, শক্তিশালী অর্থনীতি নিয়ে চলমান, সেই সময়ের বিজ্ঞানভিত্তিক চর্চা নিয়ে চলমান, সভ্যতার অনেক কিছুই তারা করায়ত্ব করে ফেলেছে ঠিক তখন এই সাবকন্টিনেন্টে জন্ম নিয়েছে ৩টি দেশ। যাদের দুইটির মধ্যে ধর্মভিত্তিক বৈষম্য না থাকলেও শুধুমাত্র জাতিগত পার্থক্যে একে অপরের প্রতি বৈরি সম্পর্কে বিদ্যমান। যাদের ভূখন্ডের মধ্যে নেই কোন সম্পর্ক। অপরদিকে ভিন্ন ধর্মের হওয়ায় ভারতের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের গড়ে ওঠে দা-কুড়াল সম্পর্ক। যদিও অন্যান্য অনেক বিষয় এই বৈরিতার জন্য দায়ী তবে ধর্মের পার্থক্য অন্যতম।
যারা একে অপরের প্রতি শোষণ, বিদ্বেষী মনোভাব নিয়েই ব্যস্ত। এমন একটি সময়ে পশ্চিম পাকিস্তান কিছুটা অর্থনীতি সমৃদ্ধ, শক্তি সংরক্ষণ করলেও পূর্ব পাকিস্তান থেকে যায় অর্থনীতিতে দুর্বল, শক্তিতে দুর্বল। কারণ পশ্চিম পাকিস্তান কেন্দ্রীয় কম্যান্ড হিসাবে বরাবর বৈষম্যের কাতারে রেখে দেয় পূর্ব পাকিস্তানকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.