বিশেষ করে আমার বিপদের দিনে আমি আজ অভিভাবকশূন্য। এই অভিভাবকশুন্যতাই আমি উপলব্ধি করলাম আমার মরহুম অভিভাবকদ্বয় জনাব এডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সাহেবকে এবং আলহাজ্জ্ব এ বি সিদ্দিক সাহেবকে। এই দুজনই আমার খুবই প্রীয় এবং দুর্দীনের কান্ডারী ও বিপদের সারথী ছিলেন।
বলতে গেলে জনাব এবি সিদ্দিক আমার দাদা এবং এডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সাহেব নানার বাড়ির সম্পর্কে মামা। ওনারা আমার শৈশব জীবনের আদর্শ এবং পথদর্শক। তিনি আমাকে ভালবাসতেন এবং এই ভালবাসার প্রতিদানস্বরূপ আমার লিখা দুই লাইনের চিঠির প্রতিউত্তরে বগুড়ার এনামুলদের (৫জনকে) যাবজ্জ্বীবন সাজা প্রাপ্ত মাললা থেকে খালাস করে দেন। এই প্রাপ্তী আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভালাবাসার উপহার ও সম্মানের। সেই জন্যই প্রতি বছর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঐ এনামুলরা আমার বাসায় এসে মরহুম এডভোকেট সিরাজুল হক বাচ্চু মিয়া সাহেবের জন্য দোয়া মোনাজাত করেন এবং আমি এতে গর্ববোধ করি।
সেই ভালবাসার বন্ধন এখনো অটুট এবং আমি সেই বন্ধনের অবহেই বড় হচ্ছি। বড় দু:খের বিষয় হলো আজ আমার বিপদ। গুরুতর এক মামলায় জড়ানো আমার পরিবার। কিন্তু আমি এখন অভিভাবক শুন্য। কে নেবে আমার দায়িত্ব? যদি ঐশ্বরীক কোন শক্তি বা সুযোগ থাকতো তাহলে হয়ত প্রায়ত এডভোকেট সিরাজুল হক সাহেব জীবিত হয়ে এসে আমাকে বিপদ থেকে মুক্ত করে দিয়ে যেতেন। আল্লাহ তাকে বেহেস্তে সুখে ও শান্তিতে রাখুক এবং তাঁর অভিপ্রায়ে কেউ আমার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিক। আমি নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি যে, যদি আমার ঐ হারানো অভিভাবকগণ আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে আমাকে আর কোটে গুড়াগুড়ি করতে হতো না এবং মামলা নিয়ে জীবনবাজী রেখে উদাস্তু জীবন যাপন করতে হতো না। তারপরও বলব ওনার অবর্তমানে আমার উপলব্দিটুকু আমি লিখে এবং সৃষ্টিকর্তার দরবারে প্রকাশ করলাম।
দ্বিতীয় জন আমার দাদা আলহাজ্জ্ব এ বি সিদ্দিক সাহেব। আজ যদি তিনিও বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো আমাকে আর থানা হাজতে কষ্ট পেতে হতো না এমনকি ১মাস ১৫দিন অন্ধকার কক্ষে বন্দি জীবন কাটাতে হতো না। কিন্তু এই দুইজনই আমাকে উৎসাহ, অনুপ্রেরণ এমনকি সামনে এগিয়ে যাওয়ার দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আজ আমার জীবন এই অভিভাবক শুন্যতায় আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে যেন কেউ পিছন থেকে টেনে ধরেছে এবং আমার জীবন প্রদিপ নিভিয়ে দিচ্ছে। যাক দোয়া করি ওনাদের জন্য, আল্লাহ যেন ওনাদের জান্নাতের বাগানে রাখেন।