ভজন শংকর আচার্য্য,কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ধজনগর সীমান্তের ২০৩২ (১এস) পিলারের কাছ দিয়ে প্রবেশকালে বিজিবি’র বাধার মুখে ভারতীয় সীমানায় শুন্য রেখায় অবস্থান করছে ১০ রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে ২জন পুরুষ, ২জন মহিলা ও ৬ শিশু রয়েছে। এ বিষয়ে দু দেশের বিজিবি ও বিএসএফ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।
স্থানীয় বিজিবি সুত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ভোর রাতে ভারতের সীমান্ত রক্ষী (বিএসএফ) তার কাটার ফটক খোলে দিয়ে ওই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বিজিবি ঘটনাস্থল গিয়ে তাদের প্রবেশে বাধা দিলে ভারতীয় সীমান্তের শুন্য রেখায় অবস্থান নেয় রোহিঙ্গারা। এ খবর জানাজানি হলে রোহিঙ্গাদের সাহায্যকারী জামাল মিয়া ও তার স্ত্রীকে বিজিবি উত্তম-মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। গ্রামের অধিবাসীরা জানায়, জামালের গ্রামের বাড়ি ত্রিপুরার অভ্যন্তরে খামার বাড়ি গ্রামে। রোহিঙ্গারা বিএসএফ ও বিজিবি’র নজরদারীতে রয়েছে।
খবর পেয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরবর্তী ধজনগর সীমান্ত পিলার নং ২০৩২-১এস এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এসকল রোহিঙ্গাদের টিলার গায়ে ঘাঁসের উপর শুয়ে ও বসে এক অনিশ্চতায় সময় পার করছে। পাশেই বিজিবি ও বিএসএফ কোম্পানী কমান্ডারা কথা বলছে। তারা দুই দফা কথা বলেও কোনো সুরাহা করতে পারেনি। সাংবাদিক নাম শুনেই বিএসএফ ক্ষেপে গিয়ে বলেন, যেহেতু শুন্য রেখায় ভারতের নিয়ন্ত্রণে এরা রয়েছে সুতরাং কোনো প্রকার ছবি তোলা যাবে না।
রোহিঙ্গা দু’টো পরিবারের কর্তা আবদুল গফুর ও সমির জালাল জানান, ২০১২ সালে এরা মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতের জম্মু কাশ্মিরে অবস্থান নেয়। পুনরায় সেখান থেকে বিতারিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য ত্রিপুরায় আসেন। ওইখানে তাদের রেশনকার্ড ছিল। এ প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে বলেন;অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পেতেই এরা বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য দালাল ধরে ত্রিপুরায় আসেন। দু’টো পরিবারের মহিলারা জানায় বিএসএফ রাতে তাদের সকল কগজপত্র রেখে গেইট খোলে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ও বিএসএফ সীমান্তে খোলা আকাশের নীচে আটকে দেয়। পরিবারের সদস্যরা অনাহারে অর্ধাহারে আছে বলে তারা জানায়।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, এই এলাকাটি রোহিঙ্গা পাড়াপাড়ের জন্য দীর্ঘদিন যাবত রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইতোপূর্বে আরো দু’বার বড় বড় দু’টো রোহিঙ্গা দলকে পুনরায় পুশব্যাক করেছে বাংলাদেশ। একই কথা বলেছেন ৬০ বিজিবির অধিনায়ক ইকবাল হোসেন।তিনি এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানান এই সীমান্ত এলাকায় হয়তো একটি চক্রের সহায়তায় রোহিঙ্গা পারাপার হচ্ছে। এরা কসবা রেলওয়ে স্টেশনে এসে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাড়ি জমায়। তিনি জানান যেহেতু এরা ভারতীয় অংশে অবস্থান করছে তাদেরকে অবশ্যাই ভারতেই ফিরে যেতে হবে। এ বিষয়ে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।