প্রধানমন্ত্রী বলেন পুলিশকে যেন জনতা ভয় না পায়

প্রশান্তি ডেক্স॥ গত সোমবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করে এ কথা বলেন সরকার প্রধান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাহিনীটির প্রশংসা করে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান জনগণের সঙ্গে পুলিশের এমন সম্পর্ক থাকবে যেন সেখানে কোনো ধরনের ভয়-ভীতি কাজ না করে। পুলিশকে জনবান্ধব হতে হবে জানিয়ে তিনি জনগণের সব সমস্যা মানবিক দৃষ্টিতে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।police ka jeno jonta
জনবল ও সুযোগ সুবিধা বুদ্ধির ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেমন পুলিশ দেখতে চান, সেটিও জানান। বলেন, ‘জনগণের সমস্যাকে দেখতে হবে একান্ত আন্তরিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে।’
‘জনগণের মনে পুলিশ সম্পর্কে যেন অমূলক ভীতি না থাকে সেজন্য জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। পুলিশকে আমরা সব সময় আইনের রক্ষকের ভূমিকায় জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে দেখতে চাই। এজন্য পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।’
‘পুলিশের প্রত্যেক সদস্যের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালনের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করে জনবান্ধব পুলিশে পরিণত হবে- এটাই আমার প্রত্যাশা।’
নৈতিক স্খলন যে কোন বাহিনীর মনোবল দুর্বল করে দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের পয়সায় আমাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়। আমরা সকলেই জনগণের সেবক। সেই জনগণ যেন কোনভাবেই নিগৃহীত না হয়, সেদিকে সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আপনাদের সকল সফলতার জন্য আপনারা পুরস্কৃত হবেন, পাশাপাশি জবাবদিহিতাও যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে সরকার ব্যয় নয়, বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ পুলিশে আজ দৃশ্যমান পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পুলিশের সার্বিক উন্নয়নের ধারা বর্তমান মেয়াদেও আমরা পূর্ণমাত্রায় অব্যাহত রাখব।’
এই অনুষ্ঠানে ৩৪৯ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক-পিপিএম এবং বাংলাদেশ পুলিশ পদক-বিপিএম পদক পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ পদক কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি ভবিষ্যতে আপনাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে উদ্দীপনা ও প্রেরণা যোগাবে বলে আমি মনে করি।’
পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম পুলিশের সক্ষমতাকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘সকল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। ক্যাডার কর্মকর্তাসহ সকল নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যকে বুনিয়াদী এবং মৌলিক প্রশিক্ষণ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।
আধুনিক যুগে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য বেড়ে যাওয়ার দিকটি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেবল সনাতন অপরাধ চুরি-ডাকাতি, হত্যা-রাহাজানি বন্ধ নয়; পুলিশের কাজের ক্ষেত্র আজ বিস্তুত হচ্ছে সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, মাদক পাচার, পণ্য চোরাচালান ও নারী-শিশু পাচার প্রতিরোধে, এমনকি জলজ ও বনজ সম্পদ এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও। এই সব বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পুলিশকে জনগণের কাছাকাছি যেতে হবে নিজ উদ্যোগে এবং কর্মদক্ষতায় ’

Leave a Reply

Your email address will not be published.