সভ্যতার ক্রমবিকাশে এবং বিজ্ঞানের চরম উন্নয়ন শিখরণে আর বাংলাদেশের ডিজিটাল বাস্তবায়নের নতুন দিগন্তে এখন কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে আগুন নামক এক সর্বনাশী খেলা। এই খেলায় মেতে উঠেছে অন্ধকারের এক অপ্রকাশিত লেলিখান শিখা; যা ধরা ছোয়ার বাইরে এবং দৃশ্যমান অপশক্তির অন্তরালে নতুন এক কৌশলী অন্তজন্ত্রনার ফসল। এই লিখা লিখতেও আমার জীবন প্রদীপ ঝাকুনি দিয়ে মরনের স্বাধ আস্বাধন করিয়েছে। আমি, আমরা ও আমাদের প্রজন্মকে কি নতুন এক বিপদ সংকুল সম্ভবনার বাস্তবতায় নিমজ্জ্ত করে দিচ্ছি?
সেই চুড়িহাট্ট্রার শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার বনানীর ঘটনা এবং সেই ঘটনার যন্ত্রনায় ছটফটাতে ছটফটাতে এখন গুলশানের দৃশ্যমান অবস্থা। এই যে ক্ষয়-ক্ষতি এবং জীবন প্রদিপ নিভে যাচ্ছে এমনকি সরকার’র উন্নয়ন কর্মকান্ডে কিছুটা বিলম্ব পরিলক্ষিত হচ্ছে তার পিছনের কারণ কি কোনদিন উদঘাটিত হবে না? যদিও ঘটনার পরিক্রমায় হুংকার ও ঝংকার দেখা যায় কিন্তু তার বাস্তবায়ন খুব কমই দৃশ্যমান ও চলমান থাকে।
একটি ঘটনা ঘটার পর আমরা সজাগ হয় এবং আরেকটি ঘটনার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনি। কিন্তু কি কারণে ঐ ঘটনা ঘটেছে এবং কারা কারা ঐ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ও কি তাদের উদ্দেশ্য তা কিন্তু পর্দার অন্তরালেই থেকে যায়। জনতা এমনকি সরকার প্রধান পর্যন্ত পৌঁছানো থেকে বিরত রাখার যে কৌশল কাজ করছে তাও অজানাই থাকে। যার জন্য এই ধরনের সমস্যা দৃশ্যমান এবং আরো কঠিন বাস্তবতার জন্য প্রতিনিয়ত নিরবে নিভৃত্তে কাজ করে যাচ্ছে——-ই।
যখনই শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসে এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে তখন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে এবং এর পিছনে সেই অন্ধকারের কীটদের যোগ সাজস রয়েছে; পাশাপাশি দলীয় সুবিধা বঞ্চিতরাও মদদ যুগিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু এর সুরাহা বা সুসমাপ্তি না করে ধামাচাপা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। সেই ক্ষোভ যন্ত্রনা আবার ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করে নতুন কৌশলে সুসজ্জিত হয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের ঝাল বুনে বেড়াচ্ছে। তাই আমাদের সামনে অনেক সুযোগ ও সমিকরন এবং হিসেব নিকেশ থাকা সত্ত্বেও আমরা এর কুলকিনারা না করে ধামা-চাপায়-ই লিপ্ত থেকে যাচ্ছি।
বিরোধী শক্তি, দেশ বিরোধী চক্র, অপশক্তি এবং বিদেশী লোভাতুর শ্রেণীরা সকলে মিলেই সরকারের পতন বা সরকারের ক্ষমতায় ভারসাম্য আনয়ন বা ভাগ বসানোর সকল পায়তারায় বিফল হয়ে বসে থাকবে না এটাই সত্য। কিন্তু আমাদের সরকার এবং সরকারের বাহিনীগুলো মনে হয় আত্ম¡তুষ্টি ও সন্তুষ্টির রেষ নিয়ে এগুচ্ছে। কারণ এখন আর দৃশ্যমান কোন শক্তি, রাষ্ট্র এবং সরকার ও দেশ পরিচালনায় বাধার কারন হতে পারবে না। এই ভেবে নিজের সর্বনাশ ডাকা ছারা আর কোন অর্জন অর্জিত হবে বলে মনে হয় না। শত্রু যত ছোটই হোক না কেন তাকে ছোট ভাবা বোকামী। কালের পরিক্রমায় আজকে যে ছোট আগামীকাল সে বড় আর আজকে যে বড় আগামীকাল সে ছোট। সুতরাং সাবধান হউন এবং চোখ ও কান খোলা রাখুন আগামীর জন্য।
আগুনের যে দৃশ্যমান বাস্তবতা পরিলক্ষিত হচ্ছে তা কিন্তু কোন শুভ লক্ষণ নয় বরং অশুভ লক্ষণের একটি পূর্বলক্ষণ মাত্র। যে আগুনের ক্ষত শুকিয়ে নতুন ক্ষতে মলম লাগানো হচ্ছে তা কিন্তু জলন্ত শিখায় ধাও ধাও করে জ্বলছে এবং এর মাত্রার ক্রমবিকাশ ঘটছে। আমাদের মহানরা এবং সরকারের দায়িত্ব প্রাপ্তরা কিন্তু ঘটনাস্থলেই এর বিচার বা রায় ঘোষণা করেদেন। কিন্তু সেই রাই বাস্তবায়ন এবং এর পিছনের অন্তরালের কোন তাৎপর্য উদঘাটনের প্রচেষ্টায় লিপ্ত থাকেন না বা কাউকে রাখেনও না। তাই সবিনয়ে অনুরোধ করছি; নিজের মনগড়া বা আন্দাজ ও অনুমানি নির্ভর কথা না বলে বা ফয়সালা না করে এমনকি অহেতুক কাউকে দোষী না বানিয়ে প্রকৃত কারন উদঘাটন করে প্রকৃত দোষিকে দোষি সাব্যস্ত করে বিচারের আওতায় এনে বিচারের রায় বাস্তবায়ন করে জনতার দৃষ্টিসিমায় রাখুন। যাতে করে আগামী দিনে এইসকল কর্মকান্ডের হোতারা এমনকি ইন্দনদাতারা ও প্রত্যক্ষভাবে জড়িতরা কি কি দন্ড বা শাস্তিভোগে লিপ্ত তা জনতার দৃষ্টিসীমায় দৃশ্যমান থাকে। এই দৃশ্যমানতাই আগামী দিনে এইসকল বিপদ সংকুল সর্বনাশা প্রলংঙ্করী ছোবল বন্ধ হতে সহায়ক হবে।
