ঘুমন্ত বিবেক জাগ্রত হউক

Vector-Smart-Object-1-300x127[1]আর কতদিন এভাবে ঘুমিয়ে থাকা যায়! কিভাবে চক্ষু বন্ধ করে সহ্য করা হয়? বিভিন্নভাবে ঝড়ে যচ্ছে আমাদের সম্ভাবনাময় তরুন তরতাজা প্রাণগুলো। অবলিলায় ধ্বংস হচ্ছে আমাদের জাতিয় এবং ব্যক্তিগত সম্পদগুলো। নিশ্চুপ নির্বিকার চিত্তে চরম উদারতায় নিস্তব্দ হয়ে যাচ্ছে আমাদের বিবেকের বিকাশমান সৃষ্টিশীল ধারাবাহিকতাগুলো। নিশ্চুপতার আড়ালে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে অবশিষ্ট বিবেকের স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ লিখাগুলো। বিনা বাধায় বা প্রতিবাধে এখন ঘোমটবেধে অন্ত:জ্বালায় আক্রান্ত হয়ে বিদায়ের প্রতিক্ষায় আমাদের দিকনির্দেশনার কলমগুলো। বিভিন্ন চক্রান্ত এবং নিরব চোখরাঙ্গানীতে মলীন এখন আমাদের উদীয়মান নতুন আবিস্কারগুলো। কবে হবে নতুন সুর্যের উদয় এবং রাঙ্গিয়ে দেবে আমাদের প্রত্যেকের জীবনকে যাতে করে পুরোনো এবং অভিষপ্ত বিভিষিকাময় অবস্থা থেকে বের হয়ে উন্নয়ন এবং অগ্রগতির নতুন দিশা দিয়ে যুক্ত হবে মূলস্রুতে।
হয়তো আর বেশী দিন দুরে নয় বরং অতিসন্নিকটেই রয়েছে এর আলোকচ্ছটা। সকল সৃষ্টির সেরা এবং সকল শক্তির সেরা শক্তি, সকল বিচারের সেরা বিচারক এবং ন্যায় বিচারকের বিচার কার্য এখন আসন্ন। দেখার পালা কত নিখূতভাবে তিনি ঐ বিচার কার্য সম্পন্ন করেন এবং ভোক্তভোগীকে মুক্ত করেন তার প্রশংসা এবং আরাধনা করার জন্য। দুনিয়ার মানুষ যতই শক্তিশালী হউক না কেন; সৃষ্টিকর্তার কাছে এই শক্তি নিছকই বোকামী মাত্র। সৃষ্টিকর্তার ক্ষমায় এই পৃথিবী বর্তমানে অস্তিত্ব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের ক্ষমা বিরুপ মনোভাব নিয়ে রুদ্রমুত্তিতে ঝাপিয়ে পড়েছে আক্রমনাত্মক মনোভাব নিয়ে। যাই হউক সৃষ্টিকর্তা চায় আমরা যেন মানুষকে ক্ষমা করি এবং সৃষ্টিকর্তার ক্ষমা লাভ করি ও সেই ক্ষমার আলোকে নিজেদের জীবনকে সাজাই। তাই এই শেষ সময়ে এসে আমরা সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ফিরে যাওয়ার আশায় নিজেদেরকে কঠিন থেকে সহজ-সরল এমনকি ভালবাসায় পূর্ণতায় রূপদান করি। যাতে করে আমাদের ক্ষমায় মানুষ ফিরে পেতে পারে স্বস্তি এবং নতুন জীবন ও জীবনের স্বার্থকতা এমনকি সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য।
চারিদিকে যা ঘটছে তা দেখে কিন্তু মনে হয় পৃথিবী এখন কিয়ামতের অতি সন্নিকটে। আর এই কিয়ামতাসন্ন সময়েই ঘটছে অনেক দিক নির্দেশনার বাস্তবচিত্র। কারণ আল্লাহর কালামে পৃথিবীর শেষ সময়ের কথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করা আছে কিন্তু শুধু দিন ও তারিখটি নেই। তবে সময়ের বাস্তবতায় এটা অনুমান করা খুবই সহজ। তাই সবাই সজাগ থাকতে হবে ফিরে যাওয়ার আশায়। আর অহংকার ও গর্ব এবং ক্ষমতার মোহ থেকে বের হয়ে আসতে হবে আমাদের প্রত্যেককে। জাগতিক এবং মাংসিক লোভ পরিত্যাগ করতে হবে এখনই। কারণ এই পৃথিবীর সমস্ত কিছুই থেকে যাবে বা ধুলিসাৎ হয়ে যাবে; সঙ্গে কিছুই যাবে না বরং সঙ্গে যাবে শুধু আমাদের নেক ও বদ আমলগুলি। যার উপর দাড়িয়েই আমাদের শেষ দিবসের শান্তি এবং অশান্তির ফয়সালা হবে। তাই সময় এখন আমাদের আর আমরা এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি নিজেদের কল্যাণের তরে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় বাস্তবায়নে। অন্যকে ক্ষমা করি এবং সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করি। রাগ পুষে না রেখে ক্ষমা করে নিজেকে সুস্থ্য রাখি। নিরিহ ও নিরপরাধ মানুষকে অন্যের অন্যায়ের সাজাভোগ থেকে রক্ষা করি এবং ন্যায় ও নীতির আলোকে সামগ্রীক জীবন পরিচালিত করি।
