বিশ্ব নারি দিবসে আমাদের প্রত্যাশা

Vector-Smart-Object-1-300x127[1]বিশ্ব নারী দিবসে সকল নারীদের জানাই সালাম ও হৃদয়ের উষ্ণ ভালবাসা। নারী জাতি মায়ের জাতি এই জাতির তরেই নিহীত আমাদের আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যত। এই নারি জাতিকে (মা, বোন, ভগনি, খালা, দাদী, নানী, ফুফু) শ্রদ্ধাভরা কুর্নীশ জানাই। আমাদের দেশের তরে নারীর যে অবদান তা অনস্বীকার্য। এই মার্চেই রচিত হয়েছে ইতিহাস এবং ঘোষীত হয়েছে স্বাধীনতা। মহানায়কের নায়কোচিত সেই অমর ভাষণটি স্থান পেয়েছে বিশে^র শ্রেষ্ঠ ভাষনে এবং এই ভাষনের পিছনেও রয়েছে একজন নারীর ভুমিকা। আর তিনিই হলেন জাতির জনকের সহধর্মীনি শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব। বিশেষ করে জন্মদাত্রী এবং জীবনসঙ্গী এই দুইয়ের কম্বিনেশনেই বঙ্গবন্ধু পৃথিবীতে অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন যতদিন পৃথিবী বেঁচে থাকবে। শুধু কি তাই এই নারীদের দ্বারাইতো আজ আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।
কর্মক্ষেত্রে নারির জাগরণ ঘটেছে; নারি পুরুষে মিলে সংসারের ন্যায় সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নারি পুরুষের ভেদাভেদ কমে এসেছে। বৈশম্যের যে ধারাবাহিকতা ছিল তার অবসানে কাজ করে যাচ্ছেন আমাদের অহংকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। নরীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, সকল কর্মক্ষেত্রে (সরকারী এবং বেসরকারী), রাজনীতি এবং সংসদ ও আগামীর দেশ বিনির্মানে প্রতিটি পদক্ষেপে। নারি সংসার দিয়ে শুরু করেন তারপর সন্তান জন্মের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যান; সর্বশেষ হলো কর্মস্থলে (সরকারী, বেসরকারী, রাজনীতি) সংসদ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটি দৃশ্যমান উন্নয়ন মানদন্ডে দন্ডায়মান করেন। এই সফলতায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, সমাজ, রাষ্ট্র ও পরিবার। নারি দিবসে এই অর্জনের জন্য সাধুবাদ জানাই যারা এর পিছনে অনুঘটকের ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন এবং আজকের অবস্থানে এসে পৌঁছতে সংগ্রামী ও অগ্রজ ভৃমিকা পালন করেছেন।
যুগে যুগে নারির প্রতি বৈষম্য এবং বিদ্দে¦শ ছিল এবং আছে। এই বিদ্বেশ কাটিয়ে উঠার উপায় এখন সর্বত্র বিরাজমান। নারি; (মা, বোন, খালা, নানি, দাদি, ফুফু, স্ত্রী, মেয়ে) তাই দায়িত্ব সচেতনতা এবং জাগ্রত বিবেক ও খোদায়ী মূল্যবোধ ব্যবহার এখন জরুরী। খোদার দেয়া বিধান এবং মানুষের তেরী আইনকে সম্মান করে অগ্রসর হলে নারির প্রতি বিদ্ধেশ ও বৈরী ও রূঢ় আচরণ বন্ধ হবে এবং স্ব স্ব সম্মানে সম্মানীত করার সুযোগ তৈরী হবে। চারিদিকে নেতিবাচক যা দৃশ্যমান তা দূর হবে। সকলকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে এবং এর চর্চা বৃদ্ধি করতে হবে। নারি-পুরুষ উভয়েই মিলে সমাজকে, পরিবারকে এবং রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাব এই প্রত্যয়ে বলীয়ান হয়ে পথ চলতে হবে। আমি নই, আমরা পারি, পারব, পেরেছিতে বিশ্বাস স্থাপন ও চর্চা চালিয়ে যেতে হবে।
নারি দিবসে আরো আহবান জানাই যে, বিভিন্ন মাধ্যমে উঠে আসা নেতিবাচক এবং দুর্বলতার সুযোগ সন্ধানী দৃশ্যমান সংবাদের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সতর্কতা এবং বিচার বিভাগের সজাগ দৃষ্টিই পারে ইদুর বিড়াল খেলা বন্ধ করতে। নিরপরাধ মানুষের হয়রানি বন্ধ এবং প্রকৃত অপরাধিকে আইনের আওতায় আনতে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের এই সমাজ ব্যবস্থায় এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় যে সকল দুর্বলতা বা অসচেনতা বিরাজমান রয়েছে তার অবসানকল্পে সকলের সম্মিলীত প্রয়াস অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এখানে সম্মিলীত প্রয়াসের অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং এর সুযোগে বিমান ছিনতাই অথবা ইলিয়াস কাঞ্চনের মত মানুষগুলি বিনা বাধায় পিস্তল নিয়ে বিমানে উপার সুযোগ পায়। কাউকে ফেরেস্তা ভাবার সুযোগ নেই বরং সবার জন্যই সমান ব্যবস্থার বাস্তবায়ন জরুরী নতুবা এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং আমাদের সবলতাকে দুর্বলতায় পরিণত করবে। যদি আমাদের যান্ত্রিক ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে সেই ত্রুটি সাড়ানো জরুরী এবং যদি এতে কারো গাফিলতি পরিলক্ষিত হয় তাহলে সেই গাফিলতির অবসান ঘটানো হউক। রাষ্ট্রকে ক্ষেয় করার মত বা দেশের সম্মানে আঘাত লাগার মত আর কোন নেতিবাচক ঘটনার জন্ম না হউক সেইদিকে সজাগ দৃষ্টি দেয়া আমাদের ও সময়ের এক যুগান্তকারী দাবি। আমি বিশ্বাস করি সরকার এবং প্রশাসন এই ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ নিবে। আর যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সরকার এবং রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে ক্ষেয় করতে এই ধরণের কান্ড ঘটিয়ে থাকেন তাহলে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আইনের সফল প্রয়োগে জনসম্মুক্ষে আনয়ন করা জরুরী।
নারী দিবসের সম্মানার্থে আমাদের মহীয়সী নারিরা যে অর্জন করেছেন তার সৃজনশীল ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করতে হবে এবং নতুনদের উৎসাহের জন্য সংরক্ষণ করে দৃশ্যমান রাখতে হবে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার পেয়েছেন তারজন্য আমরা কৃতজ্ঞ ও খুশী। আর এই খুশিতেই বলতে চাই; এই ধারাবাহিকতা তৃণমূল পর্যন্ত অব্যাহত থাকুক এবং আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র বিনির্মানে এর ভৃমিকা প্রাধান্য পাক। নারি দিবসে এও বলতে চাই আমাদের নারি সমাজের বলিষ্ট ভুমিকা রয়েছে নির্বাচন এবং ভোটে। এই ভোটের লাইনে নারির দৃশ্যমান অংশগ্রহন আমাদেরকে আগামীর সফলতা এবং উন্নয়ন উভয় ক্ষেত্রে বলিষ্ট অবধান রেখেছে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হবে না। ইতিমধ্যে যারা বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানাই এবং যারা নির্বাচনী মাঠে ভোটের অপেক্ষায় রয়েছেন তাদের জন্য শুভ কামনা রইল। এই নির্বাচন যেন হয় উৎসবমূখর এবং প্রতিদ্ধন্ধিতাপূর্ণ। কারণ এটাই হলো নির্বাচনের সার্থকতা। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন তাদের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ বহমান থাকুক এবং যারা অংশগ্রহন করেন নাই তাদের জন্য আফসোসটুকু অবশিষ্ট থাকুক। এই সুযোগ এবং আগামীর বলিষ্ট নেতৃত্বগুণ অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
নারিরা এগিয়েছে পুরুষের সহযোগীতাই এবং পুরুষেরা পরিপূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে নারির সহযোগীতাই এই মন্ত্রে উজ্জ্বিবীত হউক আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র। মহান উক্তিটি দিয়ে বলতে চাই “পৃথিবীর অর্ধেক করেছে নর; আর বাকি অর্ধেক করেছে নারি”। আমাদের আজ এই প্রতিপাদ্যতে উজ্জীবিত হতে উৎসাহিত করছে নারি দিবসের তাৎপর্য। আজকের দিনে বলতে চাই আমাদের দেশের সকল মানুষের জন্য চিকিৎসার সমান সুযোগ সৃষ্টি হউক। উঁচু নিচু ভেদাভেদ ভুলে মানুষ এবং সৃষ্টির সেরা জীব তার উপর খোদা তায়ালার দৃষ্টিতে সবাই সমান এই আঙ্গিকে আর আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারে রক্ষিত মূলনীতির আলোকে দৃশ্যমান হউক চিকিৎসা ব্যবস্থা। আর এই ব্যবস্থায় আমাদের প্রধান মন্ত্রী হলেন দৃশ্যমান উদাহরণ। তাকে ঘীরে এবং অনুসরণ করেই শুরু হউক এর চলমান যাত্রা। যাতে মানুষ আগামী দিনে এই ব্যবস্থার বাস্তবায়ন এবং দৃশ্যমান উন্নয়নের জন্য বিশ্বের আরেকটি সম্মানীত পুরস্কার বাংলার ভাগ্যাকাশে যুক্ত হউক। নারী দিবসে এই আশা এবং প্রত্যাশা নিয়েই সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং মহান স্বাধীনতার মাসের মহান বীর সেনানিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও রুহের মাগফিরাত কামনা এবং যারা এখনও বেঁচে আছেন তাদের সু-স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ূ কামনা করে আমাদের দায়বন্ধতা ও তাদের দেখানো পথের উত্তরসূরী হিসেবে অসমাপ্ত কাজের সমাপ্তির প্রচেষ্টা এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ঘোষণা করে আগামীর উজ্জ্বল সোনালী দিনের আশায় দিনগুনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.