কওমি মাদ্রাসা থেকেই এদেশে শিক্ষার শুরু হয়েছিল…প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বা আ॥ এ ভূখন্ডে কওমি মাদ্রাসা থেকেই শিক্ষা শুরু হয়েছিল বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এ ভূখন্ডে শিক্ষা শুরু কওমি মাদ্রাসা থেকে। দেশে ২০ হাজারের মতো মাদ্রাসা রয়েছে। ২০ লাখের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। এতিম, গরিব, দরিদ্র ঘরের ছেলেমেয়েরা সেখানে পড়তে যায়। পড়াশোনার একটা জায়গা পাচ্ছে।kwme madrash theke
তিনি জানিয়েছেন, মাদ্রাসা জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা নয়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অন্যদের দ্বারা ব্যবহার হতে পারেন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দেয়া নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদেরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
গত সোমবার রাতে জাতীয় সংসদে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদের সমাপনী ভাষণ দেন সংসদ নেত্রী।
গত ৩ মার্চ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ওপর দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাকে ‘বিষবৃক্ষ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
কওমি সনদের স্বীকৃতি দেয়ারও সমালোচনা করেন। তার এই বক্তব্যের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। হেফাজতে ইসলাম রাজপথে বিক্ষোভ করেছে এবং কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, মাদ্রাসা জঙ্গিবাদ সৃষ্টির কারখানা, এটা সঠিক নয়। হলি আর্টিজানে যে হামলা হলো সেখানে কারা জড়িত? তারা তো কেউ মাদ্রাসা শিক্ষিত না। সবাই তো উচ্চ শিক্ষিত।’
‘আমার মনে হয়, তাদের জীবনে পাওয়ার আর কিছু বাকি নেই। পাওয়ার জায়গাটি হারিয়ে গিয়ে তারা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে। এজন্য শুধু মাদ্রাসা শিক্ষিতদের দোষারোপ করলে হবে না।’
কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দেয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কি তাদের ফেলে দেব? তারা তো আমাদের দেশেরই নাগরিক। বিশ্ব যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন তারা কেন পিছিয়ে থাকবে। তাদের মেধাকে আমরা কেন কাজে লাগাবো না?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়া আমাদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফসল। তারা দেওবন্দের কারিকুলাম অনুসরণ করছে। দেওবন্দ ভারতে স্বীকৃত একটি কারিকুলাম।’
এ সময় তিনি দেওবন্দি ধারার প্রশংসা করে বলেন, ‘এই দেওবন্দ কারা? তারা কিন্তু ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, সিপাহি আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং তাদেরকে স্বীকৃতি দিয়ে কোনো অন্যায় করিনি।’
দীর্ঘ সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরেন। প্রথম অধিবেশনে বিভিন্ন সাংসদের উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগেরও জবাব দেন। সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রশংসার পাশাপাশি বাইরে থাকা বিএনপির কড়া সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.