আনোয়ার হোসেন॥ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সাতটি নতুন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর একটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর’। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
প্রকল্পের আওতায় আখাউড়া-সিলেট সেকশনের ২২৫ কিলোমিটার বিদ্যমান মিটারগেজ লাইনকে প্রায় ২৩৯ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ লাইনে রূপান্তর করা হবে। এই হিসাবে প্রতি কিলোমিটারে খরচ পড়বে প্রায় ৬৭ কোটি ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ২৫৯ টাকা।
একনেক সভা শেষে দুপুরে সংক্ষেপে প্রকল্পটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় এক সাংবাদিক পরিকল্পনামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, এই প্রকল্পের ব্যয় বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে কিনা?
জবাবে মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমি আপনাকে একটা কথা বলি, ব্যয় নির্ধারণ (প্রকল্পের) করার জ্ঞান আমার নেই। আমি কোনো প্রকৌশলী নই, অর্থনীতিবিদ নই, হিসাব বিজ্ঞানী নই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দায়িত্ব একজন পলিটিক্যাল মাস্টার হিসেবে গিভ অ্যান অর্ডার (নির্দেশ দেয়া) যে, আমি এখানে এটা চাই। আমার জনগণের মঙ্গল হবে, যদি এই সেতুটা বানান। আপনি ইঞ্জিনিয়ার, আপনি প্ল্যানার, আপনি ঠিক করবেন কত টাকা ব্যয় হবে। যদি বলেন, ১০০ টাকা ব্যয় হবে, তাহলে আমি কীভাবে বলবো ৬০ টাকা দিয়ে করে দেন? আমি আবার বলছি, প্রকল্পের অর্থনৈতিক দিকগুলো বিবেচনা করার জন্য আমাদের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ আছে, অর্থনীতিবিদরা আছেন, প্রকৌশলীরা আছেন, ঠিকাদাররা আছেন।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা বা আমাদের মতো লোক তো মাপ-ঝোক করার জন্য নই। উই জাস্ট গিভ অর্ডার (আমরা শুধু আদেশ করবো)। ডু দিস, ডোন্ট ডু দিস (এটা করবেন, এটা করবেন না)।’
প্রকল্পটির ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৫ হাজার ৪৫০ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং বাকি ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চীন সরকার ঋণ দেবে। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, আপনি (প্রশ্নকর্তার উদ্দেশে) যেমন বললেন যে, এই প্রকল্পে বেশি ব্যয় হচ্ছে। আবার ওই তথ্যও আমাদের কাছে এসেছে, অন্যান্য জায়গায় এর চেয়ে বেশি ব্যয়ও করা হয়। এ জন্য বিতর্কে যাওয়া আমাদের জন্য মানান সই নয়। আপনারা মিডিয়ার মানুষ, খোঁজ-খবর নেন। যদি অসঙ্গতি পান, বলবেন। এটা আপনার অধিকার।’