প্রশান্তি ডেক্স॥ চাইলেই করা যায়, সেটাই প্রমাণ করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তার দৃঢ়চেতা নির্দেশে স্বররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ৩ দিনের সময় সীমা বেঁধে দেয় নুসরাত হত্যা মামলার ব্যাতিক্রমধর্মী আসামি, ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারের। অবশেষে ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেপ্তার হলেন।
স্বররাষ্ট্র মন্ত্রী মহোদয়কে সেদিন যখন বলতে শুনলাম যে, ওসি মোয়াজ্জেম আত্মগোপনে, তাই গ্রেপ্তার সম্ভব হচ্ছে না। ভেবেছিলাম গতানুগতিক ধারায় এটাও মনে হয় ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেলো। তাই একধরনের আস্থাহীনতায় ভুগছিলাম। ভেবেছিলাম একটা মেয়ে যে ভাবে জীবনদিলো সেই মামলার আসামিও পার পেয়ে যাবে, কারণ দেশটা সব সম্ভবের বাংলাদেশ বলে!
কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে অন্য ধাঁচে গড়া, সেটা আবার প্রমানিত হলো। সার্বক্ষণিকভাবে মনিটারিং এ থাকা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড় দেননি। পুলিশ প্রশাসনের হয়তো কারো দয়ার হাত ছিলো ওসি মোয়াজ্জেমের মাথার উপরে, তাই তিনি অন্তত এই কয়েকদিন পেরেছেন নিজেকে লুকিয়ে রাখতে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনমনীয় মনোভাবে তাকে ইঁদুরের গর্ত থেকে বের হতেই হলো।
পুলিশ যা জানে সাধারণ জনগণ সেটা জানে না। আমাদের দেশের পুলিশ প্রশাসন যে কোন উন্নত দেশের পুলিশ প্রশাসন হতে কম পরিপক্ক নয়, তারা অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন। কিন্তু বিষয়টা হলো ঐ সকল দেশের পুলিশ দেশ ও জনগনের স্বার্থের বিরুদ্ধে কখনও যান না। কিন্তু আমাদের দেশের পুলিশ প্রশাসনের একটা বিরাট অংশের মনভাব হলো ‘আগে নিজের স্বার্থ তারপর বাকি সব’। আর তাই ওসি মোয়াজ্জেম যদি সাধারণ বিচারের আওতায় থাকে বা রাখা হয় তাহলে ‘যে লাউ সেই কদু হবে’ এতে সন্দেহ নেই। মুরগি চোরের যদি রিম্যান্ড কার্যকর হয় তাহলে ওসি মোয়াজ্জেম কেন নয়? যতদিন খুশি ততোদিনের রিম্যান্ড ওসি মোয়াজ্জেমের পাওনা। অন্যথায় তিনি মুখ খুলবেন না এটা বিশ্বাস করাই যায়।
ওসি মোয়াজ্জেম যদি নিজের কাছে সৎ হতেন তাহলে তিনি আত্মগোপন না করে নিজেই আত্মসমর্পণ করতেন এবং নিজের কর্মকান্ড তুলে ধরতেন। তার আত্মগোপনে চলে যাওয়ার মানেই হচ্ছে তিনি অত্যান্ত অন্ততঃ এই ঘটনায় দায়ী, যুক্তিতে অন্ততঃ তাই বলে। এবং এটাই তার প্রথম নয়, অতীতেও তার রেকর্ড খুব ভালো কিছু না, তাও অনুমান করা যায়। আর তাই রিম্যান্ড অপরিহার্য, এর বিকল্প নেই বলেই মনে করি। দেশে ধর্ষনের মহামারী ঠেকাতে এমন কয়েকশত ওসি মোয়াজ্জেমের যদি জেল হয়ে যায় কিছুই যায় আসেনা তাতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্যালুট, তিনি তার অবস্থানে ঠাই দাঁড়িয়ে আছেন, সমস্যা একটাই তার সহযোগীগণ গুতা না খাওয়া পর্যন্ত সঠিক কাজটা বা শুরু করেন না বা করেন না। আমাদের রাষ্ট্র সমাজের প্রতিটি খাত-উপখাতে যদি শেখ হাসিনা একজন করে সহযোগী পেতেন তাহলে হয়তো বাংলাদেশের চেহারা আরো অনেক আগেই পালটে যেত প্রশ্নাতীত ভালর দিকে। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলার মায়েরা বাবারা, ভাইয়েরা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ ধর্ষক বা ধর্ষকের সহযোগীদের আইনের আওয়তায় আনার জন্য। এবার বাংলার মানুষ দেখতে চান কোন উকিল ধরকের সহযোগী!