প্রশান্তি ডেক্স॥ সোমবার (৬ মে) মাহমুদুল হাসান নোমান এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যোগ দিলে তাকে ব্যাংকটির সোনাগাজীর ডাকবাংলো শাখায় পদায়ন করা হয়।
ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট (ক্যাশ) অফিসার পদে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। চাকরিতে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মাহমুদুল হাসান নোমান। একই সঙ্গে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরীর প্রতিও
চাকরিতে যোগ দিয়ে মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরীর প্রতিও। তারা আমার বোন নুসরাতের ওপর ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনায় আমাদের পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আমার বোনের হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন কোনো অপরাধীকেই ছাড়া হবে না। আমরা উনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আজ শুধু আমার পরিবার নয়, বাংলাদেশের সকলেই নুসরাত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।’
এর আগে, ১৫ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় নুসরাতের পরিবার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নুসরাতের বাবা এ কে এম মুসা, মা শিরিনা আক্তার, নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান। প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের দুষ্কৃতকারীদের কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না বলে জানান। তিনি নুসরাতের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সান্তনা ও সমবেদনা জানিয়ে নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের হাতে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী নুসরাতের ছোট ভাই রায়হানের পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রাখার কথাও বলেন।
এ সময় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। তিনি নুসরাতের ছোট ভাই রায়হানের স্বাচ্ছন্দ্যে পড়াশোনা ও ভবিষ্যতে চাকরিরও নিশ্চয়তা দেন।
উল্লেখ্য, নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। এর মধ্যে গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা সহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারভুক্ত আট আসামি সহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নুসরাতের চিকিৎসা চলে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় নুসরাত মৃত্যুবরণ করেন।