চলমান বাস্তবতায় ঘটে যাচ্ছে একের পর এক মৃত্যু যা মানুষকে দোষারূপ করে যাচ্ছে বিভিন্নভাবে এবং ঐ দোষারূপের অনেক রকম ফের ও ভেদ রহিয়াছে। এইতো পুরিয়ে মারা হচ্ছে এক প্রতিবাদকারী মাদ্রাসা ছাত্রীকে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হচ্ছে এক মাদরাসা ছাত্রকে। গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে জীবন দিতে হয়েছে অনেককে। আগুণে পুরে জীবন দিতে হয়েছে নিরিহ মানুষগুলোকে। আমরা শুধু দেখি এবং প্রতিবাদস্বরূপ বিভিন্ন কথা বলি অথবা প্রয়োজনাতিরিক্ত বক্তব্য দিয়ে মানুষের কান ভারি করি। সবই এখন এক নিত্যদিনের ফ্যাসানিক কালচারে পরিণত হয়েছে। তবে কি এই কালচারের অবসান ঘটবে না? আর যদি ঘটে তবে তা কখন এবং কিভাবে? আমাদের ঘুমন্ত বিবেক কি জাগ্রত হবে না? আর যদি হয়ই তাহলে কখন এবং কিভাবে? আমাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে বিভিন্ন মৃত্যু নিয়ে মিছিলের, মানব বন্ধনের, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ঝলকানির এবং মিডিয়া (প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক) উভয়ের রূপসজ্জায়। টেলিভিশনের রমরমা ব্যাবসায়ীক প্রচারণায়; কিন্তু বাস্তবে কি এর কোন সুনিদ্দিষ্ট সুরাহা হয়েছে? না হয়নাই বরং নির্যাতিতা এবং নিপিড়িত মানুষের আর্তনাদ বরং রেড়েই চলেছে। শোকাতুর মানুষগুলি শোকে বিহবল হয়ে এখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত আবার কেউ কেউ ইতিমধ্যেই জীবনের ইতি টেনেছেন। তাই সময় যতই গড়াচ্ছে এই যাত্রার যাত্রী সংখ্যা বেড়েই চলেছে এমনকি সৃষ্টিকর্তার কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছে বৈকি। যেন সৃষ্টিকর্তা নিজে সকল কিছুর ফয়সলা করবেন। আর এই সময়ই কিন্তু আসন্ন।
সৃষ্টিকর্তা যাদের হাতে এই দায়িত্ব দিয়েছেন তারাতো হিমসীম হাচ্ছে ঐ সকল নেতিবাচকতার বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে। কিভাবে এর কুলকিনারা করবে সেদিকে দৃষ্টিদেয়া এখন জরুরী কিন্তু এই জরুরী অবস্থায় আমাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগানোটা হয়ে পড়েছে দুঢ়হ। সকল ধর্মের মূল বানীগুলো ধর্মাবলম্বীরা অনুসরণ করবে এটাই স্বাভাবিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত রেখে কাজ সমাপ্ত করবে এটাও নিয়মিত জরুরী। শরীয়ত পালনে দৃঢ়তা এবং রাষ্ট্রীয় আইন-কানুনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে প্রত্যেকের জীবনে বাস্তবায়ন বা প্রয়োগ করা এখন জরুরী। এই প্রয়োগের প্রায়োগিক চেস্টাটুকু অব্যাহত রাখাই সরকার এবং জনগণের মুল দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। যারা এর বাইরে রয়েছে তাদেরকে এর মধ্যে নিয়ে আসাই আমাদের সকলের দায়িত্ব। অন্যায়কারীকে শুধু শাস্তি দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না বরং এর পাশাপাশি সংশোধন হওয়ার সুযোগ এবং খোদায়ী মূল্যবোধ ও দেশীয় আইন কানুনের ব্যবহার প্রাত্যহীক জীবনে চর্চা করার সুযোগে আবদ্ধ করে সকলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। নতুবা এই সমস্যার বেড়াজাল থেকে বের হওয়া দূরুহ হয়েই থাকবে। পৃথিবীর শেষ সময়ে এসে আমরা যত দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছি ততই আমাদের সামনে নেতিবাচক দিকগুলি প্রকাশিত হচ্ছে এবং পৃথিবীর নিয়ম ও শৃঙ্খলা বিঘœীত হয়ে নতুন বলয়ে আবর্তিত হচ্ছে এবং দ্রুতলয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ধ্বংসের কাছাকাছি পৌঁছার নিমিত্তে। সৃষ্টিকর্তার শেষ কাজটুকু সম্পন্ন করে মানুষকে তাঁর কাছে নিয়ে যেতে পারে এবং শেষ বিচারের মুখোমুখি করে সমস্ত কিছুর ইতি টানতে পারে।
