স্পোর্টস ডেক্স॥ ১৯৫০ সালের মারাকানা ট্র্যাজেডির কথা নিশ্চয় মনে আছে ফুটবলপ্রেমীদের! সেই ট্র্যাজেডির সময় পর্যন্ত ব্রাজিল ফুটবল দল ব্যবহার করতো সাদা রংয়ের জার্সি। কিন্তু নিজেদের দেশে বিশ্বকাপ জয়ের সর্বোচ্চ আয়োজন করেও শেষ মুহূর্তে এসে তরি ডুবে গিয়েছিল ব্রাজিলের। একেবারে শেষ মুহূর্তের গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। শোকে-ক্ষোভে, দুঃখে অনেক ব্রাজিলিয়ান সমর্থক সেদিন আত্মাহুতি দিয়েছিল।
সাদা জার্সি পরে বিশ্বকাপ তো জয় হলোই না, উল্টো বিশাল ট্র্যাজেডির জন্ম হয়েছিল মারাকানায়। যে কারণে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপের পর সাদা জার্সিকে পুরোপুরি বিদায়ই বলে দিয়েছিল সাম্বার দেশ ব্রাজিল। সাদা জার্সির পরিবর্তে প্রবর্তণ করা হয়েছিল ঐতিহাসিক হলুদ-নীল জার্সি।
পেলে-গ্যারিঞ্চা, জিকো-সক্রেটিস, বেবেতো-দুঙ্গা, রোনালদো-রিভালদো-রোনালদিনহো, কাকা-রবিনহো, নেইমার কিংবা কৌতিনহোরা সব সময়ই পরে এসেছে হলুদ জার্সি। যে জার্সির কলার কিংবা হাতার সঙ্গে হালকা নিলের সমন্বয় তৈরি করা হতো। আর অ্যাওয়ে জার্সি হিসেবে ব্যবহার করা হতো নিল জার্সি।
অর্থ্যাৎ, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলে সাদা জার্সিকে পুরোপুরি পরিত্যাগ করা হয়েছিল দুর্ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে। কিন্তু মারাকানা ট্র্যাজেডির ৬৯ বছর পর আবারও ফিরিয়ে আনা হচ্ছে সেই অভিশপ্ত জার্সিকে। আগামী কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের দ্বিতীয় জার্সি হিসেবে ব্যবহার করা হবে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত ব্যবহার করা সেই সাদা জার্সিটিকে।
গত মঙ্গলবার রিও ডি জেনিরোয় কোপ আমেরিকার জন্য সাদা এই জার্সি উন্মোচন করেছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন। ৬৯ বছর আগের সেই জার্সির মডেল হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ১৮ বছর বয়সী তারকা ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ব্রাজিল দলের হয়ে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা এই ফুটবলারকে দেশটির ভবিষ্যত তারকা বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষ একটা কারণেই সাদা জার্সিকে ফিরিয়ে এনেছে ব্রাজিল। সেটা হচ্ছে, ১৯১৯ সালে কোপা আমেরিকার মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিল। সেবার টুর্নামেন্টের ফাইনালে তারা হারিয়েছিল উরুগুয়েকেই। ১৯৫০ সাল পর্যন্ত সাদা’ই ছিল তাদের জার্সির মূল কালার।
১৯১৯ সালের পর ২০১৯, অর্থ্যাৎ প্রথম শিরোপা জয়ের শতবর্ষপূর্তি। এ কারণে সাদা জার্সি পরিত্যাগের ৬৯ বছর পর আবারও সেই ‘অভিশপ্ত’ জার্সিকে ফিরিয়ে এনেছে ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন। এমনকি আগামী কোপায় এই সাদা জার্সি পরেও খেলতে নামতে দেখা যাবে নেইমার-ভিনিসিয়াসদের।