আনোয়ার হোসেন॥ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমানে দেশের উচ্চ আদালত ও অধীনস্থ আদালতে সর্বমোট বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫০। এর মধ্যে ফৌজদারী মামলার সংখ্যা ২০ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭। যার মধ্যে আপিল বিভাগে ২০ হাজার ৪৪২ ও হাইকোর্ট বিভাগে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৬৫২। আর অধস্তন আদালত (নিম্ন) ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৬৫২ মামলা বিচারাধীন।
গত সোমবার জাতীয় সংসদে সৈয়দ আবু হোসেনের (ঢাকা-৪) ও এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) তারকা চিহ্নিত পৃথক পৃথক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
বিচারাধীন মামলা কমানোর নানা উদ্যোগ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর বিচার ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে। বর্তমান সরকার এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ সারাদেশের ফৌজদারি মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য লোকসংখ্যা বৃদ্ধি ও সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিচার কাজে গতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের বিশেষ উদ্যোগে বিভিন্ন পর্যায়ের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে গতিশীল করা হয়েছে, যাতে শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত অধস্তন আদালত ৫৭১ জন সহকারী জজ নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে সারাদেশে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা পদায়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ১২তম জুডিশিয়াল সার্ভিস নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী জজ নিয়োগ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে । ইতোমধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এ বছরের শূন্যপদ বিবেচনায় বিজ্ঞাপনে উল্লেখিত সংখ্যার অতিরিক্ত ৫০ জনসহ মোট ১০০ প্রার্থী চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন পূর্বক সহকারী জজ পদে নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে ইতোমধ্যেই অনুরোধ করা হয়েছে । তাছাড়া আইন ও বিচার বিভাগ হতে পরবর্তীতে আরও ১০০ সহকারী জজ নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বরাবর চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সরকারি নারী ও শিশু পাচার সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সারাদেশে আরও ৪১টি ট্রাইব্যুনাল সৃষ্টি করেছে। নতুন সৃজিত এ ট্রাইব্যুনালসমূহ মোট ৯৫টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর অধীন দায়েরকৃত মামলার নিষ্পত্তি করা হচ্ছে । তাছাড়া সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল সৃজন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর অধীন মামলা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে ।
আইনমন্ত্রী বলেন, ওই ট্রাইব্যুনালসমূহের জন্য ২৪০ কর্মচারীর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়া সাইবার ট্রাইব্যুনাল ১২২ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১৫৯টি যুগ্ম জেলা জজ আদালত, পরিবেশ আদালত ১৯টি পরিবেশ আদালত, ছয়টি পরিবেশ আপিল আদালত, ৩৪৬ টি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট /মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এর পদ সৃজনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এর মধ্যে সাতটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠনের জন্য জনপ্রশাসন ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া গেছে।