আসুন আমরা সেই ইতি টানার আগেই নিজেরা সংশোধিত হই এবং অন্যদেরকে সংশোধিত হতে সহযোগীতা করি। অন্যের অন্যায় ক্ষমা করে নিজেদেরকে মানবতার কল্যাণে বিলিয়ে দিয়ে পৃথিবীকে বেহেস্তের বাগানে পরিণত করার কাজে ঝাপিয়ে পড়ি। ভুল মানুষই করবে এবং এই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষার মাত্রা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয় বরং একটি সহনীয় পর্যায়ে পরিবর্তনের সুযোগ দিয়ে সামনের দিকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারে সেইদিকে মনযোগ দিতে হবে। বিবেক জাগ্রত রাখার কৌশল আবিস্কার করতে হবে এবং বিবেকের তাড়নায় কাজ করতে হবে এবং আগামির পথ চলতে হবে। ন¤্রতা এবং সেবার মনোভাব জাগ্রত রাখতে হবে। মানবতার কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখার তরে কল্যাণের নিতীতে জীবন যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। ক্ষমতা দেখানোর নিমিত্তে যেন ক্ষমতার মসনদে আসীন না হই এবং ক্ষমতায় থাকার নিমিত্তে যেন নেতিবাচক এমনকি ক্ষতিকর কোন পদক্ষেপ বা পরিকল্পনা অথবা আইন প্রণয়ন এমনকি এর প্রয়োগ না করি। কারণ এই ক্ষমতার উদ্ধেও একজন ক্ষমতাধর রয়েছেন যিনি সমস্ত পৃথিবীর একমাত্র মালিক। আর এই মালিকই পৃথিবীর ক্ষমতাধর ব্যক্তির ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন করেন এবং কখনো কখনো ক্ষমতার পালাবদলে রূপদান করেন। তাই সময় থাকতেই আমরা সংশোধন হই এবং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ক্ষমতা সেবার মনোভাব নিয়ে ব্যবহার করি। নিজেকে সেবকের ভূমিকায় অবত্তির্ণ করি।
বিবেকের তাড়নায় ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করতে সামগ্রীক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি। কাউকে দোষারোপ বা ঘৃনা করে নয় বরং ক্ষমা এবং ভালবাসায় সামগ্রীক কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখি। সরকার এবং রাষ্ট্রের দায়িত্বরতদের তরে নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখে সেবার মানোন্নয়ে কাজ করি। নেতিবাচক সকল প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত করতে একযোগে কাজ করি। হুজুগে নিজেদেরকে না জড়ায়ে বরং বাস্তবতার নিরীখে উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চালমান বাস্তবতাকে বিশ্লেষন করে মানবতার তরে কল্যাণের নিমিত্তে এগিয়ে যায়। যারা এই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ও পরিকল্পক এবং বাস্তবায়নকারী তাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করি এবং সকল অপশক্তি ও অপকৌশলকে প্রতিহত করে খোদায় দেয়া শান্তি, আনন্দ ও নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা নির্বিঘেœ উপভোগ করি। জয় হওক আমাদের আগামীর ইতিবাচক পথচলার। জাগ্রত বিবেকে এগিয়ে যাই আগামীর সকল উন্নয়ন যাত্রায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.