যে দ্বীপ বিজ্ঞানীদের বিস্ময়

আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই দ্বীপ, অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র টোঙ্গার কাছেই হঠাৎ জেগে ওঠে একটি ছোট্ট দ্বীপ। এর নামটা বেশ অদ্ভুত। হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই।jadep besonno
দ্বীপটি নিয়ে সমুদ্র বিজ্ঞানীদের কৌতূহলের সীমা নেই। ৫শ’ মিটার লম্বা ও আড়াইশ’ মিটার উঁচু এই দ্বীপের বয়স মাত্র চার বছর।
এই চার বছরেই ফুলের সমারোহ আর পাখির কিচিমিচিতে মুখরিত হয়ে গেছে দ্বীপটি।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সাগরতলের হুঙ্গা টোঙ্গা আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত থেকে উদগীরিত ছাই, লাভা জমে এই এ দ্বীপ সৃষ্টি হয়।
সেসময় স্যাটেলাইটে ধরা পরে দীপটি। এরপর স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি দিয়েই এ দ্বীপ পর্যবেক্ষণ করছিলেন তারা।
বিজ্ঞানীদের মতে খুব কম সময়েই আবার হারিয়ে যাবে এটি।
ইতিমধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাত ও সমুদ্র ঢেউয়ে ক্ষয় ধরেছে এটির।
গেল বছরের অক্টোবরে ‘সি এডুকেশন এসোসিয়েসন’ এবং নাসা’র বিজ্ঞানীরা দ্বীপটিতে পা রাখেন।
হুঙ্গা – টোঙ্গা ঘুরে এসে নাসার গবেষক ড্যান স্লেব্যাক জানান, সেখানে গোলাপি রঙের ফুল ও বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখেছেন তারা। এমনকি পেঁচারাও আবাস গেড়েছে ওই দ্বীপে।
আশেপাশের দ্বীপ থেকে পাখিরা এসে ওই দ্বীপে বাসা বেঁধেছে এবং সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে বীজ। ওসব বীজ থেকেই চার বছরে লাভার মাটি সবুজে পরিণত হয়েছে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
এর চটচটে কাদামাটি পরীক্ষা করে বেশ উবর বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
হুঙ্গা-টোঙ্গাকে আশ্চর্য দ্বীপ বলে অভিমত বিজ্ঞানীদের।
কারণ, আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা জমে সৃষ্ট দ্বীপ সাধারণত তিন-চার মাস পরেই তলিয়ে যায় সমুদ্রে।
অথচ হুঙ্গা-টোঙ্গা দ্বীপটি টিকে আছে চার বছর ধরে!
যা কিনা গত দেড়’শ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে ইতিহাস গড়েছে।
হুঙ্গা-টোঙ্গার এমন স্থায়ীত্ব নিয়ে গবেষণা করছেন তারা।
আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের সঙ্গে সমুদ্রের পানির রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়ে দ্বীপটি আরও দৃঢ় হয়েছে বলে জানান তারা।
১৯৬০ সালে আইসল্যান্ডে একইভাবে জেগে ওঠা একটি দ্বীপও সমুদ্রে জেগেছিল কয়েক বছর।
নাসা বলছে, ৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত টিকতে পারে দ্বীপটি।
নাসার গবেষক স্লেব্যাকের মতে, দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে দ্বীপটি। ক্রমাগত বৃষ্টিপাত হতে থাকলে দ্বীপটি হয়ত আর মাত্র এক দশক টিকতে পারে বলে ধারণা তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published.