নুসরাত হত্যা: ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ

প্রশান্তি ডেক্স॥ ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে করা চার্জশিট আমলে নিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। গ্রেপ্তার হলেও মামলার চার্জশিটে নাম না থাকায় খালাস দেওয়া হয়েছে পাঁচজনকে। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করা হয়েছে।16 jon ashme
গত সোমবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ চার্জশিট গ্রহণ আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
খালাস পাওয়া পাঁচজন হলেন- নুসরাতের সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শাহিদুল ইসলাম।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নুসরাত হত্যার ঘটনায় আটক ২১ আসামিকে আদালতে নেওয়া হয়। পরে ১৬ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া চার্জশিট আমলে নেন আদালত।
নুসরাত হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, প্রভাষক আবসার উদ্দিন, মো. শামিম, ইফতেখার উদ্দিন, নূর উদ্দিন জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। এরপর থেকে মামলা তুলে নিতে নুসরাতের পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন নুসরাত। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৬ এপ্রিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মারা যায় নুসরাত। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
পরে এ ঘটনায় নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বাদী হয়ে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
গত ২৮ মে ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬ জনকে আসামি করে ৮০৮ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেন পিবিআই কর্মকর্তারা। সেদিন অভিযোগপত্রসহ মামলার কাগজপত্র বিচারক ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ৩০ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে আসামিদের হাজির করা হলেও বিচারক সেদিন অভিযোগপত্র গ্রহণের ওপর শুনানি না করে ১০ জুন শুনানির তারিখ ধার্য করেন।
মামলার অন্যতম আসামি মাদ্রাসর অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুর কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.