এই আগুন নিয়ে যে খেলা চলছে তা কিন্তু ভাসমান বা নিছক দুর্ঘটনা নয় বরং এর একটি সুপরিকল্পিত নাশকতার যোগসূত্র বিদ্যমান রহিয়াছে। মানুষের জীবন নাশ, অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন, আতংক সৃষ্টি এবং একের পর এক আগুন লাগার মধ্যে যে অন্তনীহিত তাৎপর্য লুকানো তা দ্রুত বের করতে হবে। অনেকেই এর থেকে মুখোশধারী ফায়দা লুটতে মরিয়া। তাদেরকে খুঁজে বের করে ঘটনার সূত্রপাত ও যোগসূত্রতার সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রমান করতে হবে।
গত কয়েকদিন বিভিন্ন দুতাবাসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, বনানী, গুলশান, বারিধারা এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা চলছে এবং যে কোন সময় এর প্রকাশ ঘটবে। সেই সুত্রেই স্কুল ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং যান চলাচলে সতর্কতা পাশাপশি সরকারের নেয়া পদক্ষেপ দৃশ্যমান ছিল। সবকিছু মিলে অন্ধকারের শক্তিরা কিছু একটা করতে মরিয়া কিন্তু সরকার এবং জনগন এর যোগসূত্রের গাথুনীর বেড়াজাল ভেদ করে তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব তাই এখন এই গুপ্ত হত্যার দৃশ্যমান রূপকিনা তা ভেবে দেখতে হবে? ভাবার বিষয় যে, আমাদের এজেন্সিগুলির জানার আগে কিভাবে এ্যাম্বাসীগুলো জানে ঐ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পূর্বাভাস? আর সেই মোতাবেক তাদের দেশের নাগরিকদের মেসেজের মাধ্যমে সতর্কতা বার্তা পাঠায়। আমাদের এও খুজে বের করা জরুরী। কারণ ঐ নাশকতার সঙ্গে ঐ দুতাবাসগুলি জড়িত কিনা?
সরকারের এই মেয়াদের শুরুতে এসে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা দুরত্ব তৈরী হয়েছে এবং তৃণমূলের ঝিমিয়ে পড়াতে নতুন কোন বিপদাসন্ন কিনা তাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃণমূল এবং কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা রাখার জন্য পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সকল কিছুই যেন জনসম্পৃক্ততার সমন্বয়ে হয় সেইদিকে সজাগ দৃষ্টি দিয়ে এগুতে হবে। টেকসই রাজনীতি এবং উন্নয়নের পথে অন্তরায় অনেক যা বলে শেষ করা যাবে না। তাই এই উন্নয়ন এবং গতিশীলতা এবং সরকারের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে আগে ভাগে পদক্ষেপ নিয়ে এগুতে হবে।
এখন অন্ধকারের কীটদের ঘোমট বা মুখে কুলপ এটে বসে থাকার পিছনের রহস্য উন্মোচন করতে হবে। নতুবা আগামী দিনে আরো বড় কোন ষড়যন্ত্রের দৃশ্যমান বাস্তব পরিলক্ষিত হবে। ঐ কীটদের সব সময় ব্যস্ত রাখতে হবে এবং সংঘবন্ধ হতে দেয়া যাবে না বরং দৌঁড়ের উপর রেখে দেশ, জনগন এবং উন্নয়ন ও সরকার একযোগে এগিয়ে যেতে হবে। দলীয় কর্মী ও সমর্থক এখন যারা দল বা দলের উপকারভোগীদের দ্বারা আক্রান্ত তাদের মুক্ত করে দলের ঐক্য ও সমৃদ্ধী এবং সুদৃঢ় মজবুত গাথুনী দৃশ্যমান রাখতে হবে। তাহলে ঐ পরাজিত অপশক্তি কোন সুযোগ বা শক্তিই আমাদেরকে ধাবায়ে রাখতে পারবে না।
আমরা আর কোন মুত্যুর খবর শুনতে এবং দেখতে চাই না। আমরা চাই মানুষ নিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে সকল অধিকার ভোগ করে শান্তি ও স্থিতিশীল বাস্তবতার মধ্যে আগামীর সুনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে। আগামীর জঞ্জাল এখনই অপসারন করে চির নির্মল আনন্দালোকে পথ চলার ব্যবস্থা সড়গড়ম রাখতে হবে। আসুন সকলের সমন্বিত প্রয়াসে এগিয়ে চলি নির্ভেজাল স্থিতিশীল শান্তিময় অবারিত সম্ভাবনার গর্ন্তব্যের দিকে।