প্রশান্তি ডেক্স॥ মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যাকান্ডের সময় ওই মাদরাসার সিঁড়ি পাহারায় ছিল তার সহপাঠী মহিউদ্দিন শাকিল। গত মঙ্গলবার রাতে সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে সে। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ১২ জন নুসরাত হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছে।
গত মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, গত ৬ এপ্রিল মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়ার সময় মহিউদ্দিন শাকিল সাইক্লোন শেল্টারের গেটে পাহারায় ছিলেন। এ সময় সেখানে অপর আলিম পরীক্ষার্থী মো. শামীমও তার সঙ্গে ছিলেন।
স্বীকারোক্তিতে মহিউদ্দিন শাকিল বলেছেন, ওই দিন আলিম পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শাকিল ও মো. শামীম সাইক্লোন শেল্টারের নিচে ছিলেন। এ সময় নুসরাতকে অপর এক ছাত্রী ডেকে সাইক্লোন শেল্টারের ওপরে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর বোরকা পরা তিনজন দ্রুত নিচে নেমে গেলে শাকিল ও শামীম পরীক্ষার হলে চলে যান।
এছাড়াও ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার মুক্তির দাবিতে গত ২৮ মার্চ মানববন্ধনে ও ৩০ মার্চ মিছিলে অংশ নেন মহিউদ্দিন শাকিল।
গত ২৫ এপ্রিল ফেনী শহরের উকিলপাড়া এলাকা থেকে মহিউদ্দিন শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়। সে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া গ্রামের রহুল আমীনের ছেলে। গত ২ মে শাকিলকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১২ জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়ের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।
এ ঘটনা তার বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত ৮ আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।